শাঁখাইয়ে এনটিপিসি-র আধিকারিকেরা। নিজস্ব চিত্র
এক মাসে ১৫ আধিকারিক বদলি হয়ে যাওয়ায় প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। কাটোয়ায় প্রস্তাবিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের এলাকা ঘুরে গিয়ে ফের আশা জাগালেন এনটিপিসির পূর্বাঞ্চলীয় ১ অধিকর্তা এস নরেন্দ্র। সোমবার কাটোয়ায় প্রকল্পটির মূল এলাকা ও কোন জায়গা দিয়ে জল প্রকল্পে আসবে, তা ঘুরে দেখেন তিনি। পরে তিনি বলেন, ‘‘প্রকল্পের জায়গা দেখে আমি খুশি। জমি নিয়ে কোনও সমস্যা নেই। কয়লার সমস্যাও মিটে যাবে। এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত করার জন্য রাজ্য সরকার ও সংস্থার পরিচালন পর্ষদের সঙ্গে কথা বলব।’’
২০০৬ সালে কাটোয়ার শ্রীখণ্ডে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগম এই প্রকল্পের কাজ শুরু করে। তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পরে ২০১২ সালের ডিসেম্বরে প্রকল্পটি এনটিপিসিকে দেওয়ার কথা হয়। ২০১৪ সালে সরকারি ভাবে রাজ্য বিদ্যুৎ উন্নয়ন নিগমের হাতে থাকা ৫৫৬ একর জমি এনটিপিসির হাতে তুলে দেওয়া হয়। তবে ৬৬০ মেগাওয়াটের দুটি ইউনিটের জন্য আরও ২৫০ একর জমির প্রয়োজন ছিল। তার মধ্যে রাজ্য সরকার প্রায় ১০০ একর জমি এনটিপিসির হাতে তুলে দেয়। বাকি ১৫০ একর জমি সরাসরি চাষিদের কাছ থেকে কিনতে শুরু করে এনটিপিসি। সংস্থার এক কর্তা বলেন, “১৩৬ একর জমি আমরা কিনে ফেলেছি। দেবত্তর সম্পত্তি ও আদালতের বিচারাধীন থাকায় ১৪ একর জমি এখনও আমাদের হাতে আসেনি। তবে প্রথম ইউনিট তৈরির জন্য জমি-জলের কোনও সমস্যা নেই।’’ প্রথম ইউনিট তৈরির চার বছরের মাথায় দ্বিতীয় ইউনিট তৈরি হয় বলেও সংস্থার দাবি।
তবে বেশির ভাগ জমি হাতে চলে এলেও টালবাহানা কাটেনি। গত বছর এই প্রকল্প থেকে জেনারেল ম্যানেজার-সহ ১৫ জন আধিকারিককে এক মাসে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়। প্রশ্ন উঠে যায় প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে। এ দিন এনটিপিসির পূর্বাঞ্চলীয় ১ অধিকর্তা-সহ তিন সদস্যের একটি দল কাটোয়া প্রকল্প ঘুরে যাওয়ায় অবশ্য ফের আশা দেখা দিয়েছে।
এ দিন বিকেলে ওই তিন সদস্যের দল প্রথমে শ্রীখণ্ডে সংস্থার মূল অফিসে আসেন। সেখান থেকে কাটোয়া শহরের ভিতর দিয়ে শাঁখাই ঘাটে যান। তারপর নৌকা করে শাঁখাইয়ে গিয়ে ভাগীরথী থেকে কী ভাবে জল প্রকল্প এলাকায় যাবে, তা জানতে চান। সংস্থার আধিকারিকেরা জানান, ওই এলাকায় ভাগীরথী ও অজয় মিশেছে। অজয়ের উপর সেতু তৈরি করে পাইপ লাইন দিয়ে ভাগীরথীর জল তুলে প্রকল্প এলাকায় নিয়ে যাওয়া হবে। কয়লা ও পরিবেশ বিধির সমস্যা নিয়েও কথা হয়। প্রকল্প এলাকা ঘুরে দেখার পর স্থানীয় আধিকারিকদের সঙ্গে রাত পর্যন্ত বৈঠক করেন এস নরেন্দ্র। কর্তারা জানান, পুরোটাই কৃষি জমি। টাকা নেওয়ার পর এক জন চাষিও জমিতে পা রাখেননি। ফলে খুব সহজেই জমি ঘেরা গিয়েছে।
জানা গিয়েছে, কয়লা-জটে এনটিপিসির দিল্লির বদরপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ইউনিট বন্ধ হওয়ার মুখে। কাটোয়াতেও বছরে ৮০ লক্ষ টন কয়লা লাগবে। কয়লা পাওয়ার জন্য মন্ত্রকের কাছে আবেদন করেছে এনটিপিসি। দেউমা-পাঁচামির খনি থেকেও কাটোয়া প্রকল্পের জন্য কয়লা মেলার আশা করছেন কর্তারা। এস নরেন্দ্র বলেন, ‘‘কয়লার সমস্যা খুব দ্রুত মিটে যাবে।’’ কয়লা জট মিটে গেলে পরিবেশ মন্ত্রকের ছাড়পত্র পেতেও সময় লাগবে না।
রাজ্যের বিদ্যুৎ মন্ত্রী শোভনদেব চট্টোপাধ্যায় বলেন, “কাটোয়া প্রকল্পের জন্য মুখ্যমন্ত্রী জমির ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। কর্মী তুলে নেওয়ার সময় আমরা দু’বার সংস্থার কর্তাদের ডেকে পাঠিয়ে কথা বলেছি। যত দ্রুত প্রকল্পের কাজ শুরু হবে ততই ভাল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy