প্রতীকী ছবি।
পরপর দু’দিনে দুই ঠিকা শ্রমিকের মৃত্যু হল দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি কারখানায়। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টা নাগাদ কর্মরত অবস্থায় ‘শর্ট সার্কিট’-এর জেরে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মৃত্যু হয় সমীর ঘোষ (৪৩) নামে এক ঠিকা শ্রমিকের। তাঁর বাড়ি নমো সগড়ভাঙায়। এ দিনের দুর্ঘটনাটি ঘটে, কারখানার নমো সগড়ভাঙার চার নম্বর ইউনিটে।
পুলিশ ও কারখানা সূত্রে জানা গিয়েছে, এ দিন সকালের ‘শিফটে’ সমীরবাবু ‘কুলিং টাওয়ার’-এ উঠে কাজ করছিলেন। শ্রমিকদের দাবি, সেই সময়ে ‘কুলিং টাওয়ার’-এর বেল্টে গন্ডগোল হয়। এর জেরে হঠাৎ ‘শর্ট সার্কিট’ হয়ে যায়। জখম হয়ে তিনি নীচে পড়ে যান। সহকর্মীরা তাঁকে উদ্ধার করে ইএসআই হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। কারখানার শ্রমিকদের একাংশের অভিযোগ, ‘‘কারখানা কর্তৃপক্ষকে ঘটনার কথা সঙ্গে সঙ্গে জানানো হলেও অ্যাম্বুল্যান্স আসতে দেরি হয়। দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে গেলে হয়তো পরিস্থিতি অন্যরকম হতে পারত।’’ পুলিশ দেহ ময়না-তদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা করে। ময়না-তদন্তের পরে ক্ষতিপূরণের দাবিতে বিকেলে কারখানার প্রশাসনিক ভবনের সামনে দেহ রেখে বিক্ষোভ দেখান সহকর্মীরা। পুলিশ আসে। কারখানা কর্তৃপক্ষ আশ্বাস দেন, কারখানার নিয়ম অনুযায়ী আর্থিক ক্ষতিপূরণের বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। এর পরেই বিক্ষোভ ওঠে।
এই কারখানার বাঁশকোপা শিল্পতালুকের তিন নম্বর ইউনিটে সোমবার ভোর পৌনে ৫টা নাগাদ ঠিকা শ্রমিক ধর্মেন্দ্র যাদব (৪৩) অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তাঁর মৃত্যু হয়। শ্রমিকদের দাবি, ‘ব্লাস্ট ফার্নেস’-এর গ্যাসের পাইপলাইন থেকে বিষাক্ত গ্যাস ‘লিক’ করে এই দুর্ঘটনা ঘটেছে। কারখানা কর্তৃপক্ষ দাবি করেন, গ্যাস ‘লিক’ হলে অন্য শ্রমিকদের উপরেও তার প্রভাব পড়ত। পুলিশ জানায়, ময়না-তদন্তের রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে। মৃতের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণের দাবি জানান শ্রমিকেরা। কর্তৃপক্ষ সে দাবি মেনে নেন।
একই কারখানায় দু’দিনে দুই শ্রমিকের মৃত্যু হওয়ায় কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ উঠেছে। উঠেছে শ্রমিক-নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন। মঙ্গলবারের দুর্ঘটনার খবর পেয়ে হাসপাতালে যান আইএনটিটিইউসি’র পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা দুর্গাপুর পশ্চিম কেন্দ্রের বিধায়ক বিশ্বনাথ পাড়িয়াল। তিনি বলেন, ‘‘মৃত ঠিকা শ্রমিকের পরিবারকে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে হবে। না হলে ,বৃহত্তর আন্দোলন করা হবে।’’ হাসপাতালে আসা কারখানার এক আধিকারিক এ দিনের দুর্ঘটনা প্রসঙ্গে অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে অলোক পাণ্ডে নামে কারখানার এক আধিকারিক জানান, কী ভাবে দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা দেখা হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy