সোমবার দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালে। (ইনসেটে) একটি ‘ফাঁকা’ অক্সিজেন সিলিন্ডার। নিজস্ব চিত্র
রোগীকে সরকারি হাসপাতাল থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে অন্য বেসরকারি হাসপাতালে। কিন্তু অ্যাম্বুল্যান্সের অক্সিজেন সিলিন্ডার খালি! সরকারি হাসপাতালের ভিতর থেকে তড়িঘড়ি দু’টি অক্সিজেন সিলিন্ডার আনা হয়। কিন্তু দু’টির কোনওটিতেই অক্সিজেন ছিল না। এই পরিস্থিতিতে অক্সিজেনের অভাবে বাদলী কর্মকার (৬৪) নামে বাঁকুড়ার খাতড়ার বাসিন্দা ওই রোগীর মৃত্যুও হয়। সোমবার পশ্চিম বর্ধমানের দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালের বিরুদ্ধে এমনই অভিযোগ তুলেছেন বাদলীর পরিজনেরা।
পুলিশ ও হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার শ্বাসকষ্টের সমস্যা থাকায় বাদলীকে ভর্তি করানো হয় দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালে। তাঁর ছেলে ধনঞ্জয় সংবাদমাধ্যমের একাংশের কাছে জানান, রবিবার রাতে মায়ের শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। হাসপাতাল থেকে তাঁদের ফোন করে বিষয়টি জানানো হয়। রাতে তাঁরা আসতে পারেননি। সোমবার সকালে রোগীকে স্থানান্তর করানো হয় রাজবাঁধের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। ইএসআই হাসপাতালের জরুরি বিভাগ থেকে বার করার সময়ে আচমকা শ্বাসকষ্টের সমস্যা বেড়ে যায় বাদলীর। অক্সিজেনের দরকার পড়ে। পরিজনদের অভিযোগ, হাসপাতালের অ্যাম্বুল্যান্সের ভিতরে থাকা অক্সিজেন সিলিন্ডারটি খালি ছিল। তার পরে ইএসআই হাসপাতাল থেকে প্রথমে একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার আনা হয়। কিন্তু অভিযোগ, সেটিও খালি ছিল। তার পরে আরও একটি সিলিন্ডার আনা হলেও সেটিতেও অক্সিজেন ছিল না বলে মৃতের পরিজনদের অভিযোগ।
ধনঞ্জয় এ দিন বলেন, “অক্সিজেনের অভাবে চিকিৎসক, নার্স, সবার সামনেই মা মারা গেলেন। পর পর দু’টি সিলিন্ডার আনা হল। দু’টিই ফাঁকা। অথচ সিলিন্ডারের গায়ে অক্সিজেন ভর্তি রয়েছে, এই মর্মে স্টিকার সাঁটানো ছিল। ঠিক ভাবে তদন্ত হোক ঘটনার।” মৃতের পুত্রবধূ পিঙ্কি বলেন, “অক্সিজেন না দিলে মারা যাব, এটাই ছিল ওঁর শেষ কথা।” নাতি মিঠুন কর্মকারের ক্ষোভ, কোনও দায়-দায়িত্ব নেই এই হাসপাতালের।
এ দিকে, বিষয়টি মানতে চাননি হাসপাতালের সুপার দীপাঞ্জন বক্সী। তাঁর দাবি, “প্রাথমিক ভাবে আমি গিয়ে দেখেছি, সিলিন্ডারে অক্সিজেন রয়েছে। মাস্কও ঠিকঠাক রয়েছে।” তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখতে তদন্ত কমিটি গঠন করার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি। সুপার বলেন, “রোগীর পরিবার যখন এমন গুরুতর অভিযোগ করছেন, তখন হাসপাতালের প্রশাসনিক প্রধান হিসেবে উপযুক্ত তদন্তের ব্যবস্থা করা হবে। কেউ দোষী প্রমাণিত হলে উপযুক্ত পদক্ষেপও করা হবে।”
ঘটনাচক্রে, শনিবার বিকেলেই দুর্গাপুরের ইএসআই হাসপাতালে ভাঙচুর করার অভিযোগ ওঠে চিকিৎসার জন্য আসা অন্তঃসত্ত্বা এক মহিলার পরিজনদের বিরুদ্ধে। মহিলার পরিবারের অভিযোগ ছিল, কর্তব্যরত চিকিৎসক মহিলাকে ‘চড়’ মারেন। যদিও সে অভিযোগ উড়িয়ে দেন সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক। উল্টে তিনি রোগীর পরিজনদের হাতে নিগৃহীত হওয়ার অভিযোগ তুলেছিলেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy