ঠিকা সংস্থার হয়ে কর্মরত বেসরকারি রক্ষীদের আর কাজে রাখা হবে না, এই মর্মে ইসিএল কিছু দিন আগেই তাদের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে ইতিমধ্যেই পশ্চিম বর্ধমানের নানা প্রান্তে শুরু হয়েছে বিক্ষোভ ও আন্দোলন। বৃহস্পতিবার পশ্চিম বর্ধমানের সালানপুর এরিয়ার সাতটি কয়লাখনিতেও ওই রক্ষীরা তাঁদের পুনর্নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখালেন। তৃণমূলের পতাকা হাতে এ দিনের বিক্ষোভটি হয়েছে। এর ফলে, খনিগুলিতে কয়লা উত্তোলন এবং পরিবহণ পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পরে, উত্তোলন শুরু হলেও, পরিবহণ রাত পর্যন্ত চালু হয়নি।
এ দিন, প্রায় ১৭৩ জন বেসরকারি রক্ষী বিক্ষোভ শুরু করেন। তাঁরা জানান, এ দিন সকাল থেকে তাঁদের কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। তার পরেই শুরু হয় বিক্ষোভ। বিক্ষোকারীদের তরফে তপন চট্টোপাধ্যায় বলেন, “প্রায় তিন দশক ধরে কাজ করেছি। রাতারাতি কাজ থেকে বসিয়ে দেওয়া হয়েছে। সংসার নিয়ে অথৈ জলে পড়েছি। না খেতে পেয়ে মরে যাব।”
বেশ কয়েক ঘণ্টা বিক্ষোভ চলার পরে সালানপুর এরিয়ার জিএম ওয়াইকেপি সিংহ বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে বৈঠকে বসেন। দুপুরে কয়লা উত্তোলন শুরু করতে দেওয়া হলেও পরিবহণ বন্ধই রাখেন বিক্ষোভকারীরা। জিএম বিষয়টি বলেন, “সংস্থার সদর কার্যালয় থেকে ঠিকা নিরাপত্তা রক্ষীদের চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। ফলে, তাঁদের কাজে রাখা সম্ভব নয়।”
এর আগে ইসিএলের কুনস্তোরিয়া ও ঝাঁঝরা এরিয়াতেও একই দাবিতে বিক্ষোভ হয়েছিল। এ দিনও ঝাঁঝরা এরিয়ায় প্রায় ১৫০ জন বেসরকারি রক্ষী পুনর্নিয়োগের দাবিতে বিক্ষোভ দেখান। বন্ধ করে দেওয়া হয় পরিবহণও। খবর পেয়ে সেখানে যান তৃণমূলের ব্লক সভাপতি সুজিত মুখোপাধ্যায়, আইএনটিটিইউসি-র ব্লক সভাপতি সভাপতি পলাশপাণ্ডে প্রমুখ।
এ দিকে, ইসিএল সূত্রে জানা গিয়েছে, ছ’মাস আগেই ঠিকা সংস্থার চুক্তির মেয়াদ শেষ হয়েছে। তখনই প্রত্যেককে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে চুক্তির পুনর্নবীকরণ করা হবে না জানানো হয়। তার পরেও, শ্রমিক-স্বার্থে আরও ছ’মাস কাজে রাখা হয়ওই কর্মীদের। ইসিএলর মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক পুণ্যদীপ ভট্টাচার্য বলেন, “৩০ নভেম্বর সেই মেয়াদও শেষ হয়েছে। তাই ১ ডিসেম্বর থেকে ওই রক্ষীদের আর কাজে রাখা হয়নি। এই মুহূর্তে ঠিকা নিরাপত্তা রক্ষীদের সংস্থার প্রয়োজন নেই। তাই তাঁদের কাজে পুনর্বহাল করারসম্ভাবনা নেই।”
বিষয়টি নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন ও রাজনৈতিক দল। আইএনটিটিইউসি-র জেলা সভাপতি অভিজিৎ ঘটক বলেন, “এটা একতরফা শ্রমিক বিরোধী সিদ্ধান্ত। কেন্দ্রের কর্ম-সঙ্কোচনের নীতি আমরা কোনও ভাবেই মানব না।” বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের প্রতিক্রিয়া, “ইসিএলের সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রীয় কয়লামন্ত্রী প্রহ্লাদ জোশীকে চিঠি লিখেছি।” আইএনটিইউসি নেতা চন্ডি বন্দ্যোপাধ্যায় ও সিটু নেতা বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, “ঠিকা শ্রমিক ও তাঁদের পরিবারের কথা ভেবে কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করা উচিত।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy