প্রতীকী চিত্র।
করোনা পরিস্থিতিতে শিক্ষা ব্যবস্থায় অনলাইন পদ্ধতির গুরুত্ব বাড়ছে। সে কারণে ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টালের মাধ্যমে প্রাথমিক, উচ্চ প্রাথমিক, মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের সব স্কুলকে নিজস্ব ওয়েবসাইট তৈরির নির্দেশ দিয়েছিল স্কুল শিক্ষা দফতর। প্রধান শিক্ষকদের সে জন্য ৩১ অগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া ছিল। কিন্তু নির্দিষ্ট সময় পরেও মাধ্যমিক বা উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের অনেক স্কুল এখনও নিজস্ব ওয়েবসাইট খুলতে পারেনি বলে শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে। অনেক প্রাথমিক স্কুল বিপাকে পড়েছে নিজস্ব কম্পিউটার বা পরিকাঠামো না থাকায়।
শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, পূর্ব বর্ধমান জেলায় ৫৩৮টি উচ্চ মাধ্যমিক স্কুলে অধিকাংশেই কম্পিউটার রয়েছে। কিন্তু উচ্চ প্রাথমিক বা জুনিয়র হাইস্কুলগুলিতে নেই। নানা স্কুল কর্তৃপক্ষ জানান, পরিকাঠামো না থাকায় নিজস্ব ওয়েবসাইট খুলতে প্রধান শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সাইবার ক্যাফের সাহায্য নিতে হচ্ছে। তাতেও সমস্যার শেষ নেই। স্কুলের নিজস্ব কম্পিউটার না থাকায় পোর্টাল থেকে পড়ুয়াদের বাড়ির কাজ, মডেল প্রশ্নপত্র পেতেও শিক্ষক-শিক্ষিকাদের স্কুল পরিদর্শকের দফতর বা সাইবার ক্যাফেতে ছুটতে হচ্ছে। করোনা-পরিস্থিতিতে বারবার সাইবার ক্যাফে বা স্কুল পরিদর্শকের অফিসে যেতেও সমস্যা হচ্ছে বলে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের অভিযোগ। কোনও প্রশিক্ষণ ছাড়া, ওয়েবসাইট খুলতে গিয়ে হোঁচট খেতে হচ্ছে, এমন অভিযোগে জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতরে এসে ক্ষোভও জানিয়েছেন অনেকে।
বুধবার আউশগ্রাম, ভাতার, খণ্ডঘোষ, কালনার বেশ কয়েকজন শিক্ষক জেলা শিক্ষা দফতরে এসে অভিযোগ করেন, তাঁদের কারও স্কুলে কম্পিউটার নেই, কোথাও উপযুক্ত কর্মীর অভাবে সময়ে ওয়েবসাইট খোলা যায়নি। দু’-এক জন শিক্ষকের দাবি, ওয়েবসাইট চালুর ব্যাপারে তাঁরা সম্পূর্ণ অজ্ঞ। তাই বারবার চেষ্টা করেও ওয়েবসাইট খুলতে পারেননি। জেলা স্কুল পরিদর্শক (মাধ্যমিক) সূত্রে জানা যায়, মাধ্যমিক স্তরের প্রায় ৬০টি স্কুল এখনও ওয়েবসাইট খুলতে পারেনি। ওই দফতরের আধিকারিক গোপাল পাল বলেন, ‘‘এখনও যাঁদের স্কুলে ওয়েবসাইট খোলা বাকি, আমরা তাঁদের ডাকছি। জেলা থেকেই স্কুলের নামে ওয়েবসাইট খুলে দেওয়া হবে।’’ রাজ্য সরকারের ‘বাংলার শিক্ষা’ ওয়েবসাইটে গত ১০ বছরের সমস্ত নথি তোলার নির্দেশিকা এসেছে বলে জানা গিয়েছে।
রাজ্য স্কুল শিক্ষা দফতর বছরখানেক আগে ‘বাংলার শিক্ষা’ পোর্টাল চালু করেছে। এর দু’টি ভাগ— ‘ই-পোর্টাল’ এবং ‘স্কুল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’। ‘ই-পোর্টালে’ শিক্ষা দফতরের পাঠানো নির্দেশিকা, বিভিন্ন পাঠ্য বিষয় পাবেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ‘স্কুল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’-এ যাবতীয় তথ্য জানা যাবে। জেলা শিক্ষা দফতর সূত্রে জানা যায়, গত ডিসেম্বরে স্কুল পরিদর্শকদের প্রশিক্ষণ হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকাদেরও প্রশিক্ষণের কথা ছিল। করোনা-আবহে ‘স্কুল ম্যানেজমেন্ট সিস্টেমের’ মাধ্যমে ওয়েবসাইট খুলতে জোর দেওয়া হয়েছে।
মাধ্যমিক স্তরের বেশিরভাগ স্কুল ওয়েবসাইট খুলতে পারলেও জেলার ৩৮৫৬টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে মাত্র ৬০১টি এখনও পর্যন্ত তা পেরেছে। পশ্চিমবঙ্গ প্রাথমিক শিক্ষা সমিতির জেলা সভাপতি তপন পোড়েল দাবি করেন, ‘‘জেলার মাত্র ২০ শতাংশ প্রাথমিক স্কুলে কম্পিউটার রয়েছে।’’ বামপন্থী সংগঠনের শিক্ষক-নেতা স্বপন মালিকের দাবি, ‘‘পরিকাঠামোয় জোর না দিলে ওয়েবসাইট খুলেও পড়ুয়াদের তো কোনও লাভ হবে না।’’
পরিকাঠামোর অভাবের কথা মেনে নিয়ে জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) স্বপন দত্ত বলেন, ‘‘আপাতত প্রাথমিক স্কুলের ওয়েবসাইট তৈরি বন্ধ রয়েছে। মূল সার্ভারে চাপ পড়ছে। যে সব স্কুলে কম্পিউটার নেই, স্কুল পরিদর্শকের দফতরের সাহায্যে তাঁদের ওয়েবসাইট খুলতে বলা হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy