রায়নার স্কুলে। নিজস্ব চিত্র।
প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে কিছু শিক্ষকের ‘দ্বন্দ্বে’ স্কুলের পঠন-পাঠন গত এক বছর ধরে কার্যত শিকেয় উঠেছে বলে অভিযোগ। বৃহস্পতিবার কখন স্কুল হবে, তা নিয়ে ‘মতানৈক্যের’ জেরে রায়নার স্বামী ভোলানাথ বিদ্যায়তনের অনেক শিক্ষক ও পড়ুয়া স্কুলেই ঢুকতে পারলেন না। তাঁদের দাবি, সকালে স্কুল হবে, এমন কোনও নির্দেশ স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফে দেওয়া হয়নি। দিনের পর দিন প্রধান শিক্ষক স্কুলে অনুপস্থিত থাকায় তাঁরা এ দিন দুপুরেই স্কুল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। কিন্তু অন্য দিনের মতো এ দিন নির্ধারিত সময়ে এসে তাঁরা জানতে পারেন, সকালেই স্কুল হয়ে গিয়েছে। সে কারণে সকাল সাড়ে ১০টার আগেই স্কুলের গেট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে।
প্রধান শিক্ষক কোরবান আলি ও পরিচালন সমিতির সভাপতি গোপাল মণ্ডল একটি বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছেন, স্কুল শিক্ষা দফতরের নির্দেশ অনুযায়ী বৃহস্পতিবার থেকে সকালে স্কুল শুরু হবে। সেই মতো এ দিন সকালেই স্কুল শুরু হয়। উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের এই স্কুলে কম-বেশি ১৩০০ জন পড়ুয়া রয়েছে। এ দিন সব মিলিয়ে একশোর মতো পড়ুয়া স্কুলে হাজির হয়েছিল। আর ৪৩ জন শিক্ষকের মধ্যে হাজির হয়েছিলেন মাত্র ৩০ জন। ‘বিক্ষুব্ধ’ শিক্ষকদের দাবি, স্কুলের তথ্যই বলছে, অধিকাংশ শিক্ষক ও পড়ুয়ারা জানতেন না যে, সকালে স্কুল হবে। সে কারণেই অন্য দিনের মতো তাঁরা সাড়ে ১০টার পরে স্কুলের সামনে জড়ো হয়েছিলেন। কিন্তু গেট বন্ধ থাকায় তাঁরা ফিরে যান।
স্কুলের শিক্ষক সুব্রত ঘোষ, বিকাশচন্দ্র সিংহ-দের দাবি, “গত এক বছর ধরে স্কুলে অচলাবস্থা চলছে। অ্যাকাডেমিক কাউন্সিল-এর রুটিন না মেনে প্রধান শিক্ষক নিজের মতো রুটিন তৈরি করেছেন। ফলে, স্কুলে দু’টি রুটিনে ক্লাস হচ্ছে! প্রধান শিক্ষক মাসের পর মাস স্কুল খোলা থাকাকালীন বিদ্যালয়ে আসেন না। আসেন শনিবার দুপুরে আর রবিবার। অদ্ভুত অবস্থা। বৃহস্পতিবার তার জেরেই পড়ুয়ারা স্কুলের গেট থেকে ফিরে গেল।”
প্রধান শিক্ষকের দাবি, “সুরক্ষা আর নিরাপত্তার অভাব বোধ করায় তিনি স্কুলে যেতে পারছেন না। কয়েক জন শিক্ষক স্কুলে গুন্ডামি চালাচ্ছেন। সে কারণে বাড়িতে বসেই স্কুল পরিচালনা করতে বাধ্য হচ্ছি। প্রশাসন ও শিক্ষা দফতরকে জানানো আছে।” এ দিনের ঘটনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “ইচ্ছা করেই ওই সব শিক্ষকেরা সকালে স্কুলে আসেননি। সে কারণে চারটি পিরিয়ড হওয়ার পরে স্কুল ছুটি দিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছি। ছুটি ঘোষণা হলে সবাই জানতে পারেন, আর স্কুল খোলার সময় জানা যায় না!”
অতনু কোলে, সপ্তম পোড়েল, রূপান্নেসা খাতুনদের মতো অনেক পড়ুয়াই এ দিন স্কুলের গেট থেকে ফিরে যায়। তাদের কথায়, “কাছে বাড়ি হলেও সকালে স্কুল হবে, তা জানতে পারিনি।” রায়না ছাড়াও আশেপাশের বেশ কয়েকটি গ্রামের পড়ুয়ারা এই স্কুলে পড়তে আসে। সেখানে এক দিন অপেক্ষা করে সকালে স্কুল শুরুর সিদ্ধান্ত নেওয়া যেত না? প্রশ্নের সদুত্তর মেলেনি স্কুল কর্তৃপক্ষের থেকে। তবে ‘বিক্ষুব্ধ’ শিক্ষকেরা জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের নির্দেশ মেনে আজ, শুক্রবার থেকে তাঁরা সকালেই স্কুলে আসবেন। রায়নার ওই চক্রের স্কুল পরিদর্শক শ্রাবন্তী চক্রবর্তী বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে ওই স্কুলে সমস্যা চলছে। বৃহস্পতিবারের ঘটনা জেলা কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy