Advertisement
১৯ ডিসেম্বর ২০২৪
sand smuggling

‘লাভের গুড়ে’ হাত পড়তেই হামলা, অনুমান কর্তাদের

সেই লাভের গুড় আটকে যেতেই বুধবার রাতের হামলা, দাবি পরিবহণ দফতরের। হেমায়েতপুর মোড়ের কাছে তাঁদের গাড়িতে গুলি করা হয়। বনেটে গুলি লাগে।

এই গাড়িতে গুলি করা হয়। কাচের নীচে গুলির গর্ত । নিজস্ব চিত্র

এই গাড়িতে গুলি করা হয়। কাচের নীচে গুলির গর্ত । নিজস্ব চিত্র

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
পূর্বস্থলী শেষ আপডেট: ২০ জানুয়ারি ২০২৩ ০৮:৫৫
Share: Save:

অতিরিক্ত বালি বহনে কড়া নজরদারি চলছে। এক একটি ট্রাক থেকে ৫০ হাজার টাকাও জরিমানা করছে পরিবহণ দফতর। সেই আক্রোশেই দফতরের নজরদারি গাড়িতে গুলি চালানো হয়েছে বলে মনে করছেন দফতরের একাংশ আধিকারিক। বেশি লাভের আশায় অতিরিক্ত বালি, পাথর নিয়ে যাওয়ার প্রবণতা বহু দূর ছড়িয়ে রয়েছে, দাবি তাঁদের।

প্রশ্ন উঠছে অতিরিক্ত বালি বহনের প্রবণতা এত বেশি কেন? এই রাস্তায় নজরদারির কারণই বা কী? পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, বীরভূম থেকে পাথর ও মঙ্গলকোট, কাটোয়ার একাধিক নদীঘাট থেকে বালি যায় এসটিকেকে রোড ধরে। পূর্বস্থলীর হেমায়েতপুর মোড় থেকে নদিয়ার দিকে চলে যায় কিছু গাড়ি। আবার কয়েক কিলোমিটার এগিয়ে নাদনঘাট থেকে বর্ধমানের দিকেও বেঁকে যাওয়া যায়। কিছু ট্রাক হুগলির গুপ্তিপাড়া, বলাগড়ের দিকেও যায়। নানা জেলার সঙ্গে যোগাযোগের সুবিধার কারণেই এ পথে বালির গাড়ির দাপাদাপি বেশি, দাবি তাঁদের। জানা গিয়েছে, একটি ছ’চাকার ট্রাকে বৈধ ভাবে ৩০০ সিএফটি বালি আনা যায়। নিয়ম না মানলে আনা যায় দ্বিগুন। নিয়ম মানলে লাভ দু’হাজার টাকা। নাহলে লাভও দ্বিগুন। ১২ চাকার ডাম্পারে পাথর আনা যায় ২২ টন। সেটা ৪৪ পর্যন্ত আনা হয় বলে অভিযোগ। সে ক্ষেত্রে প্রায় আট হাজার টাকা লাভ হয়, দাবি ট্রাক চালকদের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ট্রাক চালক বলেন, ‘‘কাটোয়ার নদী ঘাট থেকে নিয়ম মেনে বালি তুললে এক ট্রাকে তিন থেকে সাড় তিন হাজার টাকা লাভ হয়। গাড়ির কিস্তি দিতেই ওই টাকা শেষ হয়ে যায়। ১৫-২০ হাজার টাকা লাভের উদ্দেশে অতিরিক্ত বালি তোলা হয় গাড়িতে।’’

সেই লাভের গুড় আটকে যেতেই বুধবার রাতের হামলা, দাবি পরিবহণ দফতরের। হেমায়েতপুর মোড়ের কাছে তাঁদের গাড়িতে গুলি করা হয়। বনেটে গুলি লাগে। পরে পিছু ধাওয়া করা হয় অনেকটা পথ। পুলিশের টহলদার গাড়ির কাছে দাঁড়ানোয় পিছু হটে হামলাকারীরা। ঘটনায় নিরাপত্তার অভিযোগ করেছেন ওই কর্মীরা। নিরস্ত্র অবস্থায় এই ধরনের পরিস্থিতির মোকাবিলা করা সম্ভব নয় বলেও দাবি করেছেন। পরিবহণ দফতরের জেলা স্তরের তিন জনের কমিটির অন্যতম সদস্য কালনার বিধায়ক দেবপ্রসাদ বাগ। তিনি বলেন, ‘‘নজরদারির সময়ে পুলিশ থাকে। পূর্বস্থলীর ঘটনার পরে নিরাপত্তা বাড়ানো যায় কি না, তা আলোচনা করা হবে।’’

এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে বিজেপির রাজ্য নেতা দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘মাফিয়ারা দল চালাচ্ছে, সরকার চালাচ্ছে। তাঁদের আটকাতে গেলে এটাই হবে। মাতালদের ধরতে গেলে পিটিয়ে দিয়েছে। পাচারকারীদের ধরতে গেলে বিএসএফের উপরে আক্রমণ করছে। এখন বালি, কয়লার গাড়ি আটকাতে গেলে গুলি চলছে। মাফিয়াদের দাদাগিরি চলছে।’’ যদিও তৃণমূলের রাজ্যের অন্যতম মুখপাত্র দেবু টুডুর পাল্টা দাবি, ‘‘দুষ্কৃতীদের কোনও জাত হয়নি। পুলিশ ব্যবস্থা নিচ্ছে। বিজেপি ছুতো পেলেই চক্রান্তের চেষ্টা করে। গুলিগোলা তে উত্তরপ্রদেশেই বেশি চলে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

sand smuggling State Transport department
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy