Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Ajay River

road: বালির গাড়ি যেতে অজয় ‘আটকে’ রাস্তা

মাছ না আসায় মৎস্যজীবীরাও সমস্যায় পড়েন। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে, সমস্যা আরও বাড়বে, দাবি তাঁদের।

হিউম পাইপ ফেলে নদের বুকে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী পথ। তা দিয়েই চলছে বালিবোঝাই ট্রাক।

হিউম পাইপ ফেলে নদের বুকে তৈরি হয়েছে অস্থায়ী পথ। তা দিয়েই চলছে বালিবোঝাই ট্রাক। নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা 
কেতুগ্রাম শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২১ ০৭:৪৮
Share: Save:

অজয় নদের স্বাভাবিক গতি আটকে ‘হিউম পাইপ’ ফেলে বালি বোঝাই গাড়ি চলাচলের রাস্তা তৈরির অভিযোগ উঠেছে পূর্ব বর্ধমানের কেতুগ্রামের রসুই গ্রামের কাছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, ভোর থেকে কার্যত সারা দিন অজয়ের বালি তুলে ওই রাস্তা দিয়ে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। নদের ও পারেই রয়েছে কাটোয়া থানার চুরপুনি মৌজার রাজুয়া গ্রাম। পথ কমাতেই নদীর উপরে অস্থায়ী রাস্তা করা হয়েছে বলেও দাবি তাঁদের। তাঁদের আরও অভিযোগ, নদের জল কমে গেলে গবাদি পশুরা ওই পাইপের ভিতরে ঢুকে মারা যায়। মাছ না আসায় মৎস্যজীবীরাও সমস্যায় পড়েন। প্রশাসন ব্যবস্থা না নিলে, সমস্যা আরও বাড়বে, দাবি তাঁদের।

মহকুমাশাসক (কাটোয়া) জামিল ফতেমা জেবা বলেন, ‘‘নদীর স্বাভাবিক গতি আটকানো ঠিক নয়। সেচ দফতর ও ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতরের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।’’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কাটোয়া মহকুমায় অজয় থেকে বালি তোলার জন্য একাধিক বৈধ ঘাট রয়েছে। রসুইয়ের ঘাটটিও বৈধ। তবে রাস্তা তৈরির অনুমতি নেই বলেই দাবি করেছেন স্থানীয়রা। রাজোয়া গ্রামের বাসিন্দা নান্টু মণ্ডল বলেন, “এ ভাবে বড় বড় পাইপ ফেলে রাস্তা করে ভারী বালির গাড়ি নিয়ে যাওয়ার ফলে পাড়ের কাছে বড় বড় গর্ত তৈরি হয়ে যায়। পরে, নদীর জল বাড়লে ওই পাইপগুলি সরে গেলেও গর্তটা রয়ে যায়। নদীর দু’প্রান্তে একই অবস্থা হয়। সেই সময়ে নদীতে কেউ স্নান করতে গেলে কোথাও হাঁটু বা কোমর সমান জল থাকলেও পাইপের জায়গায় গভীর গর্ত থাকে। বছর দু’য়েক আগে রসুই গ্রামে এক যুবক ওই ভাবে জলে পড়ে মারাও গিয়েছেন। প্রশাসনের পদক্ষেপ করা উচিত।” তাঁদের আরও অভিযোগ, ‌বালিঘাটের ইজারাদারেরা প্রতি বছরই এ ভাবে রাস্তা তৈরি করেন। লিজ নেওয়া সীমানা ছাড়িয়েও নিয়ম বহির্ভূত ভাবে বালি তোলা হয়। এতে যেমন সরকারের রাজস্বে ক্ষতি হয়। তেমনই ক্ষতি হয় নদীর।

রসুই গ্রামের বাসিন্দা রাজু সরকারের দাবি, ‘‘বালি নিয়ে যাওয়ার জন্য নদীর স্বাভাবিক গতি আটকে বড় বড় হিউম পাইপ ফেলে রাস্তা করা হয়েছে। জল কমে গেলে নানা গবাদি পশু পাইপের ভিতরে ঢুকে মারা যায়। আবার জলস্তর বেড়ে গেলে মাছ আসতে বাধা পায়। তবে বালি কারবারিদের হুমকির ভয়ে প্রকাশ্যে কেউ মুখ খুলতে পারে না।”

ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর সূত্রে জানা যায়, নদীর উপরে রাস্তা তৈরির কোনও অনুমতি দেওয়া হয় না। সেচ দফতরের ময়ুরাক্ষী সাউথ ক্যানেল ডিভিশনের সহকারি বাস্তুকার জাহাঙ্গীর হোসেনও জানান, নদীর গতিপথ আটকানো ঠিক নয়। বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখে যথাযথ পদক্ষেপ করা হবে। স্থানীয় বিল্বেশ্বর পঞ্চায়েতের প্রধান কনিকা বৈরাগ্যর দাবি, ‘‘পঞ্চায়েতকে কোনও অভিযোগ জানাননি কেউ। ওই ভাবে রাস্তা তৈরিতে আগেও দুর্ঘটনা ঘটেছে। খোঁজ নেওয়া হবে।’’ ওই বালিঘাটের ইজারাদারদের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি।

অন্য বিষয়গুলি:

Ajay River
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE