Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
deforestation

গাছে কোপ বারবার, ছায়াহীন পথেজ্বালা ধরছে শরীরে

সম্প্রতি বর্ধমান শহরের জিটি রোডের দু’টি ছবি ভাইরাল হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। একটু পুরনো। তাতে দেখা যাচ্ছে, কয়েক বছর আগেও বর্ধমান শহরের উল্লাস যাওয়ার রাস্তার দু’দিক ছিল গাছপালায় ভরা।

Trees covering the road by its shadow

ছায়াঘেরা পথ। নিজস্ব চিত্র

সুপ্রকাশ চৌধুরী
বর্ধমান শেষ আপডেট: ২৪ এপ্রিল ২০২৩ ০৯:৪৭
Share: Save:

রাস্তা সম্প্রসারণ কিংবা সৌন্দর্যায়নের জন্য কোপ পড়েছে হাজার-হাজার গাছে। কিন্তু প্রকৃতির সেই ক্ষতি পূরণ করতে নতুন গাছ বসানোর প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়িত হয়নি বলে অভিযোগ। গরমে হাঁসফাঁস করা বর্ধমানবাসী এখন বর্ধমান শহর ও শহর সংলগ্ন এলাকার অতীত এবং বর্তমানের ছবি দেখে হতাশ হচ্ছেন।

সম্প্রতি বর্ধমান শহরের জিটি রোডের দু’টি ছবি ভাইরাল হয়েছে সমাজ মাধ্যমে। একটু পুরনো। তাতে দেখা যাচ্ছে, কয়েক বছর আগেও বর্ধমান শহরের উল্লাস যাওয়ার রাস্তার দু’দিক ছিল গাছপালায় ভরা। অন্যটি নতুন। তাতে দেখা যাচ্ছে, সেই রাস্তায় এখন সবুজের চিহ্ন মাত্র নেই। রাস্তার দু’পাশে মাথা তুলেছে অট্টালিকা। একই সূত্রে উঠে এসেছে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে সম্প্রসারণের জন্য হাজার হাজার গাছ কাটার প্রসঙ্গও। বর্ধমান শহরের নাগরিকদের একাংশ জানান, বর্ধমান শহরে জিটি রোডের পাশে পুলিশ লাইন থেকে আলিশা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত যাওয়ার রাস্তার পাশে এক দশক আগেও ছিল প্রচুর বড় গাছ। রাস্তা সম্প্রসারণের জন্য সেগুলি কাটা হয়। সেখানে আর নতুন গাছ বসানো হয়নি। অতীতের ছায়াঘেরা সেই রাস্তার দু’পাশ এখন রুক্ষ। শহরবাসীর একাংশের দাবি, গাছ কাটার পরে, প্রশাসনের আশ্বাস ছিল, পরিবেশের ক্ষতি পূরণে গাছ বসানো হবে। কিন্তু তা হয়নি বলে অভিযোগ শহরবাসীর।

অন্য দিকে, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য প্রায় ২০ হাজার গাছ কাটা হয় জাতীয় সড়কের বর্ধমান বিভাগ এলাকায়। কিন্তু তার পরিবর্তে নতুন গাছ না বসানোয় জাতীয় সড়কে লেশমাত্র ছায়া নেই। এ নিয়ে সরব হয়েছেন নাগরিকেরা। বন দফতর জানায়, জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের জন্য বর্ধমান বিভাগে কম-বেশি ১৯,৫১০টি গাছ কাটা হয়েছিল। পরিবেশের ক্ষতিপূরণে ৯৫-৯৬ হাজার গাছ বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ, বন দফতর এবং একটি এজেন্সি গাছগুলি লাগাচ্ছে। বর্ধমান বন বিভাগের সহকারী বনাধিকারিক সোমনাথ চৌধুরীর দাবি, ‘‘ইতিমধ্যেই আমাদের তরফে ২৩ হাজার গাছ লাগানো হয়েছে। জাতীয় সড়ক কর্তৃপক্ষ কিছু গাছ লাগিয়েছে। পরিবেশের ক্ষতি পূরণ করা হবে।’’

বর্ধমান শহরের ভিতরে এমন কোনও পরিকল্পনার কথা শোনাতে পারছে না প্রশাসন। জিটি রোড সম্প্রসারণের দায়িত্বে থাকা পূর্ত দফতরের আধিকারিক সুজয় রায় প্রতিহার বলেন, ‘‘রাস্তার জন্য কিছু গাছ কাটা হয়। এর জন্য ফের নতুন গাছ লাগানো হয়েছিল। কিন্তু, জিটি রোডের সৌন্দর্যায়নের কাজের জন্য ওই সব গাছ নষ্ট হয়েছে।’’ বর্ধমানের পুরপ্রধান পরেশচন্দ্র সরকার বলেন, ‘‘সৌন্দর্যায়নের জন্য গাছ নষ্ট হয়েছে কিনা জানা নেই। গাছ বসানোর দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। ওদের দায়িত্ব নিতে হবে।’’ গাছ রক্ষণাবেক্ষণ এবং বৃক্ষরোপণ নিয়ে কাজ করা একটি সংগঠনের কর্ণধার আবু আজাদ বলেন, ‘‘উন্নয়ন হোক। কিন্তু গাছে কোপ পড়লে দ্বিগুণ গাছ প্রকৃতিকে ফিরিয়ে দিতে হবে। এটাই আমাদের দািব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

deforestation Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy