প্রতীকী ছবি।
রেশনের মাধ্যমে একটি বড় অংশের মানুষের কাছে খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়ায় উদ্যোগী হয়েছে সরকার। কিন্তু সেই রেশন বিলি নিয়ে নানা অভিযোগ উঠছে পূর্ব বর্ধমানের নানা এলাকায়।
গোটা প্রক্রিয়া ঠিক ভাবে চলছে কি না, তা দেখার দায়িত্বে যাঁরা, খাদ্য দফতরের সেই পরিদর্শকেরা কার্যত নিধিরাম সর্দার। পরিদর্শকদের একাংশের দাবি, অনেক এলাকায় পরিদর্শনে যেতে অনেকটা রাস্তা হাঁটতে হচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে নিতে হচ্ছে স্থানীয় মানুষজনের সাইকেল বা মোটরবাইকের সাহায্য। পরিদর্শকদের সমস্যার কথা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে বলে জেলা খাদ্য দফতরের আশ্বাস।
নিয়মিত রেশন দোকান পরিদর্শন, ডিলারের বরাদ্দ ঠিক করা, চালকলগুলি পরিদর্শন, রেশনের খাদ্যসামগ্রী উপভোক্তারা ঠিকমতো পাচ্ছেন কি না— এ সব খাদ্য পরিদর্শকদের দেখার কথা। এ ছাড়া, রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে তদন্তও তাঁদের করতে হয়। বিনামূল্যে রেশনে খাদ্যসামগ্রী দেওয়া শুরু হওয়ার পরে, তাঁদের দায়িত্ব আরও বেড়েছে। অনলাইনে ফর্মের আবেদন খতিয়ে দেখা, সামাজিক দূরত্ব মানা হচ্ছে কি না, রেশন বিলি নিয়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ সামাল দেওয়া যোগ হয়েছে দায়িত্বের মধ্যে। এর মধ্যে আবার রেশন-ব্যবস্থার বাইরে কত জন রয়েছেন, সে তালিকাও তাঁদের করতে হবে জেলা প্রশাসন জানিয়েছে। সেই সঙ্গে ব্লক ও জেলা প্রশাসনের নানা বৈঠকে যোগ দিতে হচ্ছে।
জেলা প্রশাসনের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী, ব্লক অফিসের একটি ঘরে খাদ্য পরিদর্শকের দফতর রয়েছে। এক-একটি ব্লকে আট-ন’জন করে পরিদর্শক থাকার কথা। কিন্তু জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, বাস্তবে রয়েছেন এক-দু’জন করে ওই পদে রয়েছেন। বেশ কিছু ব্লকে আবার পরিদর্শকই নেই।
বর্ধমান দক্ষিণ মহকুমার এক খাদ্য পরিদর্শক বলেন, ‘‘হেঁটে পরিদর্শন করতে হচ্ছে। কারও ইচ্ছে হলে সাইকেল দিচ্ছে। কারও মোটরবাইক পেলে ডিস্ট্রিবিউটরের কাছ থেকে খাদ্যসামগ্রী বুঝে নিতে যাচ্ছি। পরিকাঠামোহীন অবস্থায় কাজ করতে হচ্ছে। দিন-রাত এক করেও কাজ শেষ হচ্ছে না।’’
জেলা ও মহকুমা খাদ্য দফতর মিলিয়ে মুখ্য পরিদর্শক থাকার কথা ২১ জনের। সেখানে রয়েছেন মাত্র ছ’জন। ১২১ জন পরিদর্শকের মধ্যে রয়েছেন ৪০ জন। অবর পরিদর্শক পদে ১০৮ জনের বদলে রয়েছেন ১৫ জন। বর্ধমান সদর, কাটোয়া ও কালনা মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দফতরে কাছে মাত্র এক জন অবর পরিদর্শক রয়েছেন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, জেলা খাদ্য নিয়ামক দফতরে ৩৬৮ জন কর্মী-আধিকারিকের পদ রয়েছে। তার মধ্যে ফাঁকা রয়েছে ২৬৫টি। ওই তিন মহকুমা খাদ্য নিয়ামক দফতরে ২১৪ জন কর্মী-আধিকারিকের প্রয়োজন। রয়েছেন ৭২ জন। জেলা খাদ্য দফতর সূত্রে জানা যায়, এক-এক জন খাদ্য পরিদর্শকের গড়ে ৫৫টি রেশন দোকান সামলানোর কথা। সেখানে এখন ১৬০টি রেশন দোকানের উপরে ‘নজরদারি’ করতে হচ্ছে।
এক পরিদর্শকের কথায়, ‘‘বছরের অন্য সময় এক-এক দিন একটি করে ব্লক ধরে পরিদর্শন করা হয়। দূরে গেলে ব্লক প্রশাসনের কাছ থেকে গাড়ি মেলে। এখন সবাইকে বেরোতে হচ্ছে। গাড়ি মেলা ভার। কাছাকাছি এলাকায় হেঁটে বা সাইকেলে যেতে হচ্ছে। দূরের গ্রামে গেলে মোটরবাইকের ব্যবস্থা করে নিতে হচ্ছে। নিজের ব্লকেই কাজ সেরে ওঠা যাচ্ছে না, তার মধ্যে অন্য ব্লকেও যতটা সম্ভব কাজ করছি।’’
জেলা খাদ্য নিয়ামক আবির বালি শুধু বলেন, “খাদ্য পরিদর্শকের সঙ্কটের কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy