শহরের নানা প্রান্তে গজিয়ে উঠেছে বস্তি। পশ্চিম বর্ধমানের চিত্তরঞ্জন রেল শহরের বাসিন্দাদের অভিযোগ, বিভিন্ন বস্তিতে বহিরাগতেরা এসে থাকছেন। ঘটছে নানা অবৈধ কাজকর্ম। এই পরিস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করার কথা জানিয়েছে ‘চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস’ (সিএলডব্লিউ)।
চিত্তরঞ্জন রেল কারখানার আবাসন অঞ্চলটি সংরক্ষিত এলাকা। কিন্তু নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর একাংশের অভিযোগ, গত কয়েক বছর ধরে বস্তি গজিয়ে ওঠায় সেটি আর ‘সংরক্ষিত’ বলে মনে হয় না তাঁদের। তাঁরা জানান, অজয়ের পাড়ে সীমজুড়ি লাগোয়া অঞ্চল, ফতেপুর, আমলাদহি বাজার, আর্সেলান বাজার ও হিল কলোনিতে পাঁচটি বড় বস্তি রয়েছে। এ ছাড়া, রেল আবাসনগুলির মধ্যবর্তী ফাঁকা অঞ্চল, অফিসার্স বাংলোর আউট হাউস লাগোয়া এলাকার কিছু অংশেও বস্তি রয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার আধিকারিকদের একাংশের অভিযোগ, বস্তিবাসীরা রেলের জল-বিদ্যুৎ ‘চুরি’ করে ব্যবহার করছেন।
কিন্তু কী ভাবে গজিয়ে উঠছে এ সব বস্তি? এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, কারখানারই কিছু ‘ক্ষমতাবান’ কর্মী তাঁদের আবাসনের পাশের ফাঁকা জমিতে নিজেরাই অবৈধ নির্মাণ তুলে সেখানে আবাসন থেকে জল-বিদ্যুতের সংযোগ জুড়ে বহিরাগতদের ভাড়া দিচ্ছেন। এ দিকে, এ জন্য শহরের নিরাপত্তা পরিস্থিতি বিঘ্নিত হচ্ছে বলে অভিযোগ। যেমন, পুলিশ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি কারখানার ঠিকাদার বলরাম সিংহের খুনের ঘটনায় ধৃতেরা সকলেই বিভিন্ন বস্তির বাসিন্দা। পাশাপাশি, সন্ধ্যায় বেশ কয়েকটি বস্তিতে মদ, জুয়া, সাট্টার আসর বসে বলে অভিযোগ। সেখানে লাগোয়া ঝাড়খণ্ডের মিহিজাম, জামতাড়া থেকে বহিরাগতেরা আসেন বলে অভিযোগ।
এই পরিস্থিতিতে সরব হয়েছে বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। চিত্তরঞ্জন রেল ইঞ্জিন কারখানার লেবার ইউনিয়নের সম্পাদক তথা সিটু নেতা রাজীব গুপ্তের প্রশ্ন, ‘‘শহরের প্রতিটি গেটে আরপিএফ থাকলেও বহিরাগতেরা অবাধে যাতায়াত করছে কী ভাবে! উপযুক্ত পদক্ষেপের দাবিতে কারখানা কর্তৃপক্ষের কাছে দরবার করা হয়েছে।’’ একই অভিযোগ আইএনটিইউসি-র কারখানা শাখার সহ-সভাপতি নেপাল চক্রবর্তীরও।
সিএলডব্লিউ-র সিনিয়র জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ অবশ্য বলেন, ‘‘বিষয়টি আরপিএফ-এর নজরে আছে। এ নিয়ে চিন্তাভাবনা চলছে। করোনা-পরিস্থিতির কারণে এখনই কিছু করা সম্ভব হচ্ছে না।’’ তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কারখানার কর্তাদের একাংশ জানান, বস্তিগুলি চিহ্নিত করা হয়েছে। যাঁদের মদতে বস্তিগুলি গজিয়ে উঠছে, তাঁদেরও চিহ্নিত করা হয়েছে। আইনি পদক্ষেপ করা হবে।