ছবি সংগৃহীত।
সপ্তাহ পেরিয়ে গেলে ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পে আবেদন করা নিয়ে সমস্যা মেটেনি— অভিযোগ উঠছে পূর্ব বর্ধমানে। এ নিয়ে সুর চড়াচ্ছেন বিরোধীরাও। জেলা প্রশাসন সূত্রে অবশ্য সোমবার জানানো হয়, এই প্রকল্পে অনেকেই আবেদন করতে পারছেন। ইতিমধ্যে প্রায় ২২ হাজার আবেদন জমা পড়ে গিয়েছে।
সোমবার কালনায় মহকুমাশাসকের কার্যালয়ের সামনে ডিওয়াইএফের শহর অঞ্চল কমিটির তরফে নানা দাবিদাওয়া নিয়ে বিক্ষোভ দেখানো হয়। তার মধ্যে ছিল ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পে আবেদন করার ক্ষেত্রে হয়রানির অভিযোগও। সংগঠনের তরফে নেপাল সরকারের বক্তব্য, ‘‘অনলাইনে আবেদন চালুর আগে বেশ কিছু ফর্ম অনেকে জমা দিয়েছেন সরকারি দফতরে জমা দিয়েছিলেন। আমরা প্রশাসনের কাছে জানতে চেয়েছি, ওই আবেদনগুলির কী হবে? প্রশাসনের তরফে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, জমা পড়া ফর্মগুলি বাতিল করা হয়নি। সেখানে যাঁরা নিয়ম মেনে আবেদন করেছেন, তা গ্রাহ্য হবে।’’
‘অনলাইন’ আবেদন করার ক্ষেত্রে এখনও সমস্যায় পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ অনেকেরই। পূর্বস্থলী ১ ব্লকের বাসিন্দা প্রণবকুমার ঘোষের কথায়, ‘‘ট্রেনে জিনিস ফেরি করে সংসার চালাতাম। এখন বন্ধ। রেশন এবং স্থানীয় মানুষের সাহায্যে কোনও রকম দিন চলছে। এখন সরকারি অর্থসাহায্য পেলে ভাল হয়। অথচ, বারবার চেষ্টা করেও মোবাইল থেকে অনলাইনে ফর্ম জমা দিতে পারিনি।’’
অনেকেই অভিযোগ করেন, ফর্ম জমা দিতে অনেক সময় লেগে যাচ্ছে। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ‘ওয়ান টাইম পাসওয়ার্ড’ (ওটিপি) না আসায় আবেদন জমাই করা যাচ্ছে না। কাটোয়া মনসাপাড়ার বাসিন্দা যতন হালদারের অভিযোগ, ‘‘লকডাউনের ফলে, দীর্ঘদিন কাজ নেই। ‘প্রচেষ্টা’ প্রকল্পে নাম তোলার জন্য চেষ্টা করছি। গত চার দিনের টানা চেষ্টাতেও সফল হলাম না।’’
একই দাবি কেতুগ্রামের সুরজ শেখ, মঙ্গলকোটের কানাই মণ্ডলদের। তাঁদের কথায়, ‘‘এই অসময়ে মাসে হাজার টাকা করে পেলেও সংসার চালাতে সুরাহা হয়। কিন্তু, আমরা প্রকল্পে নামই তুলতে পারিনি।’’ তাঁরা দাবি করেন, ‘‘প্রশাসনের উচিত ছিল বিষয়টির আরও সরলীকরণ করা। আমাদের মতো গরিব মানুষ নাম নথিভুক্ত করতে না পারলে প্রকল্পের কোনও মানেই হয় না।’’
পূর্বস্থলী উত্তর কেন্দ্রের সিপিএম বিধায়ক প্রদীপ সাহা দাবি করেন, ‘‘মেরেকেটে ১০ শতাংশ ইচ্ছুক মানুষ ফর্ম জমা দিতে পেরেছেন। সরকারি এই প্রকল্পে আবেদন করতে দীর্ঘ সময় ধরে হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে। যা পরিস্থিতি তাতে নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সবাই ফর্ম জমা দিতে পারবেন কি না, সন্দেহ রয়েছে।’’ পূর্বস্থলী ১ পঞ্চায়েত সমিতির সহ-সভাপতি তপন চট্টোপাধ্যায়ের পাল্টা দাবি, ‘‘এই প্রকল্পে আবেদন করার জন্য নির্দিষ্ট কিছু নিয়মকানুন বেঁধে দিয়েছে সরকার। অনেকেই তা জেনে নিয়ে আবেদন করতে পারছেন।’’
জেলা প্রশাসনের কর্তাদেরও দাবি, অনেকেই এই প্রকল্পে আবেদন করতে পারছেন। সোমবার দুপুর পর্যন্ত পাওয়া হিসাব অনুযায়ী, জেলা থেকে মোট ২১,৯৮৪টি আবেদন জমা পড়েছে বলে জানিয়েছে প্রশাসন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy