প্রতীকী ছবি।
‘করোনার টিকা নেওয়ার আগে রক্তদান করুন’— এই মর্মে আর্জি জানাচ্ছে বিভিন্ন রক্তদাতা সংগঠন। এ পর্যন্ত শুধুমাত্র ৪৫ বছরের বেশি বয়সিদের টিকা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ১ মে থেকে ১৮ বছরের উপরে সকলেই টিকা নিতে পারবেন। টিকা নিলে বেশ কিছু দিন রক্তদান করা যাবে না। একে তীব্র গরম। তার উপরে, নির্বাচনের কারণে রক্তদান শিবির আয়োজনের সংখ্যা কমেছে। ফলে, টিকা নিতে যাওয়ার আগে রক্তদাতারা রক্তদান করে না গেলে রক্তের জোগানে ব্যাপক সমস্যার আশঙ্কা করছে রক্তদাতা সংগঠনগুলি।
ঘটনাচক্রে, বৃহস্পতিবার থেকেই দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের ব্লাড ব্যাঙ্কে রক্ত-সঙ্কট দেখা দিয়েছে বলে স্বাস্থ্যকর্তারা জানান। এ দিন সেখানে ও (+),এ (+) গ্রুপের রক্ত এক ইউনিট করে এবং বি (+), এবি (+) গ্রুপের রক্ত চার ইউনিট করে রয়েছে। কোনও নেগেটিভ গ্রুপের রক্তই নেই!
বিভিন্ন রক্তদাতা সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত ২০ থেকে ৪৫ বছর বয়সীদেরই রক্তদানে বেশি এগিয়ে আসতে দেখা যায়। কিন্তু ‘ন্যাশনাল ব্লাড ট্রান্সফিউশন কাউন্সিল’ (এনবিটিসি)-এর নিয়ম অনুযায়ী, যে কোনও করোনা টিকা নেওয়ার ক্ষেত্রে, টিকা নেওয়ার দিন থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত রক্তদান করা যায় না। সে হিসেবে, কোভ্যাক্সিনের প্রথম ডোজ় নেওয়ার ২৮ দিন পরে, দ্বিতীয় ডোজ় নেওয়া যায়। অর্থাৎ, দু’দফায় ২৮ দিন করে, মোট ৫৬ দিন রক্তদান করতে পারবেন না কোভ্যাক্সিন নেওয়া মানুষজন। এ দিকে, কোভিশিল্ড যাঁরা নেবেন, তাঁরা প্রায় ১২ সপ্তাহ রক্তদান করতে পারবেন না।
এই পরিস্থিতিতে রাজ্য স্তরের একটি রক্তদাতা সংগঠনের সম্পাদক কবি ঘোষ জানান, গ্রীষ্মে রক্তের সঙ্কট কাটাতে ‘ন্যানো’ রক্তদান শিবির, সান্ধ্যকালীন রক্তদান শিবিরের আয়োজন করা হয়। এ বার গ্রীষ্মের সঙ্গে যোগ হয়েছে বিধানসভা ভোট। তার উপরে করোনা-পরিস্থিতি। ফলে, রক্তের স্বাভাবিক জোগান মেটাতে চূড়ান্ত সমস্যা হচ্ছে। তাঁর কথায়, ‘‘১৮ বছরের বেশি বয়সীদের করোনার টিকা নেওয়া শুরু হলে রক্তদাতার সংখ্যা আরও কমে যাবে। তাই টিকা নেওয়ার আগে রক্তদানের আর্জি জানাচ্ছি আমরা। রক্তের স্বাভাবিক জোগান বজায় না থাকলে বিশেষ করে যে রোগীদের নিয়মিত রক্ত লাগে তাঁরা খুব সমস্যায় পড়বেন।’’ তবে দুর্গাপুরের একটি রক্তদাতা সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক সজল বসু জানান, এক বার রক্তদানের পরে, দ্বিতীয় বার রক্তদান করার জন্য যত দিন অপেক্ষা করতে হয়, সেই মধ্যবর্তী সময়ে (৯০ থেকে ১২০ দিন) টিকা নিলে কোনও দিকেই সমস্যা থাকছে না।
চিকিৎসকেরা জানান, অস্ত্রোপচারের রোগীর রক্ত লাগে। তবে রক্তের জোগান নিশ্চিত না হলে পরিস্থিতি বুঝে অস্ত্রোপচারের দিন পিছিয়ে দেওয়া যেতে পারে। কিন্তু ক্যানসার, থ্যালাসেমিয়া প্রভৃতি রোগীদের ক্ষেত্রে নিয়মিত রক্তের প্রয়োজন পড়ে। দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মেডিক্যাল অফিসার ইন্দ্রজিৎ মাজি বলেন, ‘‘নতুন পরিস্থিতিতে সবাইকেই সচেতন থাকতে হবে। টিকা নিতে যাওয়ার আগে রক্তদান করে গেলে, রক্তের জোগান বজায় থাকবে। সে দিকটা ভেবে রক্তদানে এগিয়ে আসা যেতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy