দুর্গাপুরে শিবির। নিজস্ব চিত্র।
কেন্দ্রীয় বিভিন্ন প্রকল্পের সুবিধা সরাসরি মানুষের হাতে পোঁছে দিতে বুধবার দুর্গাপুরের নতুনপল্লিতে ‘বিকশিত ভারত' শিবিরের আয়োজন করা হয়। উদ্বোধন করেন বর্ধমান-দুর্গাপুরের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। ছিলেন বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক, গ্যাস সংস্থার প্রতিনিধিরা। লোকসভা ভোটের আগে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার পরিষেবা নিয়ে এমন শিবিরকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা।
সারা দেশে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মসূচিগুলির সুফল মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে ১৫ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডে ‘বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা’র সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশের প্রতিটি লোকসভা কেন্দ্রে স্থানীয় সাংসদদের উদ্যোগে আয়োজিত হচ্ছে এই শিবির। মুদ্রা ঋণ, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা, জনধন যোজনা, জীবনজ্যোতি যোজনা, বিশ্বকর্মা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী স্বনিধি যোজনা-সহ কেন্দ্রের বিভিন্ন প্রকল্পের দ্রুত পরিষেবার ব্যবস্থা করা হয় ওই শিবিরে। এ ছাড়া, ভ্রাম্যমাণ গাড়ির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই গাড়ি গ্রামে গ্রামে গিয়ে পরিষেবা পৌঁছে দেবে।
সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়ার দাবি, বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পের আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে। তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে পরিষেবা দেওয়া হয়েছে। শিবিরে বহু জন হাতে হাতে ঋণ পেয়েছেন। জানা গিয়েছে, এই শিবিরে বিভিন্ন প্রকল্পে ১ লক্ষ থেকে সাড়ে ৭ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনার জন্য প্রায় সাতশো জনের আবেদন নেওয়া হয়েছে। সাংসদ বলেন, ‘‘আমাদের লক্ষ্য, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের পরিষেবা ঘরে ঘরে পৌঁছে দেওয়া।’’
লোকসভা ভোট যখন দোরগোড়ায়, এমন সময়ে এই শিবির নিয়ে কটাক্ষ করছে কেন্দ্রের শাসক দলের বিরোধীরা। সিপিএমের জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য পঙ্কজ রায় সরকারের কথায়, ‘‘প্রকল্পের শেষ নেই! আসলে সব আছে খাতায়-কলমে। প্রকৃত প্রাপকেরা বঞ্চিতই রয়ে যান। উজ্জ্বলা যোজনার গ্যাসের সংযোগ অনেকেই নিয়েছিলেন। গ্যাসের দাম যা বেড়েছে, আর কেউ সিলিন্ডার কিনতে পারেন না।’’ তাঁর দাবি, লোকসভা ভোট আসছে বলেই এমন উদ্যোগ। তৃণমূলের জেলা সহ-সভাপতি উত্তম মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘এত দিন কোথায় ছিলেন সাংসদ? লোকসভা ভোট আসছে দেখে উদয় হয়েছেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দুয়ারে সরকার শিবিরের সাফল্য দেখে এ সব করছেন ওঁরা। তাতে লাভ হবে না। মানুষ সব বোঝেন।’’
বিজেপি নেতৃত্বের দাবি, কেন্দ্রের তথ্য-পরিসংখ্যান দেখলেই বোঝা যাবে, কেন্দ্রীয় প্রকল্পের সুবিধায় কত মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হয়েছে। আরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছতেই এই শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে। তৃণমূল নেতা উত্তমের পাল্টা দাবি, ‘‘আগে একশো দিনের বকেয়া মেটাক কেন্দ্র। তা না হলে গ্রামে এই ভ্রাম্যমাণ গাড়ি গেলে মানুষ তা আটকে বিক্ষোভ দেখাবেন।’’ বিজেপির অন্যতম রাজ্য সম্পাদক তথা দুর্গাপুর পশ্চিমের বিধায়ক লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের হুঁশিয়ারি, ‘‘মানুষের কাজে কেউ বাধা দিলে যথোপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy