বিক্ষোভে সিএলডব্লিউ-এর শ্রমিকেরা। সোমবার চিত্তরঞ্জনে। নিজস্ব চিত্র
পদ ‘বিলোপের’ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে সোমবার বিক্ষোভ দেখালেন পশ্চিম বর্ধমানের চিত্তরঞ্জন লোকোমোটিভ ওয়ার্কস (সিএলডব্লিউ)-এর শ্রমিক-কর্মীরা। সিটু ও আইএনটিইউসি-র নেতৃত্বে সংস্থার ‘স্টিল ফাউন্ড্রি’ বিভাগের সামনে সকাল ৬টা থেকে বিক্ষোভ-অবস্থান শুরু হয়। এর জেরে কারখানার উৎপাদন ব্যাহত হয়। পরে বিক্ষোভকারীদের তরফে কারখানা কর্তৃপক্ষকে একটি প্রতিবাদপত্রও দেওয়া হয়। দুপুর ১২টা নাগাদ বিক্ষোভ-অবস্থান ওঠে। এ বিষয়ে মন্তব্য করতে চাননি কারখানার জনসংযোগ আধিকারিক মন্তার সিংহ।
সিএলডব্লিউ সূত্রে জানা গিয়েছে, ‘স্টিল ফাউন্ড্রি’ বিভাগে বর্তমানে ৬৩৯ জন শ্রমিক-কর্মী আছেন। এই বিভাগের শ্রমিক-কর্মীদের অভিযোগ, ৩১৮টি পদ বিলোপ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। ফলে, কর্মী সংকোচনের পাশাপাশি, উৎপাদনও মার খাবে। আগামী দিনে এলাকার বেকার যুবকেরা কাজ পাবেন না।
প্রতিবাদে এ দিন সকাল থেকে ‘স্টিল ফাউন্ড্রি’ বিভাগের সামনে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন কয়েকশো শ্রমিক-কর্মী। সিটু নেতা রাজীব গুপ্তের দাবি, ‘‘শনিবারই আমরা গোপন সূত্রে বিষয়টি জানতে পেরেছি। তাই সোমবার থেকে প্রতিবাদে নামা হয়েছে।’’ একই মন্তব্য আইএনটিইউসি নেতা নেপাল চক্রবর্তীরও। তিনি বলেন, ‘‘কর্মী সংকোচন করে কর্তৃপক্ষ কারখানার উৎপাদন ব্যাহত করতে চাইছেন। তাই আমরা বিরোধিতা শুরু করেছি।’’
দুই শ্রমিক নেতারই দাবি, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ‘অপমৃত্যু’ হবে। কারণ, পদের অবলুপ্তি হলে কর্মী সঙ্কোচন হবে। আর কোনও বেকার যুবক কাজ পাবেন না। সেই সঙ্গে এই পদগুলিতে বর্তমানে কর্মরত শ্রমিক-কর্মীদের পদোন্নতি হবে না। এ ছাড়া, অল্প সংখ্যক শ্রমিক-কর্মীদের দিয়ে বার্ষিক লক্ষ্যপূরণ সম্ভব হবে না। সে ক্ষেত্রে কারখানাকে অলাভজনক দেখানো সহজ হবে এবং পরবর্তীতে জলের দরে সংস্থাটিকে বেসরকারি হাতে বিক্রি করে দেওয়া যাবে।
সংস্থা সূত্রের খবর, এ দিন টানা প্রায় ছ’ঘণ্টা বিক্ষোভ চলে। পরে কারখানা কর্তৃপক্ষের আহ্বানে দুপুর ১২টা নাগাদ সিটু ও আইএনটিইউসি-র একটি প্রতিনিধিদল সংস্থার প্রিন্সিপ্যাল চিফ মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার ধর্মেন্দ্র কুমারের সঙ্গে দেখা করে। সেই সময় প্রতিনিধিদল তাঁর হাতে দাবিপত্র তুলে দেয়। আধিকারিকের আশ্বাসে বিক্ষোভ তুলে নেওয়া হয় বলে দাবি প্রতিনিধি দলের সদস্যদের।
এ বিষয়ে কারখানার এক আধিকারিক জানিয়েছেন, এটি রেল-বোর্ডের সিদ্ধান্ত। শুধু চিত্তরঞ্জন কারখানাতেই নয়, রেলের সব স্তরেই ‘অপ্রয়োজনীয়’ কিছু পদ বিলোপ করা হচ্ছে। এখানেও তা করা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy