আসানসোল আদালত চত্বরে। মঙ্গলবার। নিজস্ব চিত্র
নিরাপত্তা নিয়ে এমন কড়াকড়ি আগে কবে নজরে পড়েছে, মঙ্গলবার সকালে মনে করতে পারছিলেন না আসানসোল আদালতের আইনজীবী থেকে পথচারীরা। পাশাপাশি, ‘ওঁদের’ কখন আনা হবে আদালত চত্বরে, তা নিয়ে অপেক্ষাও করতে গিয়েছে তাঁদের। ওঁরা: কয়লা-কাণ্ডে ধৃত চার জন। শেষমেশ, বিকেলে আদালত চত্বর থেকে বেরিয়ে অনেককেই বলতে শোনা গিয়েছে, “আজ দেখলাম। আগে ওঁদের অনেক ‘নাম’ শুনেছিলাম!”
দুপুর ১২টা। সিআরপি-র নিরাপত্তার চাদরে মোড়া সিবিআই-এর চারটি গাড়ির কনভয় আদালত চত্বরে ঢোকে। মূল গেট থেকে বিশেষ সিবিআই আদালতের রাস্তা পর্যন্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। আগে থেকেই আদালতে ঢোকার গেটে কমব্যাট ফোর্সের জওয়ানেরা নিজ-নিজ ‘পজিশন’ নিয়েছিলেন। গাড়িগুলি গেটের সামনে দাঁড়াতেই পুরো চত্বর ঘিরে ফেলেন কমব্যাট ফোর্স এবং সিআরপি জওয়ানেরা।
মাঝের দু’টি গাড়িতে ছিলেন ‘ওঁরা’, অর্থাৎ ‘বেআইনি’ কয়লা কারবারে ধৃত আসানসোলের জয়েদেব মণ্ডল, রানিগঞ্জের নারায়ণ নন্দা, পুরুলিয়ার গুরুপদ মাজি, বাঁকুড়ার নীরদ মণ্ডল। জিন্সের প্যান্ট ও সাদা জামা পরেছিলেন জয়দেব। কালো ফ্রেমের চশমা চোখে নামলেন নারায়ণ। সঙ্গে ধীরে-ধীরে নামলেন নীরদ মণ্ডল, গুরুপদ মাজি। ওঁরা চলে এসেছেন, শুনতেই আদালত চত্বরে জমতে থাকা ভিড়ের কাউকে-কাউকে সংবাদমাধ্যমের ক্যামেরা কার্যত ঠেলে মোবাইলে ছবি তুলতে দেখা গেল। মুহূর্তে পরিস্থিতির সামাল দিয়ে ধৃতদের নিয়ে লিফ্টে করে আদালতের চারতলায় উঠে যান সিবিআই আধিকারিক ও জওয়ানেরা।
পরিস্থিতি দেখে আদালতের আইনজীবীদের অনেকের সরস মন্তব্য, ‘‘এ যেন ভিভিআইপি কেউ এসেছেন!’’ কারণও আছে। এ দিন আদালত খোলার আগে থেকেই গোটা চত্বর পুলিশে ছয়লাপ ছিল। হয়েছে নাকা-চেকিং।
মোটরবাইক, স্কুটার নিয়ে যাঁরা আদালতে ঢুকেছেন, রীতিমতো ডিকি খুলিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে। ‘আসানসোল বার অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারণ সম্পাদক বাণী মণ্ডলের প্রতিক্রিয়া, “আদালতে চত্বরে নিরাপত্তার এমন আঁটোসাঁটো চেহারা আগে কখনও দেখেছি বলে মনে পড়ে না। অন্য রকম অভিজ্ঞতা।”
পুলিশ সূত্রের দাবি, এ দিন ওই চার জনের ‘অনুগামী’ বলে পরিচিত অন্তত কয়েকশো লোক আদালত চত্বরে এসেছিলেন। তাই পরিস্থিতি যাতে হাতের বাইরে না যায়, সে দিকে কড়া নজর রাখা হয়েছিল। ওই ‘অনুগামী’রা সিবিআইয়ের গাড়িগুলি আদালত চত্বরে ঢুকতেই, সেগুলিকে সংবাদমাধ্যমের নজর থেকে আড়াল করার চেষ্টাও করেন বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে। তবে তাঁরা তাতে
সফল হননি।
শীতলপুরের বাসিন্দা মৃন্ময় বন্দ্যোপাধ্যায় আাদালতে এসেছিলেন এফিডেভিট করাতে। বললেন, ‘‘জয়দেব, নারায়ণ-সহ বাকিদের নাম বহু দিন ধরেই শুনেছি। ওঁদের সাধারণ মানুষের মধ্যে দেখা যায় না। তাই কৌতূহল ছিল। আজ দেখলাম ওঁদের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy