Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪
Agnimitra Pal Controversy

‘খলিস্তানি’ বিতর্কে শুভেন্দুর ক্ষমা চাওয়ার দাবি উঠল, আসানসোলে অগ্নিমিত্রার বাড়ির সামনে শিখ-বিক্ষোভ

প্রথমে আসানসোল দক্ষিণের বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পালের বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখান শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা। তার পর ভগৎ সিংহ মোড়ে গিয়ে শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে স্লোগান দেন তাঁরা।

আসানসোলে অগ্নিমিত্রার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ।

আসানসোলে অগ্নিমিত্রার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ ১৮:১১
Share: Save:

সন্দেশখালিতে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী-সহ অন্যান্য় বিজেপি বিধায়কদের বাধা দিতে আসা পাগড়িধারী আইপিএস অফিসারকে বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং বিজেপি বিধায়ক অগ্নিমিত্রা পাল ‘খলিস্তানি’ বলে আক্রমণ করেছেন বলে অভিযোগ। মঙ্গলবারই এই ঘটনার কঠোর সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ বার তা নিয়ে পথে নেমে বিক্ষোভ শুরু করলেন শিখ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। আসানসোল দক্ষিণের বিধায়ক অগ্নিমিত্রার বাড়ির সামনে বিক্ষোভ দেখাল ‘বার্নপুর গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি’। দেওয়া হল স্মারকলিপিও। তাতে বিরোধী দলনেতাকে সর্বসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। ক্ষমা না চাইলে দেশ জুড়ে আন্দোলন শুরু হবে বলেও হুঁশিয়ারি দিয়েছে ওই সংগঠন। স্মারকলিপি জমা দেওয়ার পর ‘বার্নপুর গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি’ আসানসোলের ভগৎ সিংহ মোড়ে জমায়েত করে শুভেন্দুর বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়। তার পর আসানসোল দক্ষিণ থানার সামনে জিটি রোড অবরোধ কর্মসূচিও নেওয়া হবে বলে জানা যাচ্ছে। শুধু আসানসোলই নয়, রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় বিজেপি বিধায়কদের ক্ষমা চাওয়ার দাবিতে পথে নেমেছেন শিখ সম্প্রদায়ের বহু মানুষ। কলকাতায় বিজেপির মুরলীধর সেন লেনের পার্টি অফিসের সামনেও বিক্ষোভ দেখান শিখ সম্প্রদায়ের প্রতিনিধিরা।

অগ্নিমিত্রা পালকে দেওয়া স্মারকলিপি।

অগ্নিমিত্রা পালকে দেওয়া স্মারকলিপি। — নিজস্ব চিত্র।

মঙ্গলবার সকালে সন্দেশখালি অভিমুখে যাত্রা করেছিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। তাঁর সঙ্গে গিয়েছিলেন অগ্নিমিত্রাও। ধামাখালিতে তাঁদের আটকে দিয়েছিল পুলিশ। কেন তাঁদের আটকানো হচ্ছে, তা নিয়ে পুলিশের আধিকারিকদের সঙ্গে বাদানুবাদে জড়িয়ে পড়েছিলেন বিজেপি বিধায়করা। পুলিশ আধিকারিকদের মধ্যে ছিলেন আইপিএস অফিসার যশপ্রীত সিংহ। যাঁকে দেখে বিজেপি বিধায়করা ‘খলিস্তানি’ বলে মন্তব্য করেন বলে অভিযোগ। পুরোটাই ধরা পড়ে উপস্থিত সংবাদ মাধ্যমের ক্যামেরায়। যে ভিডিয়ো মুখ্যমন্ত্রীও শেয়ার করেছেন তাঁর এক্স হ্যান্ডলে। তাতে দেখা যাচ্ছে অগ্নিমিত্রার উদ্দেশে ওই আইপিএস অফিসার যশপ্রীত বলছেন, ‘‘আমি পাগড়ি পরেছি বলে আমি খলিস্তানি! আপনি আমার ধর্ম নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? আমি এর বিরুদ্ধে পদক্ষেপ করব।’’ এর জবাবে অগ্নিমিত্রাকে একবারও বলতে শোনা যায়নি যে তিনি এ কথা বলেননি। বরং তিনি সমানে বলে যান, ‘‘আপনি একজন পুলিশ অফিসার আপনি আপনার দায়িত্ব পালন করুন।’’ যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। পরে অগ্নিমিত্রা আনন্দবাজার অনলাইনকে বলেন, ‘‘আমি ওই পুলিশ অফিসারকে খলিস্তানি বলিনি।’’

এর প্রতিবাদে অগ্নিমিত্রার নিজের বিধানসভা কেন্দ্রের অন্তর্গত ‘বার্নপুর গুরুদ্বার প্রবন্ধক কমিটি’ বিধায়কের বাড়িতে শান্তিপূর্ণ ভাবে স্মারকলিপি প্রদান করা হবে বলে জানায়। এ বিষয়ে পুলিশ কমিশনারকে লিখিত ভাবেও জানিয়েছে সংগঠনটি।

খলিস্তানপন্থীরা হলেন একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনের সমর্থক। তাঁদের লক্ষ্য, পঞ্জাব ভেঙে একটি আলাদা রাষ্ট্র ‘খলিস্তান’ তৈরি করা। তবে পাগড়ি শুধু খলিস্তানিদের বেশ নয়। তা সর্বতো ভাবে দেশের সমস্ত শিখ ধর্মাবলম্বীরাই পরে থাকেন। পাগড়ি পরিহিত আইপিএস অফিসারেদের পশ্চিমবঙ্গে কাজ করা নতুন কিছু নয়। পরবর্তীতে তাঁদের কেউ কেউ রাজনীতিতেও এসেছেন। কিন্তু কি চাকরিরত অবস্থায়, কি রাজনীতিতে থাকাকালীন তাঁদের কেউ ‘খলিস্তানি’ বলেনি।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE