মেমারিতে আবাস প্রকল্পের তদন্তে কেন্দ্রীয় দল। নিজস্ব চিত্র
পরিদর্শনের প্রথম দিনেই সমীক্ষা ঠিক মতো হয়েছে কি না, সেই প্রশ্ন তুললেন কেন্দ্রের অনুসন্ধান দলের সদস্যেরা। তার সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রথম পর্যায়ের (আবাস সফট) টাকা পাওয়ার পরেও বাড়ি তৈরি কেন শেষ হয়নি, সেই প্রশ্নও তোলেন তাঁরা। বুধবার দিনভর আবাস প্রকল্পের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে মেমারি ২ ব্লকের বোহার ১ পঞ্চায়েতের বেশ কয়েকটি গ্রামে ঘোরে ওই দলটি। সঙ্গে ছিলেন অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কাজল রায়, জেলা পরিষদের উপ-সচিব মৃণ্ময় মণ্ডল, বিডিও (মেমারি ২) সৈকত মাঝিরা। অনুসন্ধান দলের সদস্যেরা অবশ্য তদন্ত চলাকালীন কোনও মন্তব্য করবেন না বলে জানান।
এ দিন বেলা সওয়া ১০টা নাগাদ বর্ধমান থেকে অনুসন্ধান দলটি পাহাড়হাটিতে মেমারি ২ ব্লক দফতরে হাজির হন। ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে বৈঠক করার পরে বোহার ১ পঞ্চায়েতের বিষ্ণুপুর গ্রামে যান তাঁরা। সেখানে এক জন উপভোক্তার বাড়ির খোঁজ করেন তাঁরা। কিন্তু ওই নামে কোনও উপভোক্তা সেখানে থাকেন না বলে প্রশাসনের কর্তাদের জানান আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীরা। রাস্তার মাঝেই ব্লকের আধিকারিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন ওই দলের সদস্যেরা। এরপরে সোঁতলা গ্রামে দিলীপ মুখোপাধ্যায়ের বাড়ি যান তাঁরা। তাঁর নাম তালিকা থেকে কেন বাদ গিয়েছে, প্রশাসনের কর্তাদের কাছে তার ব্যাখা চায় অনুসন্ধান দল। জেলা প্রশাসনের কর্তারা ব্যাখ্যা দিলেও তাতে সন্তুষ্ট হননি তাঁরা। ওই দলের সদস্যেরা জানান, বাতিলের কারণ হিসেবে যা লেখা রয়েছে, আর বাস্তবে যা উঠে আসছে, তা মিলছে না।
ওই গ্রামেরই সেচখালের ধারে থাকা মঞ্জুরি মাণ্ডির মাটির বাড়িতে যায় দলটি। মঞ্জুরির নামও বাতিলের খাতায় রয়েছে। কারণ হিসেবে লেখা রয়েছে, মঞ্জুরির পরিবারের মাসিক আয় ১০ হাজার টাকা। বাড়ির অবস্থা দেখে অনুসন্ধান দলের সন্দেহ হয়। মঞ্জুরির মা ফুলমনি হাঁসদা তাঁদের জানান, মাসে বড়জোর দু’হাজার টাকা আয় হয় তাঁদের। এডিএম ও বিডিও-র সামনেই সমীক্ষা নিয়ে ক্ষোভ জানান তাঁরা। দলের সদস্যেরা বলেন, ‘‘কারা এই সমীক্ষা করেছেন, তাঁদের সঙ্গে আমরা সরাসরি কথা বলব।’’ বিকেলে বোহার পঞ্চায়েত অফিসে আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে কথা বলেন তাঁরা। ওই পঞ্চায়েতের উপপ্রধান হাসমত মোল্লার দাবি, ‘‘মঞ্জুরি মান্ডির নিজের জমি নেই। সেই কারণেই চূড়ান্ত তালিকা থেকে নাম বাদ গিয়েছে।’’
পঞ্চায়েত দফতর থেকে ফেরার পথে কয়েকজন স্থানীয় বাসিন্দা আবাস প্রকল্পে বাড়ি পাওয়ার জন্য ওই দলের সদস্যদের কাছে আর্জি জানান। চূড়ান্ত তালিকায় নাম বাদ যাওয়া, বাড়ি না গিয়েই সমীক্ষা করা হয়েছে বলেও অভিযোগ করেন কয়েকজন। এডিএম তাঁদের জেলা পরিষদের দফতরে দেখা করতে বলেন।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার প্রথম পর্যায়ের অন্তর্গত বেশ কয়েকটি বাড়িও ঘুরে দেখে দলটি। বিষ্ণুপুর গ্রামের শম্ভু ঘোষ প্রায় ছ’মাস আগে শেষ কিস্তির টাকা পেয়েছেন। তার পরেও বাড়ির কাজ শেষ হয়নি। অথচ পোর্টালে বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে বলে জানানো হয়েছে। দলের সদস্যরা বলেন, ‘‘যাঁদের দরকার তাঁরা বাড়ি পাচ্ছেন না। আর যাঁরা পেয়েছেন তাঁরা বাড়ি করছেন না!’’ শম্ভু তাঁদের জানান, চিকিৎসার জন্য সময়ে বাড়ি করতে পারেননি তিনি। তাঁকে মে মাসের মধ্যে বাড়ি শেষ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। না হলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy