প্রতীকী ছবি
মে মাসে রেশন বিলি শুরুর দু’সপ্তাহের মধ্যেই সুষ্ঠু ভাবে জেলার প্রায় ৯৫ শতাংশ উপভোক্তা খাদ্যসামগ্রী পেয়েছেন, রাজ্যকে রিপোর্ট পাঠিয়েছিল পূর্ব বর্ধমান জেলা খাদ্য দফতর। সে জন্য রেশন ডিলারদের কাছে সরাসরি ‘মেসেজ’ মারফত রাজ্যের খাদ্যসচিব পারভেজ সিদ্দিকির অভিনন্দন-বার্তা এসে পৌঁছেছে। যে ভাবে খাদ্যসামগ্রী বিলির বন্দোবস্ত করা হয়েছে, সে ব্যবস্থা আগামী দিনেও চলবে বলে ওই বার্তায় আশা প্রকাশ করা হয়েছে, জানান ডিলারেরা।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, পূর্ব বর্ধমানে এক লক্ষ ৪৭ হাজার পরিবারের হাতে ৫৩,২৫,৩৫৭টি রেশন কার্ড রয়েছে। এ ছাড়া, চলতি মাস পর্যন্ত দু’লক্ষ ৫১ হাজার মানুষকে ‘ফুড কুপন’ দেওয়া হয়েছে। গত রবিবার থেকে ‘ফুড কুপন’ প্রাপকদের খাদ্যসামগ্রী দেওয়া শুরু করেছেন রেশন ডিলারেরা। এই ব্যবস্থার বাইরে থাকা ৯০ হাজার বাসিন্দাকে বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর থেকে ‘ত্রাণ’ বাবদ চাল দেওয়া হচ্ছে। জেলা খাদ্য নিয়ামক আবির বালি বলেন, ‘‘সুষ্ঠু ভাবে রেশন বিলির জন্য শুভেচ্ছা-বার্তা পাঠিয়েছেন খাদ্যসচিব।’’
রাজ্য সরকার ইতিমধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যাঁদের কাছে পুরনো কার্ড রয়েছে, তাঁদেরও বিশেষ ‘ফুড কুপন’ দিয়ে রেশন ব্যবস্থায় নিয়ে আসা হবে। প্রশাসন জানিয়েছে, সর্বশেষ রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলায় এ রকম প্রায় এক লক্ষ ৭২ হাজার কার্ড রয়েছে। তবে এই কার্ডে রেশন দেওয়ার প্রস্তুতি নিতে গিয়ে নানা ‘বেনিয়মের’ সম্ভাবনা ধরা পড়ছে বলে জেলা প্রশাসন সূত্রের দাবি। আধিকারিকেরা মনে করছেন, অনেক উপভোক্তার কাছে ‘ডিজিটাল রেশন কার্ড’ রয়েছে, অথচ, তিনি পুরনো কার্ড দেখিয়ে ফের খাদ্যসামগ্রী নিতে পারেন। আবার বিশেষ ত্রাণ পাওয়ার পরেও, পুরনো কার্ড দেখিয়ে রেশনের আবেদন করছেন কেউ-কেউ, তেমন অভিযোগও মিলেছে।
জেলাশাসক (পূর্ব বর্ধমান) বিজয় ভারতী বলেন, ‘‘সমস্ত আবেদন খুঁটিয়ে পরীক্ষা করার পরেই আবেদনকারীদের রেশন ব্যবস্থায় নিয়ে আসা হবে।’’ জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ‘সুষ্ঠু’ ভাবে রেশন ব্যবস্থা চললেও, মে মাসে কিছু জায়গায় বিক্ষিপ্ত গোলমাল ঘটেছে। দেরিতে দোকান খোলা, সময়ে রিপোর্ট জমা না দেওয়া, ‘ই-পিওএস’ যন্ত্রের ব্যবহার না করা বা খাদ্যসামগ্রী কম দেওয়ার মতো একাধিক অভিযোগ ডিলারদের বিরুদ্ধে জমা পড়ে। জেলা খাদ্য নিয়ামক বলেন, ‘‘এই মাসে ১৮ জন রেশন ডিলারকে শো-কজ় করা হয়েছে। কাটোয়া মহকুমার এক জনকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।’’
জেলা খাদ্য দফতরের দাবি, জেলায় রেশন দেওয়ার প্রক্রিয়া নিয়ে যে রাজ্যের খাদ্য ভবন খুশি, তা ডিলারদের কাছে পাঠানো বার্তাতেই পরিষ্কার। রেশন ডিলারেরা জানান, ওই বার্তায় খাদ্যসচিব জানিয়েছেন, ‘রেশন দোকানে সামাজিক দূরত্ব ও ‘ক্যাটিগরি’ভিত্তিক খাদ্যসামগ্রী পাওয়ার পরিমাণ সর্বসমক্ষে টাঙানোর ফলে মানুষের সুবিধা হয়েছে। আশা করব, এই ব্যবস্থা আগামী দিনেও চলবে’। ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল এমআর ডিলার্স অ্যাসোসিয়েশন’-এর জেলা সম্পাদক পরেশনাথ হাজরা বলেন, ‘‘এই বার্তা আমাদের আরও উৎসাহিত করবে। তবে এই সময়ে আমাদের জন্য ‘মাস্ক’-সহ অন্য সুরক্ষা-ব্যবস্থা করা হলে ভাল হত।’’
যদিও বিরোধী দলগুলি রেশন নিয়ে দুর্নীতির অভিযোগে সরব হয়েছে। সিপিএমের জেলা সম্পাদক অচিন্ত্য মল্লিকের অভিযোগ, ‘‘রেশন ব্যবস্থা শাসক দলের মদতে লুট হচ্ছে!’’ বিজেপির সাংগঠনিক জেলা (বর্ধমান সদর) সভাপতি সন্দীপ নন্দী দাবি করেন, ‘‘গরিব মানুষের চাল অন্য জায়গায় চলে যাচ্ছে, সেখানে এ ধরনের মেসেজ জনসাধারণের কাছে কতটা তাৎপর্যের, তা বোঝাই যাচ্ছে।’’
যদিও বিরোধীদের অভিযোগকে গুরুত্ব দিতে নারাজ তৃণমূলের নেতারা। জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ মেহেবুব মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘জেলা জুড়ে কোনও ক্ষোভ-বিক্ষোভ ছাড়াই সুষ্ঠু ভাবে রেশন পৌঁছে যাচ্ছে উপভোক্তাদের হাতে। সে জন্যই খাদ্যসচিব রেশন ডিলারদের উৎসাহিত করেছেন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy