হিরাপুর থানার সামনে বিক্ষোভ। বুধবার। ছবি: পাপন চৌধুরী
একই দিনে কয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে উদ্ধার হল নিখোঁজ দুই পড়ুয়ার দেহ। হিরাপুর থানার দুই জায়গা থেকে বছর চোদ্দোর কিশোর ও বছর বাইশের তরুণীর দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, মঙ্গলবার দেহ দু’টি মেলার পরে খুনের মামলা রুজু হয়েছে। বুধবার বিকেল পর্যন্ত দু’টি ঘটনায় মোট পাঁচ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার দুপুর পর্যন্ত দফায় দফায় থানায় বিক্ষোভ, পথ অবরোধ হয়।
বুধবার আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (পশ্চিম) অভিষেক মোদী জানান, নবম শ্রেণির ছাত্র ওই কিশোরকে খুনে জড়িত সন্দেহে বিট্টু মণ্ডল নামে এক যুবক ও নবম শ্রেণির এক ছাত্র এবং তরুণীকে খুনে জড়িত সন্দেহে সমীর মাড্ডি, রোহিত হাঁসদা ও সুমিতা হেমব্রম নামে তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের আসানসোল আদালত সাত দিন পুলিশ হেফাজতে পাঠায়। অভিষেক বলেন, “দু’টি ঘটনার তদন্তে প্রাথমিক কিছু তথ্য পাওয়া গিয়েছে। তবে খুনের কারণ এখনও স্পষ্ট নয়।” পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, তরুণীকে ধর্ষণের পরে শ্বাসরোধ করে এবং ছাত্রটিকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রবিবার দুপুর থেকে নিখোঁজ ছিল রামবাঁধের ওই ছাত্র। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় দামোদর লাগোয়া ভুতাবুড়ি ঘাট থেকে তার হাত-পা বাঁধা বস্তাবন্দি দেহ উদ্ধার হয়। আত্মীয়-পরিজনেরা হিরাপুর থানায় বিক্ষোভ শুরু করেন। এর কিছুক্ষণ পরেই খবর আসে, বার্নপুর নিউটাউন লাগোয়া ইস্কো রোড ১২ নম্বর এলাকায় এক তরুণীর দেহ পড়ে রয়েছে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করে। জানা যায়, সোমবার সন্ধ্যা থেকে নিখোঁজ ছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রী ওই তরুণী। ক্ষুব্ধ বাসিন্দারা থানায় গিয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন। রাতে পুলিশ তাঁদের বুঝিয়ে শান্ত করলেও, বুধবার সকাল থেকে উত্তেজনার পারদ চড়তে থাকে।অবরোধ হয় বার্নপুর-বারি ময়দান রোড। কয়েকশো আদিবাসী মানুষজন থানা ও আশপাশের অঞ্চলে জমায়েত হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে মহকুমার প্রতিটি থানা থেকে পুলিশ বাহিনী ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পাঁচ জন এসিপি এবং তিন জন ডিসিপি পদমর্যাদার অফিসার আসেন।
বিক্ষোভকারীদের তরফে হিরালাল সোরেন দাবি করেন, “এই ঘটনা প্রমাণ করে, আদিবাসী মহিলারা শিল্পাঞ্চলে সুরক্ষিত নন। দোষীরা গ্রেফতার না হলে, আমরা বিক্ষোভ চালিয়ে যাব।” প্রায় তিন ঘণ্টা অবরোধের পরে, পুলিশের অনুরোধে বিক্ষোভকারীদের কয়েক জন ডিসি-র সঙ্গে বৈঠকে বসেন। পুলিশের তরফে উপযুক্ত আশ্বাস পেয়ে, দুপুর দেড়টা নাগাদ অবরোধ ওঠে।
পুলিশ সূত্রের দাবি, প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ওই ছাত্র এবং তরুণী, দু’জনকেই ফোন করে ডাকা হয়েছিল। বাড়ি থেকে বেরোনোর সময়ে দু’জনেই বাড়ির সদস্যদের জানা, কিছুক্ষণের মধ্যে ফিরবেন। পরে দু’জনের দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ জানায়, মৃতদের মোবাইলের খোঁজ করার পাশাপাশি, খুনের কারণ জানার চেষ্টা হচ্ছে। বুধবার আসানসোল জেলা হাসপাতালে দেহের ময়না-তদন্ত হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy