সন্ধ্যা নামলেই এমনই হাল সিটি বাসস্ট্যান্ডের। নিজস্ব চিত্র।
মাস তিনেক আগেও বৈঠক হয়েছিল। পরিকল্পনা ছিল, যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের লক্ষ্যে নানা উন্নয়নমূলক কাজ করা হবে। কিন্তু এ পর্যন্ত আসানসোল সিটি বাসস্ট্যান্ডে সে সব কাজ শুরু করতে পারেনি আসানসোল পুরসভা, এমনই অভিযোগ যাত্রী, বাস মালিক এবং শ্রমিক সংগঠনগুলির।
সংশ্লিষ্ট সব পক্ষেরই অভিযোগ, স্ট্যান্ডে যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্যের ব্যবস্থা না থাকায় হয়রান হতে হয় যাত্রীদের। অথচ, পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, সিটি বাসস্ট্যান্ডের উন্নয়ন নিয়ে গত কয়েক বছরে বার বার বৈঠক হয়েছে। গত অগস্টে সর্বশেষ বৈঠকটি হয়। তৎকালীন পুর-প্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য অভিজিৎ ঘটক ও পূর্ণশশী রায়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি গড়ে কিছু উন্নয়নমূলক কাজের খসড়াও তৈরি করা হয়েছিল। কিন্তু তার পরেও কাজ কিছু হয়নি।
যাত্রীরা জানান, এই পরিস্থিতিতে বারো মাসই খোলা আকাশের নীচে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কিছু অংশে এক চিলতে ছাউনি থাকলেও, তা-ও ভেঙে গিয়েছে। নেই পর্যাপ্ত পানীয় জলের ব্যবস্থা। শৌচাগারও বেহাল। এমনকি, সন্ধ্যার পরে, আলো না থাকায় ঘুটঘুটে অন্ধকারে ঢাকে স্ট্যান্ড। নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন ওঠে। রানিগঞ্জের বাসিন্দা, বাসযাত্রী সৌমিত্র শিকদার বলেন, “আসানসোল জেলা সদর। সেই শহরের বাসস্ট্যান্ডের এই হাল কোনও ভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। পুরসভার দ্রুত পদক্ষেপ
করা দরকার।”
তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠন আইএনটিটিইউসি অনুমোদিত ‘আসানসোল সাব-ডিভিশনাল মোটর ট্রান্সপোর্ট ইউনিয়ন’-এর সম্পাদক রাজু অহলুওয়ালিয়াও জানান, স্ট্যান্ডের সব ক’টি গেট ভেঙে গিয়েছে। ফলে, সন্ধ্যা নামলে ঠেলা, রিকশা থেকে ব্যক্তিগত গাড়ি, মোটরবাইক পার্কিং করা হচ্ছে স্ট্যান্ডে। তাঁর অভিযোগ, “পর্যাপ্ত আলো না থাকায় অসামাজিক কাজও হচ্ছে বাসস্ট্যান্ড চত্বরে। আমরা দ্রুত স্ট্যান্ডটির উন্নয়নের দাবি জানিয়েছি।” সিটু নেতা পার্থ মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “পরিকল্পনার অভাব ও প্রশাসনিক ব্যর্থতার জন্য স্ট্যান্ডটির এই হাল।”
বাস ও মিনিবাস মালিক সংগঠনগুলি জানিয়েছে, স্ট্যান্ডের উন্নয়নের জন্য প্রায় ১৩ বছর আগে পুরসভার উদ্যোগে একটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি তৈরি করা হয়েছিল। পুরসভা, বাস মালিক ও পরিবহণ কর্মী সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের কমিটিতে রাখা হয়। স্ট্যান্ডের যাবতীয় উন্নয়মমূলক কাজ ওই কমিটি করত। উন্নয়নমূলক কাজের খরচ জোগাতে প্রায় ৪৫০টি মিনিবাস এবং ৪২০টি বড়বাস থেকে দৈনিক ১০ টাকা করে কমিটির তহবিলে জমা করা হত। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বাস মালিকেরা জানান, বছর পাঁচেক আগে তৎকালীন পুরসভা ওই কমিটি ভেঙে দেয়। তার পরে থেকেই এই হাল। ‘আসানসোল মিনিবাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সাধারন সম্পাদক সুদীপ রায় ও ‘বাস অ্যাসোসিয়েশন’-এর সম্পাদক বিজন মুখোপাধ্যায়ের ক্ষোভ, “স্ট্যান্ডের দ্রুত উন্নয়ন জরুরি। বৈঠকে সে কথা জানালেও লাভ হয়নি এখনও।”
আসানসোলের পুর-প্রশাসক অমরনাথ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য বলেন, “বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। দ্রুত কাজ শুরু হবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy