তালিকা বাছাইয়ের কাজ চলছে বর্ধমানে। প্রতীকী চিত্র।
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মূল তালিকায় থাকা নামের ২৫ শতাংশই ‘বেনোজল’। এমনই ধারণা জেলা প্রশাসনের আধিকারিকদের একাংশের। বুধবার চূড়ান্ত তালিকা তৈরির লক্ষ্যে আবাস-সমীক্ষার নথি খতিয়ে দেখা শুরু হয়েছে। চূড়ান্ত অনুমোদনের জন্য অতিরিক্ত জেলাশাসক (জেলা পরিষদ) কাজল রায়, জেলা পরিষদের উপ-সচিব মৃণ্ময় মণ্ডল ও বিদ্যুৎ কর্মাধ্যক্ষ জহর বাগদিকে নিয়ে ‘অ্যাপেলেট কমিটি’ গড়া হয়েছে। বৃহস্পতিবার দুপুরের খবর, জেলার ১৮৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ১০৮টির উপভোক্তার তালিকা অনুমোদিত হয়েছে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, একেবারে শুরুতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (আবাস প্লাস) তালিকায় ২,২৬,৮৯০ জনের নাম ছিল। গত কয়েক বছর ধরে নানা প্রক্রিয়ায় ২১,৩০২ জনের নাম বাদ পড়ে। পরে, বিভিন্ন স্তরে পরীক্ষা করে ব্লকগুলি সব মিলিয়ে ২৫ হাজার উপভোক্তার নাম বাদ দেয়। এক আধিকারিক জানান, ব্লক প্রশাসনের তালিকার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট থানার ওসি বা আইসি’দের পাঠানো তালিকার ‘সামঞ্জস্য’ থাকছে না। পুলিশের তালিকায় ‘যোগ্য’ উপভোক্তার সংখ্যা তুলনামূলক কম। সে কারণে ব্লক ও থানাকে যৌথ সমীক্ষা করে রিপোর্ট দিতে বলা হয়েছে। প্রশাসনের একাংশের অনুমান, আরও ১২-১৫ হাজার উপভোক্তার নাম বাদ যেতে পারে। সমীক্ষা-রিপোর্ট যাচাই করে আধিকারিকদের একাংশের ধারণা, মূল তালিকা থেকে ২৫-৩০ শতাংশ উপভোক্তার নাম বাদ পড়তে পারে।
বেনোজলের পরিমাণ এত বেশি হওয়ার কারণ?
আধিকারিকদের একাংশ জানাচ্ছেন, ২০১৭-র সমীক্ষার ভিত্তিতে উপভোক্তাদের প্রাথমিক তালিকা তৈরি হয়। তার পরে, পাঁচ বছর কেটে গিয়েছে। অনেকে পাকা বাড়ি করেছেন। আবার, সরকারি নির্দেশিকা অনুযায়ী, পরিবারের কেউ সরকারি অনুদানে বাড়ি করলে, মোটরবাইক- ট্রাক্টর থাকলে, কিংবা কেসিসি-তে ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেওয়ার সামর্থ্য থাকলে সংশ্লিষ্ট আবেদনকারী আবাস যোজনার বাড়ি পাবেন না। এ ধরনের ১৫-১৭ দফা নিয়মের ‘ফাঁদে’ পড়ে অনেকের নাম তালিকা থেকে বাদ পড়ছে। এ ছাড়া, শাসক দলের অনেক পঞ্চায়েত প্রতিনিধি এবং ঘনিষ্ঠেরা বাড়ি না নেওয়ার কথা প্রশাসনকে জানিয়েছেন।
জেলা প্রশাসনের এক আধিকারিকের দাবি, “আগামী বুধবারের মধ্যে রাজ্যের কাছে উপভোক্তাদের নামের তালিকা পাঠাতে হবে। আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সমীক্ষা শেষে, গ্রামসভা অনুমোদিত তালিকা জেলায় পাঠানো হয়েছে। পুলিশও সমীক্ষা করে পঞ্চায়েত ধরে রিপোর্ট দিয়েছে। ওই দু’টি রিপোর্টের মধ্যে সামঞ্জস্য না থাকায় যৌথ কমিটি করে ফের সমীক্ষা করতে বলা হয়েছে।’’
প্রশাসনের দাবি, নাম পোর্টালে না থাকার কারণে জেলায় ২১৫টি পঞ্চায়েতের মধ্যে ৩০টির উপভোক্তাদের আপাতত আবাস-প্রকল্পে ‘বঞ্চিত’ থাকতে হচ্ছে। বাকি ১৮৫টি পঞ্চায়েতের চূড়ান্ত তালিকা তৈরি হচ্ছে।
পাঁচ বছর আগে গ্রাম স্তরে সমীক্ষা করেছিল ‘ভিআরপি’ বা ‘গ্রামসম্পদ কর্মী’রা। এ বার আশা-অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের যুক্ত করা হয়েছে। সমীক্ষা-পর্বে গ্রামে গিয়েছেন বিডিও, এসডিও, অতিরিক্ত জেলাশাসক ও জেলাশাসকরা। তেমনই আইসি, ওসি, এসডিপিও, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং পুলিশ সুপারও সমীক্ষা করেছেন। আধিকারিকদের একাংশের দাবি, “নিবিড় সমীক্ষা হয়েছে। বাড়ি পাওয়ার উপযুক্ত নন, এমন কেউ যাতে তালিকায় না থাকেন, তা নিশ্চিত করা হচ্ছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy