অণ্ডালের খান্দরায়। নিজস্ব চিত্র
‘পাইলট প্রজেক্ট’ হিসেবে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু হল পশ্চিম বর্ধমানে। জেলা খাদ্য নিয়ামক সঞ্জীব হালদার জানিয়েছেন, পশ্চিম বর্ধমানের দশ শতাংশ এমআর ডিলারকে নিয়ে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। তবে বাড়ি-বাড়ি রেশন পৌঁছনোর খরচ অনেক বেশি হওয়ায় ইতিমধ্যেই ডিলারেরা কমিশন বৃদ্ধির দাবি জানিয়েছেন। তবে সরকারের এই প্রকল্পে খুশি বাসিন্দারা।
জেলা খাদ্য দফতর জানিয়েছে, গোটা জেলায় এ দিন ৫৯ জন রেশন ডিলার এই প্রকল্প চালু করেছেন। জেলায় কম-বেশি ছ’শো জন এমআর ডিলার রয়েছেন। তাঁরাও দ্রুত এই পরিষেবা দেওয়া শুরু করবেন বলে দাবি খাদ্য দফতরের কর্তাদের। রানিগঞ্জ, জামুড়িয়া, পাণ্ডবেশ্বরে ছ’টি করে আঠারোটি এলাকায় পরিষেবা মিলেছে। বারাবনির পুঁচরা পঞ্চায়েতের বেলডাঙা ও জামগ্রাম পঞ্চায়েতের খরাবর গ্রামেও প্রকল্পটি শুরু হয়েছে এ দিন। তা উপলক্ষে একটি কর্মসূচিতে যোগ দেন বিডিও (বারাবনি) সুরজিৎ ঘোষ এবং জেলা পরিষদের সদস্য অসিত সিংহ। খাদ্য দফতরের আধিকারিক রঞ্জন গুহ জানান, দুর্গাপুর পুর-এলাকায় এ দিন সাতটি জায়গায় প্রকল্পের সুবিধা দেওয়া গিয়েছে। দুর্গাপুরের মেয়র পারিষদ (সড়ক ও খাদ্য) অমিতাভ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “নভেম্বর থেকে সব জায়গায় দুয়ারে রেশন প্রকল্প চালু হয়ে যাবে।” অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) সঞ্জয় পাল জানান, এ দিন তিন হাজার জন উপভোক্তাকে রেশনের সামগ্রী পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে।
তবে প্রকল্পের কাজ শুরুর প্রথম দিনেই ডিলারদের সংগঠনের তরফে সংবাদমাধ্যমের সামনে নানা অসন্তোষ প্রকাশ করা হয়েছে। ‘পশ্চিম বর্ধমান জেলা এমআর ডিলার অ্যাসোসিয়েশন’ সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি-বাড়ি রেশন পৌঁছতে অন্তত সাড়ে সাত লক্ষ টাকা দামের একটি গাড়ি থাকা দরকার। গাড়ির তেল, চালক ও খালাসির জন্য খরচ প্রয়োজন। বাড়ি-বাড়ি রেশন পৌঁছতে এক বা দু’জন মুটে প্রয়োজন। তাঁরা জানান, এখন যা কমিশন মেলে, সে টাকায় এতটা খরচ সামাল দেওয়া মুশকিল।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক তপু তিওয়ারি বলেন, “আমরা সরকারের এই প্রকল্পকে স্বাগত জানাচ্ছি। তবে আর্থিক ভাবে দুর্বল ডিলারদের খরচ সামাল দিয়ে বাড়ি-বাড়ি রেশন পৌঁছে দেওয়াটা সম্ভব নয়। কুইন্টাল প্রতি তিনশো থেকে চারশো টাকা কমিশন দেওয়া হলে, আমাদের পক্ষে নিশ্চিন্তে এই পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে।” পাশাপাশি, অঙ্গদপুরের রেশন ডিলার সৌমেনরঞ্জন যশ জানান, দুর্গাপুরের রাতুড়িয়া এলাকায় প্রথম দু’দিন, তার পরে ধাপে-ধাপে হেড কোয়ার্টার, তেঁতুলতলা কলোনি, অঙ্গদপুর-সহ বিভিন্ন জায়গায় রেশন পৌঁছে দেওয়া হবে। কমিশন বৃদ্ধির পাশাপাশি, তিনি দাবি করেছেন, গাড়ি ভাড়া এবং পণ্য প্যাকেজিংয়ের জন্য কত টাকা মিলবে, তা এখনও
পরিষ্কার নয়।
তবে ডিলারদের সংগঠনের এই দাবি প্রসঙ্গে জেলা খাদ্য নিয়ামক সঞ্জীব হালদার বলেন, “সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, ডিলারেরা তিন বা চার চাকার গাড়ি কিনবেন। সরকারের তরফে এক লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে।” এ দিকে, আসানসোল পুরসভাও বুধবার থেকে ‘দুয়ারে রেশন’ প্রকল্প চালু করার জন্য ব্যবস্থা নিয়েছে। পুর-প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় জানান, এ দিন থেকে আসানসোল, কুলটি ও বার্নপুরের মোট ছ’টি দোকানে পাইলট প্রজেক্ট হিসেবে প্রকল্পের কাজ চালু করা হয়েছে।
দুর্গাপুরের ৩২ নম্বর ওয়ার্ডের নব-ওয়ারিয়ার বাউড়িপাড়ায় এ দিন গিয়ে দেখা গিয়েছে, রেশন ডিলার গাড়ি করে রেশন সামগ্রী নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন পাড়ায়। স্থানীয় বাসিন্দা উদয়কুমার সুকুল বলেন, “এটা বেশ ভাল উদ্যোগ। আমাদের মতো প্রবীণদের খুবই সুবিধা হল।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy