সালানপুর থানায় বিক্ষোভ। ছবি: পাপন চৌধুরী।
গ্রামের আনাচে কানাচে চলছে মাদকের অবাধ কারবার। মাদকাসক্ত হচ্ছেন গ্রামের যুবকেরা। এলাকায় ভিড় জমছে বহিরাগতদের। এর জেরে বাড়ছে চুরি, ছিনতাই। পুলিশকে বার বার পদক্ষেপ করার আবেদন জানিয়েও লাভ হচ্ছে না। এই সব অভিযোগে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার সকাল পর্যন্ত সালানপুর থানায় দফায় দফায় বিক্ষোভ দেখালেন ক্ষুদিকা গ্রামের মহিলা ও পুরুষদের একাংশ। বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা নিজেরাই কুড়ি জনকে পাকড়াও করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। পুলিশ জানায়, অভিযোগ পাওয়ার পরেই অভিযান শুরু করা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার রাতে ক্ষুদিকা গ্রামের শ’দুয়েক মহিলা সালানপুর থানায় জড়ো হন। তাঁদের অভিযোগ, সালানপুর থানা থেকে মাত্র দু’শো মিটার দূরের এই গ্রামে দিনের পর দিন রমরমিয়ে মাদকের কারবার চালাচ্ছেন একদল লোক। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত গলি, ঘুপচিতে এই কারবার চালানো হচ্ছে। গ্রামের যুবকেরা মাদকের নেশায় ডুবে থাকছেন। এর জেরে ঘরে ঘরে অশান্তি লেগেই আছে বলে দাবি বিক্ষোভকারীদের। থানার অফিসারেরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার আশ্বাস দিয়ে তখনকার মতো পরিস্থিতি শান্ত করেন। মহিলারা বাড়ি ফিরে যান।
মহিলাদের অভিযোগ, রাতে বিক্ষোভ দেখানোর পরেও পুলিশি অভিযান শুরু হয়নি। বুধবার সকাল থেকে ফের গ্রামের নানা প্রান্তে মাদকের বিক্রি শুরু হয়ে যায়। বহিরাগতরা সে সব ঠেকে ভিড় জমাতে শুরু করেন। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, এর পরেই ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন গ্রামের পুরুষদের একাংশ। তাঁরা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। বাসিন্দারাই সে সব ঠেকে গিয়ে বহিরাগতদের ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেন। বিক্ষোভকারী বিক্রম বাউড়ির অভিযোগ, “সকাল থেকে রাত পর্যন্ত চলছে এই কারবার। এই কারবারের মাথায় যাঁরা বসে রয়েছেন, তাঁদের নামও পুলিশকে জানানো হয়েছে। কিন্তু পুলিশের তরফে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হচ্ছে না। ফলে, মাদকের কারবারিরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।” আর এক বাসিন্দা সুমন বাউড়ি বলেন, “বহিরাগতরা সকাল হলেই এ সব ঠেকে ভিড় করেন। তাঁদের আচরণে গ্রামের পরিবেশ নষ্ট হতে বসেছে। মাদক কেনার টাকা জোগাড় করতে তাঁরা চুরি-ছিনতাই করছেন। মহিলারা একা রাস্তায় বেরোতে ভয় পাচ্ছেন।”
গ্রামের বাসিন্দাদের দাবি, মাদক কারবারের মাথায় যাঁরা বসে আছেন, তাঁদের অবিলম্বে গ্রেফতার করতে হবে। তবেই মাদকের কেনাবেচা বন্ধ হবে। গ্রামে সুস্থ ও স্বাভাবিক পরিবেশ ফিরে আসবে। বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তৃণমূলের সালানপুর ব্লক সভাপতি তথা জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ (স্বাস্থ্য) মহম্মদ আরমান। তিনি বলেন, “মাদকের নেশা একটা সামাজিক ব্যাধিতে পরিণত হয়েছে। সচেতনতা প্রচার করেও যুব সম্প্রদায়ের একাংশকে বিরত করা যাচ্ছে না। পুলিশকে বলেছি বাসিন্দাদের অভিযোগ খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করার জন্য।”
পুলিশের দাবি, মঙ্গলবার রাত থেকেই ক্ষুদিকা-সহ আশপাশের অঞ্চলে অভিযানে শুরু করা হয়েছে। কয়েক জন মাদকাসক্তকে ধরা হয়েছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy