Advertisement
০৪ জুলাই ২০২৪
Illegal Hawkers

হকারের ছাউনিতে মুখ ঢেকেছে স্থায়ী দোকান

আসানসোল বাজারে ফুটপাত দখল করে স্থায়ী-অস্থায়ী ছাউনি টাঙিয়ে ব্যবসা বহু বছরের। পথচারীদের অভিযোগ, তাতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়।

দখল ফুটপাত। আসানসোলে।

দখল ফুটপাত। আসানসোলে। ছবি: পাপন চৌধুরী।

সুশান্ত বণিক, নীলোৎপল রায়চৌধুরী
আসানসোল, রানিগঞ্জ শেষ আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৪ ০৯:৪৮
Share: Save:

নির্দেশ দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশের পরে রাজ্যের একাধিক পুরসভা এলাকায় দখল উচ্ছেদ অভিযান হয়েছে। তা দেখে আসানসোল শিল্পাঞ্চলের নাগরিকেরাও প্রশ্ন তুলেছেন, আসানসোল, রানিগঞ্জ বা জামুড়িয়ার জনবহুল বাজার এলাকার ফুটপাত থেকে দখল কবে তোলা হবে। শহরের মেয়র বিধান উপাধ্যায়ের দাবি, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের আগেই আসানসোলে সরকারি জমি থেকে দখল তোলা হয়েছে। বাজারের ফুটপাতও দখলমুক্ত করার নির্দিষ্ট পরিকল্পনা রয়েছে। তবে সে পরিকল্পনা কতটা কার্যকর হবে, সংশয়ে নাগরিকদের অনেকে থেকে বিরোধী দলগুলিও।

আসানসোল বাজারে ফুটপাত দখল করে স্থায়ী-অস্থায়ী ছাউনি টাঙিয়ে ব্যবসা বহু বছরের। পথচারীদের অভিযোগ, তাতে চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয়। বহু বার উচ্ছেদ অভিযানের তোড়জোড় হয়েছে। কিন্তু বিক্ষোভ-আন্দোলনের মুখে ফের হাত গুটিয়ে নিয়েছেন প্রশাসনের কর্তারা। পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে এক সময়ে হকারদের তুলে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু নজরদারির অভাবে ফের বাজারের ফুটপাত দখল হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। ফল ভুগছেন শহরবাসী থেকে বাজারের বৈধ দোকানপাটের মালিকেরা। নাম প্রকাশ না করার শর্তে আসানসোল বাজারের পুরনো একটি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার বলেন, ‘‘ফুটপাত দখল করে পলিথিন, ত্রিপল, বাঁশের মাচার ছাউনি টাঙিয়ে এমন ভাবে আড়াল করে দেওয়া হয়েছে যে আমাদের দোকানগুলি নজরেই পড়ে না। ক্রেতারা ঠিক ভাবে যাওয়া-আসা করতে পারেন না। ব্যবসা মার খাচ্ছে।’’ সম্প্রতি বাজার এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, বহু হকার টিনের স্থায়ী ছাউনি তুলে ব্যবসা করছেন।

প্রায় ২০ বছর আগে রানিগঞ্জে নেতাজি সুভাষ বসু রাস্তাকে ৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের সঙ্গে যুক্ত করা হয়। তার ফলে শহরের ভিতর দিয়ে দূরপাল্লার যান চলাচল অনেক বেড়েছে। নেতাজি সুভাষ বসু রাস্তার সঙ্গে ১৪টি সংযোগকারী রাস্তা রয়েছে। শহরবাসীর অভিযোগ, প্রতিটি রাস্তার ফুটপাত হকারদের দখলে। রাজবাড়ি মাঠের দু’দিকে ফুটপাতে চলছে আনাজ-মাছ-মাংস বিক্রি থেকে ও খাবারের দোকান। সেই দোকান মালিকদের একাংশ দাবি করেন, এর জন্য ভাড়া দিতে হয় লাগোয়া একটি ক্লাবের কয়েক জন সদস্যকে। আবার, রানিগঞ্জ বাজারের সংযোগকারী রাস্তা সিআর রোড, মহাত্মা গান্ধী রোড, বিসি রোড, তিলক রোডেও রাস্তা জুড়ে ব্যবসা চলছে। সেখানে স্থায়ী দোকানদারদের একাংশ দোকানের সামনে রাস্তার অংশ হকারদের ভাড়া দিয়েছেন বলে অভিযোগ। পঞ্জাবি মোড়, শিশুবাগান মোড়, তারবাংলা মোড়, স্কুলপাড়া মোড়, পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকাতেও রয়েছে দখলের সমস্যা। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সিহারশোল গ্রামে ঢোকার মুখে, ডক্টরস কলোনি, শিশুবাগান মোড়, জগন্নাথ সেতুর উপরে প্রতিদিন অস্থায়ী বাজার বসে। তাতে নাকাল হন পথচারীরা।

প্রাচীন জামুড়িয়া বাজারে যাতায়াতের দু’টি রাস্তাতেই একই রকম অস্থায়ী দোকানের রমরমা। অন্ডালের উখড়া বাজারে ৫৫ ফুট চওড়া রাস্তার দু’পাশ দখল হয়ে ২০ ফুটের কমে দাঁড়িয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের অনেকের। এখানেও স্থায়ী দোকানদারদের ভাড়া দিয়ে অস্থায়ী বিক্রেতারা পসরা সাজান বলে অভিযোগ রয়েছে।

শিল্পাঞ্চল জুড়েই নাগরিক থেকে বণিক মহলের অভিযোগ, বার বার প্রশাসন ব্যবস্থা নিয়েছে। কাজের কাজ এখনও কিছু হয়নি। (চলবে)

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE