Advertisement
০৩ জানুয়ারি ২০২৫
WB Panchayat Election 2023

তদন্তের ফলও অজানা, আক্ষেপ কেশ পরিবারের

১৯৮৫ সালের ২ জুলাই ভোরে ওই পরিবারের উপরে হামলা হয়। অনন্ত জানান, বৈঠকখানা ঘরে আশ্রয় নিয়েও রেহাই পাননি তাঁর বাবা কমলাকান্ত।

কেশ-বাড়ি। আউশগ্রামে। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

কেশ-বাড়ি। আউশগ্রামে। ছবি: প্রদীপ মুখোপাধ্যায়

প্রদীপ মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০২৩ ০৭:৩২
Share: Save:

কেমন অত্যাচার হয়েছিল তাঁদের পরিবারের উপরে, সে কাহিনি শুনিয়ে বিভিন্ন সময়ে রাজনৈতিক ফায়দা তোলার চেষ্টা করেছেন নেতারা। কিন্তু তাঁদের পরিবারের খোঁজ আর কেউ রাখেন না— পঞ্চায়েত ভোটের মরসুমে এমনই আক্ষেপ আউশগ্রামের বেলাড়ির অনন্ত কেশের। প্রায় চার দশক আগে খুন হয়েছিলেন তাঁর বাবা ও দুই দাদা। তার পরে নানা সময়ে নানা প্রতিশ্রুতি মিলেছে, কিন্তু লাভ কিছু হয়নি, দাবি কেশ পরিবারের সদস্যের।

১৯৮৫ সালের ২ জুলাই ভোরে ওই পরিবারের উপরে হামলা হয়। অনন্ত জানান, বৈঠকখানা ঘরে আশ্রয় নিয়েও রেহাই পাননি তাঁর বাবা কমলাকান্ত। ঘরের দরজা ভেঙে বার করে পিটিয়ে খুন করা হয় তাঁকে। পরিবারের অন্য সদস্যেরা বাড়ির ভিতরে গা-ঢাকা দিলেও, টিনের ছাউনি খুলে ঢুকে কমলাকান্তের বড় ছেলে অশোক ও মেজো ছেলে অসীমকে মারতে মারতে বাইরে বার করে নিয়ে যাওয়া হয়। হামলাকারীদের কাছে ছেলেদের প্রাণভিক্ষা করেন মা দুর্গারানি কেশ। কিন্তু কেউ তা শোনেনি। ঘণ্টা তিনেকের তাণ্ডবে বাবা ও দুই দাদা খুন হয়ে যান, জানান অনন্ত কেশ। তাঁর তখন বছর পনেরো বয়স, নবম শ্রেণির ছাত্র।

অনন্তের দাবি, ‘‘ঘটনার আগের দিন ছাগলের ধানের বীজ খাওয়া নিয়ে গ্রামে বাবা-দাদাদের সঙ্গে বাদানুবাদ হয়। পরে তা মিটেও যায়। কিন্তু তা কেন্দ্র করেই বাবা, দাদাদের মেরে ফেলার ছক কষা হয়েছিল।’’ তাঁর মা ৩০-৩২ জনের নামে খুনের অভিযোগ দায়ের করেন। অনন্ত জানান, প্রণব মুখোপাধ্যায়-সহ কংগ্রেসের নেতারা বাড়িতে এসে দোষীদের শাস্তির ব্যবস্থার আশ্বাস দেন। বনপাশ বাজারে কংগ্রেস কার্যালয়ের সামনে তিন জনের শহিদ বেদি তৈরি করা হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতার হাতবদলের পরে তাঁদের বাড়িতে এসেছেন তৃণমূলের নেতা-মন্ত্রীরাও। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিআইডির হাতে কেশবাড়ির ঘটনার তদন্তভার তুলে দেন। কিন্তু সেই তদন্তে কী উঠে এল, তা এখনও তাঁরা জানতে পারেননি বলে দাবি অনন্তের। ২০১৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটে তাঁকে প্রার্থী করে তৃণমূল। জিতেছিলেন তিনি। তাঁর আক্ষেপ, “ভোট এলেই বাম আমলের অত্যাচারের কাহিনি তুলে ধরতে আমাদের বাড়ির উদাহরণ দেওয়া হয় এলাকায়। কিন্তু আমরা কেমন আছি, সে খবর কেউ রাখেন না। এখনও দোষীরা শাস্তি পেল না।’’

অনন্তের অভিযোগ, “পালাবদলের পরে যে প্রতিশ্রুতি মিলেছিল, তার কিছুই রাখা হয়নি। এ বারও পঞ্চায়েত ভোটের প্রচারে বিল্বগ্রামে এসে তৃণমূল নেতারা কেশবাড়ির কথা বলেছেন। কিন্তু আমাদের সঙ্গে কেউ যোগাযোগ করেননি।’’ তাঁর সংযোজন: ‘‘এখন আর কারও কাছে কিছু চাহিদা নেই। আমার বাড়ির সামনের রাস্তাটা ঢালাই করেনি পঞ্চায়েত।’’ বাবা-দাদাদের শহিদ বেদিকে মর্যাদা না দেওয়ার অভিযোগে বছর দুয়েক আগে নিজেই ভেঙে দিয়েছেন, জানান তিনি।

আউশগ্রামের বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দার যদিও বলেন, ‘‘দল সব সময় শহিদ পরিবারের পাশে আছে। ওঁদের যদি কোনও ক্ষোভ থাকে, আমি কথা বলে মেটানোর চেষ্টা করব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

WB Panchayat Election 2023 West Bengal Panchayat Election 2023 Ausgram
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy