আসানসোল জেলা হাসপাতালে বৃহস্পতিবার। নিজস্ব চিত্র
নেতা আসছেন। নেতার স্বাস্থ্যপরীক্ষা হবে। তাকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার ব্যস্ত সময়ে আসানসোল শহরের রাস্তায়, হাসপাতালে তুঙ্গে উঠল পুলিশের তৎপরতা। হয়রানির অভিযোগে হল জনতার বিক্ষোভ। উষ্মাও প্রকাশ করলেন কেউ-কেউ। এ দিন গরু পাচার মামলায় ধৃত অনুব্রত মণ্ডলকে আসানসোল বিশেষ সংশোধনাগার থেকে স্বাস্থ্যপরীক্ষার জন্য জেলা হাসপাতালে নিয়ে যাওয়াকে কেন্দ্র করে শহরের ছবিটা ছিল এমনই।
বৃহস্পতিবার, সকাল ১০টা। কাজে বেরিয়েছিলেন সাধারণ নাগরিকেরা। আসানসোল সংশোধানাগার ও আদালত লাগোয়া ঘড়ি মোড়ের কাছে গার্ডরেল বসিয়ে ব্যস্ত বার্নপুর রোডে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনেরেটের পুলিশ। স্কুটার, মোটরবাইক যাতায়াতের অনুমতি থাকলেও, গাড়ি চলাচল পুরোপুরি বন্ধ করে দেওয়া হয়। আসানসোল থেকে বার্নপুরগামী যাত্রিবাহী বাস ও মিনিবাসগুলিকে ঘুরপথে ভগৎ সিংহ মোড় হয়ে পাঠানো হয়। ঘণ্টাখানেক চলে এই অবস্থা। দৃশ্যতই হতাশ এক বাসযাত্রীর মন্তব্য, “পাবলিকের দুর্ভোগ, এটাই তো স্বাভাবিক!”
এ দিন অনুব্রতের যাতায়াতের পথেও বিপত্তি এড়াতে পুলিশি তৎপরতা ছিল চোখে পড়ার মতো। পুরো বিষয়টির তত্ত্বাবধানে ছিলেন পুলিশ কমিশনারেটের ডিসি (সেন্ট্রাল) কুলদীপ সেনাওয়ানে-সহ প্রায় চার জন পুলিশ-কর্তা। তবে শহরবাসীর দুর্ভোগের অভিযোগ সম্পর্কে মুখ খুলতে চাননি কমিশনারেটেরপুলিশ-কর্তারা।
এ দিকে, সকাল ১১টা নাগাদ আসানসোল জেলা হাসপাতাল চত্বরের দখল নেয় পুলিশ। সাধারণ রোগীদের যাতায়াত নিয়ন্ত্রণ করতে শুরু করে কমব্যাট ফোর্স। জরুরি বিভাগের সামনে বসানো হয় গার্ডরেল। ১১টা ১০-এ পুলিশের কনভয় অনুব্রতকে নিয়ে হাসপাতালে ঢোকে।
কিন্তু এই পরিস্থিতিতে সমস্যায় পড়েনি সাধারণ রোগীরা। গৌরান্ডি থেকে রোগী নিয়ে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে চিকিৎসার জন্য এসেছিলেন এক ব্যক্তি। হাসপাতালের গেটের বাইরে প্রায় দেড় ঘণ্টা তাঁকে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। জরুরি বিভাগে যাওয়ার জন্য গার্ডরেলের পাশে সরু এক ফালি রাস্তা দিয়ে হনহন করে যাচ্ছিলেন মহম্মদ সরফরাজ। সঙ্গে ছিলেন তাঁর অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী। তাঁদের ঢুকতে বাধা দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। সেখানে উপস্থিত কয়েক জনের মধ্যস্থতায় শেষ পর্যন্ত তাঁরা ঢুকতে পারেন হাসপাতালে। একই ভাবে, আট বছরের শিশুকে ডাক্তার দেখাতে এসে সমস্যায় পড়েন পদ্মতলাওয়ের বাসিন্দা মীরা দেবী। তাঁর ক্ষোভ, “কে এমন এসেছেন ডাক্তার দেখাতে যে, আমাদের ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না!”
বেশ কিছুক্ষণ এমন পরিস্থিতি চলার পরে, রোগী ও তাঁদের আত্মীয়-পরিজনেরা বিক্ষোভ শুরু করেন। গোলমাল বাধে হাসপাতাল চত্বরে। একটা সময়, সাধারণ মানুষ মারমুখী হয়ে ওঠেন। শেষে পুলিশ রোগী ও তাঁদের পরিজনদের জরুরি বিভাগে ঢোকানোর ব্যবস্থা করে। অনুব্রত হাসপাতাল ছাড়ার পরে ধীরে-ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
যদিও সাধারণ মানুষের চিকিৎসা পরিষেবায় খামতির অভিযোগ মানেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের সুপার নিখিলচন্দ্র দাস বিষয়টি নিয়ে বলেন, “আমাদের কাছে এমন কোনও অভিযোগ আসেনি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy