Advertisement
E-Paper

খানিক অন্তর বন্ধ রেলগেট, নিত্য যাতায়াত ঝুঁকি নিয়েই

পাণ্ডবেশ্বর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক সুরেন্দ্রপ্রসাদ বার্মা জানান, পাণ্ডবেশ্বর রেলগেট দিয়ে এলাকার বহু মানুষের যাতায়াত।

বন্ধ রেলগেটে অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র

বন্ধ রেলগেটে অপেক্ষা। নিজস্ব চিত্র Stock Photographer

নিজস্ব সংবাদদাতা

শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০২৪ ০৮:৪৮
Share
Save

শ’খানেক বার ওঠানামা করে রেলগেট। পূর্ব রেলের আসানসোল ডিভিশনে এমন রেলগেটের সংখ্যা কম নয়। ব্যস্ত এই সমস্ত রেলগেটে তৈরি হয় যানজট। গেট বন্ধ থাকা অবস্থাতেই পারাপারের চেষ্টা করেন অনেক পথচারী। স্কুলে যাওয়ার সময়ে তাড়া থাকায় অনেক পড়ুয়াকেও সে ভাবে পার হতে দেখা যায়। ফলে, দুর্ঘটনার আশঙ্কা থাকে যে কোনও সময়ে। এলাকাবাসীর দাবি, ব্যস্ত রেলগেটে ওভারব্রিজ বা আন্ডারপাস তৈরির উদ্যোগ প্রয়োজন রেলের তরফে। রেল সূত্রের দাবি, সে জন্য রাজ্য প্রশাসনকে আবেদন জানাতে হবে।

আসানসোল ডিভিশনের অন্ডাল-সাঁইথিয়া লাইনের কাজোড়া, সিঁদুলি, উখড়া ও পাণ্ডবেশ্বরে রেলগেট দিনে একশো বারের বেশি ওঠানামা করে। উখড়ায় রয়েছে প্রায় ১৬টি আর্থিক প্রতিষ্ঠান, পঞ্চায়েত‌ দফতর, ব্লক প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র ছাড়াও বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ও একাধিক স্কুল রয়েছে। শঙ্করপুর মোড়ে রেলগেট পারাপার করতে হয়।‌ উখড়া আদর্শ হিন্দি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক প্রবীণ সিংহ জানান, ‘‘কোনও পরীক্ষা থাকলে পড়ুয়াদের বেশি বিপাকে পড়তে হয়। রেলগেট বন্ধ থাকলে পড়ুয়ারা গেটের নীচ দিয়ে যাতায়াত করে।’’ কংগ্রেস নেতা কৃষ্ণ রায় জানান, বেশ কয়েক বছর আগে রেলগেট‌ হেঁটে পেরোতে গিয়ে এক জনের মৃত্যুর ঘটনা ঘটে। উখড়া চেম্বার অব কমার্সের কার্যকরী সভাপতি সীতারাম বার্নোয়াল জানান, উখড়া বাজারের উপরে নির্ভরশীল অন্ডাল ও পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের বড় অংশ। রেলগেট বন্ধ থাকায় অ্যাম্বুল্যান্সে প্রসবের ঘটনাও ঘটেছে। ব্যস্ত খনি এলাকা হওয়ায় ট্রেন ছাড়া প্রচুর মালগাড়িও যাতায়াত করে। তাতে দিনের বেশির ভাগ সময়েই রেলগেট বন্ধ থাকে। তাঁদের দাবি, একাধিক বার রেলের কাছে উড়ালপুল তৈরির দাবি জানানো হয়েছে।

পাণ্ডবেশ্বর চেম্বার অব কমার্সের সম্পাদক সুরেন্দ্রপ্রসাদ বার্মা জানান, পাণ্ডবেশ্বর রেলগেট দিয়ে এলাকার বহু মানুষের যাতায়াত। স্বাস্থ্য পরিষেবা-সহ বিভিন্ন কাজে দুর্গাপুর বা রানিগঞ্জে যেতে এই রেলগেট পেরোতে হয়। বেশিরভাগ সময়ে রেলগেট বন্ধ থাকায় দুর্ভোগের সীমা থাকে না বলে অভিযোগ। পাণ্ডবেশ্বরে বাসিন্দা মহেশ মণ্ডল, দীপক পালেরা জানান, প্রচুর টাকা খরচ করে পাণ্ডবেশ্বর স্টেশন আধুনিকীকরণের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। স্টেশনের অদূরে রেলগেটে উড়ালপুল তৈরি জরুরি ছিল। তা ছাড়া, বেশিরভাগ এক্সপ্রেস ট্রেন পাণ্ডবেশ্বরে দাঁড়ায় না। তাই শুধু স্টেশন আধুনিকীকরণে এলাকাবাসীর বিশেষ লাভ হয়নি, দাবি তাঁদের। তৃণমূলের পশ্চিম বর্ধমান জেলা সভাপতি তথা পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর দাবি, রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় পাণ্ডবেশ্বরে উড়ালপুল তৈরির পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। পরে আর বিষয়টির অগ্রগতি হয়নি। উখড়াতেও রেলগেট জরুরি। এ নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে রেলের কাছে আবেদন জানালেও ফল হয়নি। এলাকাবাসীর দাবি, রাজ্য ও কেন্দ্র— দু’পক্ষের যৌথ ভাবে এ নিয়ে নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নেওয়া উচিত।

আসানসোল আদালতের কাছে এসবি গড়াই রোডের রেলগেটটিও গুরুত্বপূর্ণ। এই পথ ধরে ন’টির বেশি স্কুল, আদালত, জেল, হাসপাতাল-সহ নানা সরকারি দফতরে আসা-যাওয়া করতে হয়। এই রেলপথে ৩১টির বেশি ট্রেন এবং প্রচুর মালগাড়ি যাতায়াত করে। তাতে সারা দিন নাকাল হতে হয়, অভিযোগ বাসিন্দাদের। স্থানীয় বাসিন্দা দীপক চট্টোপাধ্যায়, তপন দাস, প্রবীর মুখোপাধ্যায়েরা জানান, এসবি গড়াই রোডে উড়ালপুল দীর্ঘদিনের দাবি। যত দিন যাচ্ছে যানজটে জেরবার হতে হচ্ছে বলে অভিযোগ। অতীতে রেলগেট পেরোতে গিয়ে দুর্ঘটনায় পড়ুয়ার মৃত্যুর ঘটনাও ঘটেছে।

রেল সূত্রের দাবি, এসবি গড়াই রোড, উখড়া ও পাণ্ডবেশ্বরে‌ উড়ালপুল তৈরি করতে হলে রাজ্য সরকারকে আগে আবেদন করতে হবে। তবেই রেল উদ্যোগী হবে।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Raniganj level Crossing

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}