সহায়ক মূল্যে ধান কেনা হচ্ছে না, এই অভিযোগে শুক্রবার পূর্ব বর্ধমানের গলসি ২ ব্লকের ইড়কোনায় রাস্তা অবরোধ করেন চাষিদের একাংশ। চালকলের সামনের রাস্তায় গর্ত করে ট্রাক ঢোকা-বেরনোর পথ বন্ধ করে দেওয়া হয়। প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা ধরে অবরোধ চলাকালীন রাস্তাতেই রান্না করে খাওয়াদাওয়ার আয়োজন করেন চাষিরা। শেষে বিডিও (গলসি ২) সঞ্জীব সেন তাঁদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা মেটানোর বিষয়ে আশ্বাস দিলে, অবরোধ ওঠে।
এ দিন সকালে প্রায় দু’শো চাষি ভিড় করেন চালকলটির সামনে। তাঁরা দাবি করেন, সরকারের নির্ধারিত দামে চালকলকেই চাষিদের ধান কিনতে হবে। চালকল কর্তৃপক্ষ তাঁদের জানান, ধান কেনার সরকারি কোনও নির্দেশ তাঁদের কাছে নেই। সমবায় বা সরকারি শিবিরে ধান বিক্রি করতে হবে। কিন্তু তাতে রাজি হননি চাষিরা। তাঁরা অভিযোগ করেন, চালকলের ছাই, বর্জ্য ও দূষিত জল এলাকার ক্ষতি করছে। তাই চালকলেই তাঁদের ধান কিনতে হবে।
ওই চাষিদের দাবি, ব্লকে ধান কেনা শুরু হয়েছে। কিন্তু এই এলাকার কোনও চাষি এখনও ধান বিক্রি করতে পারেননি। ফলে, তাঁরা বিপাকে পড়েছেন। কম দামে ধান বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছেন অনেকে। দু’পক্ষের তর্কাতর্কির মাঝে চাষিদের একাংশ সামনে গলসি-গোহগ্রাম রাস্তা অবরোধ শুরু করেন। রাস্তার চালকলের সামনের অংশে রাস্তা গর্ত খুঁড়ে দেওয়া হয়। ফলে, চালকলের কাজকর্ম বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ পৌঁছয়।
পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি বাসুদেব চৌধুরী দাবি করেন, ‘‘১ ডিসেম্বর থেকে ধান কেনার কথা ছিল। কিন্তু চালকলগুলি সরকারের সঙ্গে ধান ভাঙানো নিয়ে চুক্তি করতে দেরি করায় তা শুরু করতে দেরি হয়েছে। দ্রুত সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি।’’ সকাল ১১টা থেকে বিকেল সাড়ে ৪টে পর্যন্ত অবরোধ চলার পরে, ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক হয় চাষিদের। তার পরে অবরোধ ওঠে। বিডিও জানান, চাষিদের দাবি নিয়ে জেলা প্রশাসন মঙ্গলবার আলোচনায় বসবে। তিনি বলেন, ‘‘দূষণ নিয়ে চাষিদের অভিযোগ থাকলে দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদে অভিযোগ জানাতে পারেন। পর্ষদ আইনি ব্যবস্থা নেবে।’’ চালকল কর্তৃপক্ষ অবশ্য দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।