শুরু হয়েছে দুর্বল লকগেট পাল্টানোর কাজ। —নিজস্ব চিত্র।
ব্যারাজের উত্তর দিক থেকে বেরনো বর্ধমান সেচখালে মোট ৮টি লকগেট রয়েছে। তার মধ্যে দু’টি বদলানোর কাজ শুরু করেছে সেচ দফতর। বাকিগুলিও ধাপে ধাপে বদলে ফেলা হবে বলে জানিয়েছেন সেচ দফতরের এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (মেকানিক্যাল) দীপঙ্কর পাল।
সেচ দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৯৫৫ সালে ব্যারাজ গড়ে তোলা হয় দুর্গাপুরে। ব্যারাজের বাঁ দিক থেকে বেরিয়েছে বর্ধমান সেচখাল। ১৯৫৮ সালে চালু হয় সেটি। প্রথমে ব্যারাজ থেকে জল এসে সেচখালের শুরুতে থাকা জলাধারে জমা হয়। এর পরে ছ’টি লকগেটের মাধ্যমে সেই জল প্রয়োজন অনুযায়ী সেচের জন্য সরবরাহ করা হয়। সেচখালের মোট দৈর্ঘ্য প্রায় ১৩৬ কিলোমিটার। এই সেচখাল থেকে শাখা-প্রশাখার মাধ্যমে পশ্চিম বর্ধমান, পূর্ব বর্ধমান, হুগলি ও হাওড়ার বিস্তীর্ণ অংশে সেচের জল যায়। সেচখালটি শেষে ত্রিবেণীর কাছে কুন্তি নদীতে গিয়ে মিশেছে। শুরুর দিকে খরিফ ও রবি চাষে সেচের জন্য চালু হয়েছিল। পরে বোরো চাষের জন্যও জল সরবরাহ শুরু হয়। এই সেচখাল দিয়ে এক সময়ে জলপথে দুর্গাপুর থেকে কয়লা ও শিল্প-সামগ্রী কলকাতায় সস্তায় পরিবহণের কথাও ভাবা হয়েছিল। ১৯৬৩ সাল থেকে ১৯৭২ সাল পর্যন্ত সরকারি ভাবে মাঝে মাঝে পণ্য পরিবহণ করা হত বলেও জানা যায়।
মূল ব্যারাজে পর পর দু’বার লকগেট বিপর্যয়ের পরে, লকগেট বদলানোর কাজ করেছে সেচ দফতর। ব্যারাজ থেকে যে লকগেটগুলি দিয়ে জল বর্ধমান সেচখালের শুরুতে থাকা জলাধারে পৌঁছয়, সেগুলি সেচখাল তৈরির সময়ে গড়ে তোলা হয়েছিল। মাঝে মধ্যে অল্পস্বল্প রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়েছে। কিন্তু এত দিনে তা আর বদলানো হয়নি। সম্প্রতি সেচ দফতর সেই প্রক্রিয়া শুরু করেছে। দফতরের একটি সূত্রে জানা গিয়েছে, লকগেটগুলি ঠিকমতো ওঠানামা করে না। ক্ষয় ধরেছে। ফলে, জলের চাপে ভেঙে পড়া বা বিকল হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে। সেক্ষেত্রে সেচখালের গোড়ায় থাকা জলাধারে বিপুল পরিমাণে জল ঢুকে তা প্লাবিত করতে পারে বিস্তীর্ণ এলাকা। তাই ধাপে ধাপে ৮টি লেকগেটই বদলে ফেলার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে প্রথমে বীরভানপুরের দিক থেকে ২ ও ৬ নম্বর লকগেটটি বদলে ফেলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। সেগুলির অবস্থা বেশি খারাপ বলে জানা গিয়েছে।
এগজ়িকিউটিভ ইঞ্জিনিয়ার (মেকানিক্যাল) দীপঙ্কর জানান, দু’টি লকগেটই পুরো বদলে ফেলা হবে। ধাপে ধাপে বাকিগুলিও বদলানো হবে। তিনি বলেন, ‘‘ব্যারাজ গড়ে ওঠার সময় থেকে লকগেটগুলি রয়েছে। ভবিষ্যতে বড় সমস্যা হতে পারে। তাই প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy