Advertisement
২৮ নভেম্বর ২০২৪
Narendra Modi Special Kites

আকাশে ‘মোদী-ঘুড়ি’, বিতর্ক রাজনীতির মাটিতে

শহরের ইদিলপুর কাঠগোলা ঘাট, সদরঘাট, বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়া-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় হয় ঘুড়ি উৎসব। রাজ আমল থেকেই এই রেওয়াজ চলে আসছে।

বিক্রি হচ্ছে ‘মোদী ঘুড়ি’। বর্ধমানে।

বিক্রি হচ্ছে ‘মোদী ঘুড়ি’। বর্ধমানে। নিজস্ব চিত্র।

সুপ্রকাশ চৌধুরী
বর্ধমান শেষ আপডেট: ১৪ জানুয়ারি ২০২৪ ০৭:১৪
Share: Save:

মাঠে-ময়দানের রাজনীতিতে শাসক দল তৃণমূলের চেয়ে বর্ধমান শহরে বিজেপি যে বেশ কিছুটা পিছিয়ে, তা ব্যক্তিগত আলাপচারিতায় স্বীকার করেন গেরুয়া শিবিরের অনেকেই। লোকসভা ভোটের আগে রাস্তার রাজনীতিতে বিজেপির নজর কাড়া তৎপরতা এখনও দেখা যায়নি শহরে। তবে পৌষ সংক্রান্তি এগিয়ে আসতে আকাশে ভিড় বাড়ছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ছবি আঁকা ঘুড়ির। তৃণমূল, সিপিএম এবং কংগ্রেস বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ করলেও বিজেপির দাবি, মোদীর পালে হাওয়া যে আছে, তা বুঝিয়ে দিচ্ছে ওই ঘুড়িগুলি।

উত্তুরে হাওয়া বর্ধমান শহরের ঢুকছে হু হু করে। সংক্রান্তির আগে এই সময়ে ঘুড়ি ওড়ানোর চল রয়েছে শহরে। কলকাতা-সহ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিশ্বকর্মা পুজোর দিন আকাশ ঢেকে থাকে ঘুড়িতে। তবে ওই দিন বর্ধমান শহরের আকাশে ঘুড়ির দেখা মেলে না। ‘রাজার শহর’ বর্ধমানে ঘুড়ি ওড়ানো হয় পৌষ সংক্রান্তি এবং মাঘ মাসের প্রথম দিন।

এখন আকাশে চোখ মেললেই দেখা যাচ্ছে নানা রঙের ঘুড়ি। সেগুলির মধ্যে আলাদা করে নজর কাড়ছে ‘মোদী-ঘুড়ি’। সংক্রান্তির উপলক্ষে ঘুড়ি বিক্রি হচ্ছে শহরজুড়ে। এই সময় শহরে নানা মেলা হয়। মেলায় ঘুড়ি ওড়ানোর প্রথাও বহু দিনের। বেলা বাড়তেই আকাশে ঘুড়ির ঝাঁক দেখা যায়।

শহরের ইদিলপুর কাঠগোলা ঘাট, সদরঘাট, বাহির সর্বমঙ্গলা পাড়া-সহ শহরের বিভিন্ন জায়গায় হয় ঘুড়ি উৎসব। রাজ আমল থেকেই এই রেওয়াজ চলে আসছে। শহরের তেঁতুলতলা বাজার, বড়বাজার, জেলখানা মোড়, বোরহাট, লাকুর্ডি-সহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুড়ি এবং মাঞ্জা সুতোর পসরা সাজিয়ে বসেছেন অনেকে। তেঁতুলতলা বাজারে গির্জার সামনে বসা কয়েকটি দোকানে মিলছে মোদী-ঘুড়ি। তাতে আবার লেখা রয়েছে ‘ বিজেপি: মিশন ২০২৪’। চাঁদিয়াল, পেটকাঠি-সহ কাগজ এবং প্লাস্টিকের নানা মাপের ঘুড়ির ভিড়ে নজর কেড়েছে এই মোদী-ঘুড়ি।

হঠাৎ এই ঘুড়ি বাজারে আসার কারণ? দোকানদারের দাবি, ‘‘আলাদা করে এই ঘুড়ি কেনা হয়নি। পাইকারি দরে কেনা ঘুড়ির লাটের মধ্যেই মোদী-ঘুড়ি ছিল।’’ বিক্রেতাদের দাবি, মোদী-ঘুড়ি বিক্রি হলেও কাগজের অন্য ঘুড়ির চাহিদা বেশি।

রাজনীতির ময়দানে এই ঘুড়ি নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য সন্দীপ নন্দীর দাবি, ‘‘হাওয়া না থাকলে ঘুড়ি আকাশে ওড়ে না। মোদী-ঘুড়ি যখন উড়ছে, তখন বলতেই হবে, বাতাসে প্রধানমত্রীর নাম ভাসছে। লোকসভা নির্বাচনে মোদীজির নাম এ ভাবেই ছড়িয়ে পড়বে।’’ পাল্টা দিতে দেরি করেনি তৃণমূল। রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাসের কটাক্ষ, ‘‘ওই ঘুড়ি ভো-কাট্টা হবে। মানুষের মনে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ও সব ঘুড়ি দিয়ে কিচ্ছু হবে না।’’ কংগ্রেস নেতা গৌরব সমাদ্দারের খোঁচা, ‘‘পালে হাওয়া পাচ্ছে না বিজেপি। তাই ঘুড়িতে প্রধানমন্ত্রীর ছবি এঁকে নজর কাড়তে হচ্ছে। এটা হাস্যকর।’’ আর সিপিএম জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য অপূর্ব চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘মোদীর ছবি আঁকা ঘুড়ি বাজারে এনে সস্তা চমক দিতে চাইছে বিজেপি। এ সব আমরা চাই না। ধর্মের নামে দেশ ও মানুষের বিভাজন রুখে খাদ্য, কর্মসংস্থান, নিরাপত্তার দাবিতে লড়াই চলছে আমাদের।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Bardhaman
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy