প্রতীকী ছবি।
অনলাইনে প্রতারণা করে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল ভিন্ রাজ্যে। সেখান থেকে টাকা পাঠানো হয় মুর্শিদাবাদের একটি অ্যাকাউন্টে। কালনার ব্যাঙ্কের শাখা থেকে এক গ্রাহকের ফিক্সড ডিপোজ়িটের টাকা উধাওয়ের অভিযোগের তদন্তে নেমে এমন তথ্যই হাতে এসেছে বলে জানাল পুলিশ। কে বা কারা অনলাইনে এই অ্যাকাউন্ট ও টাকা সরানোর কাজ করেছে, তা খোঁজ চলছে বলে তদন্তকারীরা জানান।
কালনা শহরের কাঁসারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা মিতালি বসুরায় সম্প্রতি কালনা থানায় লিখিত অভিযোগ করেন, ২০১৯ সালের ২০ এপ্রিল শহরের ভাদুরিপাড়ার একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের শাখায় তিনি এক লক্ষ টাকা ফিক্সড ডিপোজ়িট করেন। কিছু দিন আগে ব্যাঙ্ক থেকে জানতে পারেন, ২০২০ সালের ২৩ জুন ওই টাকা অনলাইন মারফত কেউ তুলে নিয়েছে। এর পরেই কালনার মধুবন এলাকার বাসিন্দা, অবসরপ্রাপ্ত সরকারি কর্মী ধীরেন্দ্রনাথ দাস পুলিশে অভিযোগ করেন, ওই ব্যাঙ্কের শাখায় তাঁর ফিক্সড ডিপোজ়িটের ২ লক্ষ টাকাও মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার আগে কে বা কারা অনলাইনে তুলে নিয়েছে। পর পর এমন অভিযোগ ওঠায় গ্রাহকদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, প্রথম ঘটনাটির তদন্তে নেমে তারা জানতে পারে, মিতালিদেবী ব্যাঙ্কে বিশেষ যাতায়াত করতেন না। প্রতারকেরা প্রথমে তাঁর অ্যাকাউন্টটি অনলাইনে ওই ব্যাঙ্কের কেরলের একটি শাখায় সরিয়ে নিয়ে যায়। এর পরে, ফিক্সড ডিপোজ়িটের টাকা অনলাইনে আবেদন করে অ্যাকাউন্টে নেওয়া হয়। সেখান থেকে টাকা পাঠিয়ে দেওয়া হয় মুর্শিদাবাদের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। ওই অ্যাকাউন্টে এখন ৮৪ হাজার টাকা রয়েছে। কালনা থানার তরফে ওই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করে অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা তোলার প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেওয়া হয়।
পুলিশ জানায়, তদন্তে জানা যায়, মুর্শিদাবাদের ওই অ্যাকাউন্টটি রয়েছে ঝাড়গ্রামের সেবাইতনগর এলাকার এক বাসিন্দার নামে। তাঁর সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা হয়। পুলিশকে তিনি জানান, তাঁর অ্যাকাউন্টটি ছিল ঝাড়গ্রামে ব্যাঙ্কের শাখায়। তাতে দশ হাজারের কম টাকা ছিল। এখন তিনি সে টাকা তুলতে পারছেন না। পুলিশের দাবি, ওই ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, প্রতারকেরা তাঁর অ্যাকাউন্টটিও অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে গিয়ে সেটির মাধ্যমে লেনদেন করেছে।
পুলিশের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘কারা এই প্রতারণার পিছনে রয়েছে, তা জানতে সাইবার সেলের সহযোগিতা চাইছি। আশা করছি, দ্রুত কিনারা হবে।’’ তিনি জানান, মুর্শিদাবাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট থেকে টাকা উদ্ধার করা গেলে মিতালিদেবীর হাতে তুলে দেওয়া হবে। এ ব্যাপারে আদালতের অনুমতি নেওয়ার বিষয় রয়েছে।
কালনার ওই ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা জানান, অনলাইনের মাধ্যমে একই ব্যাঙ্কের অন্য শাখায় অ্যাকাউন্ট স্থানান্তর করা যায়। ফিক্সড ডিপোজ়িটের টাকাও তোলা সম্ভব। ফিক্সড ডিপোজ়িটের টাকা উধাওয়ের পর পর দু’টি অভিযোগের পরে, তাঁদের ফিক্সড ডিপোজ়িট সুরক্ষিত আছে কি না, তা নিয়ে গ্রাহকদের অনেকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তবে ব্যাঙ্কের ওই শাখার ম্যানেজার ইন্দ্রজিৎ মজুমদারের দাবি, ‘‘ওই দু’টি ব্যতিক্রমী ঘটনা। গ্রাহকদের অর্থ সুরক্ষিত রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy