মেমারি ২ ব্লকের বিলবাড়ি গ্রামের রাস্তা। নিজস্ব চিত্র
কড়া নাড়ছে পঞ্চায়েত ভোট। অথচ তাঁর বিধানসভা এলাকার অনেক গ্রামের দুয়ারে উন্নয়ন পৌঁছয়নি বলে অভিযোগ তুলেছেন রাজ্যের গ্রন্থাগার মন্ত্রী তথা মন্তেশ্বরের বিধায়ক সিদ্দিকুল্লা চৌধুরী। মঙ্গলবার বিকেলে মেমারির সাতগেছিয়া বাজারে একটি সভায় আত্মসমালোচনার সুর শোনা যায় তাঁর গলায়। তৃণমূলের একাংশের ধারণা, পঞ্চায়ের ভোটের আগে মেমারি ২ ব্লকে দলের রাশ নিজের দিকে টানতেই অন্য গোষ্ঠীকে উদ্দেশ্য করে এ ধরনের মন্তব্য করছেন মন্ত্রী। সিদ্দিকুল্লার মন্তব্যে অস্বস্তিতে পড়েছে দল। রাজ্য তৃণমূলের মুখপাত্র তথা জেলা পরিষদের সহ-সভাধিপতি দেবু টুডু বলেন, ‘‘দল বা প্রশাসনের সমস্যা হয়, এমন কথা প্রকাশ্যে বলা অনুচিত।’’
মেমারি ২ ব্লকের ন’টি পঞ্চায়েতের মধ্যে সাতটি (বিজুর ১ ও ২, বোহার ১ ও ২, বড়পলাশন ১, কুচুট ও সাতগেছিয়া ২) মন্তেশ্বর বিধানসভার মধ্যে রয়েছে। সে কারণে মন্তেশ্বরের বিধায়ক মেমারি ২ ব্লকে দলীয় রাজনীতি অনেকটা নিয়ন্ত্রণ করেন। ব্লক সভাপতি পরিবর্তনের পর থেকে বিধায়কের সঙ্গে প্রাক্তন ব্লক সভাপতির গোষ্ঠীর ‘দ্বন্দ্ব’ সামনে এসেছে সেখানে। এ বার গোষ্ঠী-রাজনীতি ছাড়িয়ে এলাকার উন্নয়ন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন মন্ত্রী।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ওই সভায় মন্ত্রী বলেন, ‘‘দল চাইবে গ্রামের উন্নয়ন। দল চাইবে গ্রামের মানুষের সমাধান। আমার কাছে খবর আছে, অনেক গ্রামে রাস্তা নেই, বিদ্যুৎ নেই। এ সব শুনে আমার বুকটা ফেটে যায়।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এত দিন কী করছিলে? কেন গ্রামে রাস্তা হয়নি, কেন উন্নয়ন হয়নি, সে কৈফিয়ত কিন্তু নেতাদের দিতে হবে।’’ মন্ত্রীর অনুগামীদের দাবি, পাহাড়হাটি থেকে মধুপুর সেতু, তাজপুর গ্রাম থেকে বাজেকাশিপুর গ্রাম, বিশকোপা গ্রাম, নান্নার মোড়, বিলকড়ি-সহ প্রত্যেকটি পঞ্চায়েতের অনেক গ্রামের রাস্তা চলাচলের অযোগ্য। একাধিক রাস্তা এখনও কাঁচা। আবার অনেক রাস্তায় ২০০-৩০০ ফুট ঢালাই হয়ে পড়ে রয়েছে। মন্ত্রীর ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নেতাদের অভিযোগ, ‘‘পাড়ায় সমাধান, দুয়ারে সরকারের মতো কর্মসূচিতে অভিযোগ জানানো হয়েছে। জেলা পরিষদের কর্তারা রাস্তা সংস্কারের আশ্বাস দিয়ে গিয়েছেন। কিন্তু তা বাস্তবায়িত হয়নি।’’ পঞ্চায়েত ভোটের আগে মন্ত্রীর কাছে স্থানীয় বাসিন্দারা এ নিয়ে অভিযোগ জানানোয়, তিনি প্রকাশ্যে ক্ষোভ দেখিয়েছেন বলে দাবি তাঁদের।
যদিও মন্ত্রীর অভিযোগ মানতে নারাজ দলের অনেকেই। ওই ব্লকে দলের প্রাক্তন সভাপতি মহম্মদ ইসমাইলের দাবি, ‘‘উনি (সিদ্দিকুল্লা) সম্ভবত উন্নয়ন দেখতে চাইছেন না। দেখতে চাইলেই অনুভব করতেন, কী ভাবে প্রতিটি ভোটে মানুষ আমাদের সমর্থন করছেরন।’’ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি মামনি মুর্মুরও দাবি, ‘‘উনি তো বিরোধীদের সুরে কথা বলছেন! আমাদের এলাকায় উন্নয়ন হয়েছে বলেই তো কেন্দ্রের সম্মান পঞ্চায়েতগুলি পাচ্ছে।’’
বিজেপি নেতা পলাশ মণ্ডলের কটাক্ষ, ‘‘উন্নয়ন যে হয়নি, এটা সত্যি। মন্ত্রী সম্ভবত দলের অন্য গোষ্ঠীর ঘাড়ে দোষ চাপাতে আত্মসমালোচনা করছেন। উন্নয়ন কেন হয়নি, তার জবাব তো মন্ত্রীকেও দিতে হবে।’’ সিদ্দিকুল্লা এ দিন শুধু বলেন, ‘‘যা কিছু করা হচ্ছে, সবই দল ও সংগঠনকে মজবুত করার উদ্দেশে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy