বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়। Sourced by the ABP
বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থায়ী আমানত ভেঙে যাঁর অ্যাকাউন্টে টাকা গিয়েছিল বলে অভিযোগ, বর্ধমান থানায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিক ও এক কর্মীর বিরুদ্ধে প্রতারণার মামলা করলেন তিনি। কলকাতার বিজয়গড়ের বাসিন্দা সুব্রত দাস ফিনান্স অফিসার সৌগত চক্রবর্তী ও কর্মী অরিত্র দানার নামে অভিযোগ করেছেন। এর মধ্যে, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে সম্প্রতি আর্থিক দুর্নীতির অভিযোগ বার বার ওঠায়, নিরপেক্ষ তদন্ত চেয়ে আন্দোলনের ডাক দিয়েছে ‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও কমিটি’। আজ, বৃহস্পতিবার দুপুরে ওই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘গোল্ডেন জুবিলি’ ভবনের সামনে আন্দোলন করবে বলে জানিয়েছে। জেলা পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের দুর্নীতি নিয়ে মামলা, পাল্টা মামলা হয়েছে। প্রতারণার মামলাও হয়েছে। প্রতিটি ক্ষেত্রেই অ্যাকাউন্টের হিসাব পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।”
পুলিশ ও বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের বড়বাজার শাখায় স্থায়ী আমানত ভেঙে কল্যাণীর একটি সংস্থাকে দেওয়ার জন্য চিঠি দেওয়া হয়েছিল। বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্তার সই ও নথি জাল বলে সেই টাকা ছাড়েননি ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। পরে ব্যাঙ্কের তরফে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ দফতরের কর্মী ভক্ত মণ্ডল ও এক অস্থায়ী কর্মীর নামে অভিযোগ করা হয়। এই ঘটনার পরে বিশ্ববিদ্যালয় খোঁজ নিয়ে জানতে পারে, জেলখানা মোড়ে একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে তিন দফায় ১ কোটি ৯৩ লক্ষেরও বেশি টাকা তোলা হয়েছে। স্থায়ী আমানত ভেঙে ওই টাকা গিয়েছে সুব্রত দাসের অ্যাকাউন্টে। দু’টি ক্ষেত্রেই বিশ্ববিদ্যালয়ের চিঠিতে সুব্রতর মোবাইল নম্বর দেওয়া ছিল। এই ঘটনা জানাজানি হতেই রেজিস্ট্রার সুজিত চৌধুরী অর্থ বিভাগের
কর্মী ভক্ত ও সুব্রতর নামে এফআইআর করেন। ব্যাঙ্কের তরফেও ওই দু’জনের নামে প্রতারণার অভিযোগ
করা হয়েছে।
সুব্রত বর্ধমান থানায় লিখিত অভিযোগ করেছেন, কল্যাণীর সংস্থাটির কর্ণধার তাঁর স্ত্রী। তিনি কর্ণধারের অনুমতিতে সংস্থা পরিচালনা করেন। ২০২১ সালে অরিত্র দানার সঙ্গে তাঁর পরিচয় হয়। তিনি নিজেকে ফিনান্স অফিসারের ব্যক্তিগত সহায়ক বলে পরিচয় দেন। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে অরিত্র ও ফিনান্স অফিসারের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের
ঠিকা শ্রমিক নিয়োগ নিয়ে কথা হয়। তাঁর অভিযোগ, তাঁরা দরপত্র জমা দিতে বলেন এবং পাইয়ে দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে ২ লক্ষ টাকা দাবি করেন। ওই বছরের এপ্রিলে অরিত্রকে ২ লক্ষ টাকা দেওয়া হয়। আরও অভিযোগ, এর পরে অরিত্র ব্যক্তিগত ঋণ
হিসেবে ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। সেই টাকা যাদবপুরের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে তুলে দেওয়া হয়। চিঠিতে
তাঁর দাবি, সেই টাকা ফেরত
দেওয়া হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয়কেও বিষয়টি জানিয়ে সদুত্তর পাননি বলে দাবি তাঁর।
অরিত্রের দাবি, “আমার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খতিয়ে দেখলেই বোঝা যাবে, আমি নির্দোষ।” ফিনান্স অফিসার বলেন, “আমি যে পদে রয়েছি, সেখানে ব্যক্তিগত ভাবে কারও সঙ্গেই দেখা করি না। সে জন্য ওই সব লোকজনকে চেনার কথাও নয়। সবটাই সাজানো।’’ বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের একাংশের অনুমান, অপবাদ দিয়ে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। একটা চক্রও কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে।
‘বিশ্ববিদ্যালয় বাঁচাও কমিটি’ একটি প্রচারপত্র ছড়িয়ে প্রশ্ন তুলেছে, দুর্নীতির যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে, তা কি আদৌ নিরপেক্ষ? টাকা ব্যাঙ্ক থেকে তুললেই মেসেজ পাওয়ার কথা, সেই মেসেজ দেখেই তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিতে পারত অর্থ দফতর। সেটা কেন হল না? এই দুর্নীতি ‘সংগঠিত অপরাধ’ নয় তো, সে প্রশ্নও তোলা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ জানান, নিরপেক্ষ কমিটি গঠন করে শেষ ১০ বছরের হিসাব দেখার জন্য অন্তর্বতীকালীন উপাচার্য নির্দেশ দিয়েছেন। টাকা তোলার কোনও মেসেজ ফিনান্স অফিসারের কাছে আসেনি। বাকি প্রশ্নের জবাব পুলিশের তদন্ত শেষে মিলবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy