—প্রতীকী চিত্র।
খনি-শিল্পাঞ্চলে পর পর ‘জামতাড়া গ্যাং’-এর সদস্য ধরা পড়ার পরে দু’টি বিষয় নিয়ে উদ্বেগ বেড়েছে পুলিশ মহলে। প্রথমত, এই দুষ্কৃতীরা স্থানীয় যুবকদেরও তাদের দলে শামিল করছে। দ্বিতীয়ত, বার বার বলার পরেও ভাড়া দেওয়ার ক্ষেত্রে বাড়ির মালিকেরা সতর্ক হচ্ছেন না।
পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, পাড়ার ভিতরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে কখনও শুধু নিজেরা, কখনও বা স্থানীয় যুবকদের ‘কাজ’ শিখিয়ে নিয়ে কারবার চালাচ্ছে জামতাড়ার যুবকেরা। আসানসোলের হিরাপুরে জামতাড়া গ্যাংয়ের দুই সদস্যের সঙ্গে ধরা পড়ে জামুড়িয়ার এক যুবক। আবার সম্প্রতি দুর্গাপুরের ফরিদপুরের (লাউদোহা) ইছাপুরে ‘জামতাড়া গ্যাং’-এর সদস্য সন্দেহে ধৃত সরোজ দাসের সঙ্গে আরও যে দুই যুবক ধরা পড়ে, তাদের এক জনের বাড়ি লাগোয়া সরপি মোড়ে এবং অন্য জন দুর্গাপুর শহরের অমরাবতীর বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, স্থানীয় দুই যুবককে সাইবার অপরাধের কাজ শিখিয়েছে সরোজই। এর পরে তিন জনে কারবার চালাত।
এ ভাবে স্থানীয় যুবকদের প্রভাবিত করে দলে টানার ঘটনা নিয়ে দুশ্চিন্তা তৈরি হয়েছে এলাকায়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ইছাপুরের এক বাসিন্দা বলেন, ‘‘ঘরে বসে সহজে অনেক টাকা কামানোর লোভ কর্মহীন যুবকদের পক্ষে অস্বীকার করা কঠিন। ধরা পড়ার ভয় যে প্রতি মুহূর্তে রয়েছে, তা আর তখন মাথায় থাকে না।’’ পুলিশের এক আধিকারিক জানান, সাইবার প্রতারণা নিয়ে স্কুল, কলেজ, আবাসন সহ নানা জায়গায় মাঝে মাঝেই সচেতনতা শিবির করা হয়ে থাকে। কোনও ভাবেই কেউ যেন প্রতারিত না হন বা কেউ প্রতারণা চক্রে জড়িয়ে না পড়েন, সে বিষয়ে সচেতন করা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, ‘‘তা সত্বেও অনেকে প্রতারিত হন। আবার ইদানীং প্রতারণা চক্রে জড়িয়ে যাওয়ার ঘটনাও সামনে আসছে। এর বিরুদ্ধে সবাইকে এগিয়ে আসতে হবে।’’
পুলিশ সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, পর পর ভাড়া বাড়ি থেকে জামতাড়ার সদস্যদের গ্রেফতারের ঘটনায় একটা বিষয় পরিষ্কার, অনেক বাড়ির মালিকই অর্থের লোভে ভাড়াটিয়াদের পরিচয় কোনও রকম যাচাই না করেই ভাড়া দিচ্ছেন। এর ফলে তিনি শুধু নিজের বিপদ ডেকে আনছেন তাই নয়, পাড়ার নিরাপত্তাও বিঘ্নিত করার পরিস্থিতি তৈরি করছেন। পুলিশের তরফে বার বার এ বিষয়ে সচেতন করা হয় বাড়ির মালিকদের। কোনও কোনও থানা এলাকায় এক সময়ে বাড়ির মালিকদের ভাড়া দেওয়ার সময় বিষয়টি থানাকে জানানোর পদ্ধতিও চালু করা হয়েছিল। দুর্গাপুর শহরে এক সময় পুলিশের তরফে বাড়ির মালিকদের জন্য বিশেষ ফর্মের ব্যবস্থা করা হয়েছিল, যা পূরণ করে থানায় জমা দিতে হত। এর ফলে ভাড়াটিয়া সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য পুলিশের কাছে থাকত। অপরাধমূলক কোনও কাজে ভাড়াটিয়া জড়িয়ে পড়লে সহজেই পুলিশ পাকড়াও করতে পারত। কিন্তু নানা কারণে সেই সব ব্যবস্থা থমকে গিয়েছে।
এ সবের দিকে নজরদারি হচ্ছে না কেন? পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিকের দাবি, প্রতিটি থানায় বহু শূন্যপদ। কাজের চাপ বাড়ছে। দৈনন্দিন কাজ সামলে বাড়ির মালিকদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখা কার্যত অসম্ভব হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই পরিস্থিতিতে বাড়ির মালিকদেরই সতর্ক থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন তিনি। তাঁর কথায়, ‘‘তেমন কিছু ঘটলে বাড়ির মালিকও কিন্তু আইনের হাত থেকে রেহাই পাবেন না। তাই তাঁদের নিজেদের স্বার্থেই ভাড়াটিয়াদের ব্যাপারে সতর্ক থাকা এবং পুলিশকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy