Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Madhyamik

Madhyamik: টেস্ট দিতে স্কুলে ‘বালিকা বধূ’রা

গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিকের টেস্ট। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে প্রথম দিন ১০১ জন পরীক্ষা দেয়।

চলছে পরীক্ষা।

চলছে পরীক্ষা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
গুসকরা শেষ আপডেট: ১৮ ডিসেম্বর ২০২১ ০৮:২২
Share: Save:

মাস খানেকের মধ্যেই ওদের বিয়ে হয়েছে। কারও বিয়ে বাড়ি থেকে ঠিক করা হয়েছিল, কেউ আবার নিজের ইচ্ছেয় বাড়ি থেকে পালিয়ে গিয়ে বিয়ে করেছে। কেউ শ্বশুরবাড়িতে থাকায় পরীক্ষার কথা জানত না, কেউ আবার বাপের বাড়িতে থেকেও পরীক্ষা দিতে লজ্জায় স্কুলমুখো হতে চায়নি। বিয়ে হয়ে যাওয়া এমনই চার জন ছাত্রী শিক্ষক-শিক্ষিকাদের ডাকে শুক্রবার গুসকরার সুশীলা যজ্ঞেশ্বর পাবলিক হাইস্কুলে এসে মাধ্যমিকের টেস্ট দিল।

গত মঙ্গলবার থেকে শুরু হয়েছে মাধ্যমিকের টেস্ট। স্কুল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১৫৬ জন পড়ুয়ার মধ্যে প্রথম দিন ১০১ জন পরীক্ষা দেয়। বাকিদের স্কুলে আনতে শিক্ষক-শিক্ষিকারা লক্ষ্মীগঞ্জ, ধারাপাড়ার মতো বিভিন্ন গ্রামে যান।

স্কুলের টিচার-ইন-চার্জ জয়দীপ দাস বলেন, “দীর্ঘদিন স্কুল বন্ধ থাকায় অনেক পড়ুয়া কাজে নেমে পড়েছে। ছাত্রীদের অনেকে আবার বিয়ের পরে শ্বশুরবাড়ি চলে গিয়েছে। যে পড়ুয়ারা শ্বশুরবাড়িতে রয়েছে, তাদের পরীক্ষার জন্য ফিরিয়ে আনতে বাবা-মায়েদের অনুরোধ করেছিলাম। আমাদের কথা শুনে এ দিন বিবাহিত অনেক পড়ুয়াই স্কুলে এসে পরীক্ষা দিয়েছে।’’ স্কুলে সূত্রে জানা গিয়েছে, বিয়ে হয়ে যাওয়া আরও কয়েকজন পড়ুয়া এ দিনও স্কুলে আসেনি।

পরীক্ষায় বসা ওই পড়ুয়াদের এক জন বলেন, ‘‘বিয়ের পরে, বাপেরবাড়িতেই ছিলাম। কিন্তু ভয় ও লজ্জায় স্কুলে যেতে পারিনি। শিক্ষক-শিক্ষিকারা বাড়িতে এসে স্কুলে যেতে বলায় ভয়-লজ্জা সরিয়ে রেখে এ দিন পরীক্ষা দিতে যাই।’’ আর এক বিবাহিত ছাত্রীর কথায়, ‘‘বাড়ির অমতে নিজের ইচ্ছেয় বিয়ে করেছিলাম। বিয়ের পরে, সে ভাবে পড়াশোনা কিছু হয়নি। স্কুলে যেতে লজ্জাও লাগছিল। পরে, স্কুলের এক শিক্ষিকা বাড়িতে এসে পরীক্ষা দিতে বলেন। ভাবছি, লেখাপড়া বন্ধ করব না।’’

এ দিন শ্বশুরবাড়ি থেকে সরাসরি স্কুলে পরীক্ষা দিতে এসেছিল এক ছাত্রী। সে বলেন, ‘‘শিক্ষকেরা বাড়িতে এসে পরীক্ষা দিতে আসতে বলেছিলেন। বাড়ি থেকে ফোনে সে কথা জানতে পেরে পরীক্ষা দিতে এসেছি। পরীক্ষার ক’দিন বাপের বাড়িতে থেকেই স্কুলে আসব।’’

আগে হয়ে যাওয়া বিষয়গুলির পরীক্ষাও যাতে তারা দিতে পারে, সে জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করা হবে বলে জয়দীপ জানিয়েছেন। তাঁর বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই না, কোনও ভাবেই যেন ওদের একটা বছর নষ্ট হয়।’’

মহকুমাশাসক (বর্ধমান দক্ষিণ) তীর্থঙ্কর বিশ্বাস বলেন, “ওই ছাত্রীরা যাতে বাড়িতে থেকেই পড়াশোনা করতে পারে, সেই ব্যবস্থা হবে। পুরসভার সঙ্গে কথা বলে ওই সব ছাত্রীর বাড়িতে প্রশাসনিক দল পাঠিয়ে বোঝানো হবে।”

গুসকরার পুরপ্রশাসকমণ্ডলীর সদস্য, তৃণমূলের শহর সভাপতি কুশল মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষকদের ওই উদ্যোগ খুবই প্রশংসনীয়। মেয়েগুলির পড়াশোনা যাতে বন্ধ না হয়, সে জন্য ওদের পরিবারের সঙ্গে আমরা যোগাযোগ রাখব।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Madhyamik test examination Married life
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy