Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪

কাটমানি দিতে গিয়েই ঘর তৈরি হয়নি, চিঠি

প্রধান চন্দনা মাঝির দাবি, “যে যাঁর মতো অভিযোগ জমা করছেন। একই বয়ানে লেখা দেখে বোঝা যাচ্ছে কারা অভিযোগগুলি করাচ্ছেন। বিডিওকে তদন্ত করে দেখতে বলা হবে।’’

অভিযোগ হাতে। নিজস্ব চিত্র

অভিযোগ হাতে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
ভাতার শেষ আপডেট: ২৮ জুন ২০১৯ ০০:৩০
Share: Save:

টাকা পাওয়ার পরেও যে সমস্ত উপভোক্তা সরকারি প্রকল্পে ঘর সম্পূর্ণ করেননি তাঁদের বিরুদ্ধে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পঞ্চায়েত স্তরে নির্দেশ পাঠিয়েছে জেলা প্রশাসন। পরের দিনই ভাতারের বড়বেলুন ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রায় ১৯৮ জন উপভোক্তা ‘কাটমানি’ ফেরতের দাবিতে চিঠি দিলেন। তাঁদের অনেকেরই দাবি, তৃণমূল নেতাদের ‘কাটমানি’ দিতে গিয়ে ঘর সম্পূর্ণ করতে পারেননি তাঁরা। আবার কেউ কেউ দাবি করেন, ‘কাটমানি’ দিতে পারেননি বলে ঘর তৈরির পরবর্তী কিস্তির টাকা পাননি। বৃহস্পতিবার পঞ্চায়েতে বিক্ষোভও দেখান তাঁরা।

প্রধান চন্দনা মাঝির দাবি, “যে যাঁর মতো অভিযোগ জমা করছেন। একই বয়ানে লেখা দেখে বোঝা যাচ্ছে কারা অভিযোগগুলি করাচ্ছেন। বিডিওকে তদন্ত করে দেখতে বলা হবে।’’ গত আর্থিক বছরে বড়বেলুন ১ গ্রাম পঞ্চায়েতে ‘বাংলা আবাস যোজনা’য় ১২৮টি ঘর দেওয়া হয়েছিল। পঞ্চায়েতের দাবি, অভিযোগকারীদের মধ্যে বেশির ভাগই কয়েক বছর আগে ঘর পেয়েছেন। সুযোগ বুঝে তাঁরা ‘কাটমানির’ অভিযোগ করছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, ভাতারে বাংলা আবাস যোজনায় ৪৩৮টি ঘর অসম্পূর্ণ হয়ে রয়েছে বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন জেলাশাসক বিজয় ভারতী। এ দিন ব্লক প্রশাসনের তরফে জানানো হয়, অসম্পূর্ণ ঘরের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৩১৯টিতে। ঘরগুলি কেন হয়নি, সে নিয়ে শুনানি হচ্ছে। বিডিও শুভ্র চট্টোপাধ্যায় বলেন, “অভিযোগ খতিয়ে দেখে কর্তৃপক্ষের কাছে রিপোর্ট পাঠানো হবে।’’

বড়বেলুন গ্রামের অশীতিপর বৃদ্ধা সবিতা হাজরা ১০ জুন বিডিও-র কাছে লিখিত আবেদনে জানিয়েছেন, প্রথম কিস্তির টাকার পরে আর টাকা পাননি তিনি। এ দিন তাঁর বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, মাটির ঘরের পাশে সরকারি প্রকল্পে ঘরের কাঠামো। ইট পড়ে রয়েছে। জন্মেছে আগাছা। বৃদ্ধা বলেন, “তৃণমূলের লোকেরা এসে বলল ঘর করতে টাকা দেব না। একবার ৪০ হাজার টাকা দিয়েছিল। আর আমি না খেয়ে ২০ হাজার টাকা জমিয়ে ছিলাম। ৬০ হাজার টাকাই ওরা নিয়ে নিল।” কিছুটা দূরে বাস ফজুলা বিবির। তিনি ওই প্রকল্পে ঘর তৈরির জন্যে ৭০ হাজার টাকা পেয়েছিলেন। অভিযোগ, ব্যাঙ্ক থেকেই সেই টাকা কার্যত ছিনিয়ে নেয় তৃণমূলের ছেলেরা। প্রধানকে চিঠি দিয়ে অভিযোগ করেছেন তিনি। মুক্ত মাঝি, মালিক মাঝি, ধীরেন মণ্ডল, সাগর শেখদেরও অভিযোগ, “ব্যাঙ্কে টাকা এলে তৃণমূলের ছেলেরাই নিয়ে যেত। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকত। তারপরে নিয়ে নিত।’’ অনেকের অভিযোগ, কাটমানি যাঁরা দিতে পেরেছেন তাঁরাই পরবর্তী কিস্তি পেয়েছেন।

অভিযোগের চিঠিতে ভাতার ব্লক তৃণমূলের সভাপতি তথা বড়বেলুন ১ পঞ্চায়েতের উপপ্রধান দেবাশিস বন্দ্যোপাধ্যায়, পঞ্চায়েত সদস্য চিন্ময় রায় (অভিযোগে অবশ্য চিনে বা চিনু রায় বলে উল্লেখ রয়েছে)দের নাম রয়েছে। তাঁদের দাবি, “প্রমাণ ছাড়াই বিজেপি এ রকম নোংরামি করছে। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে গরিব মানুষদের নিয়ে রাজনীতি করা হচ্ছে।’’

বিজেপির নেতা আলি হোসেন বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে কাটমানির কথা বলেছেন। তাই উপভোক্তারা স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তৃণমূলের ‘চোর’দের ধরার দাবি করছেন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Corruption Housing Project Bribe TMC
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy