ঘর পাওয়ার যোগ্য নন, এমন অনেকের নাম উপভোক্তাদের তালিকায় জায়গা পেয়েছেন। —প্রতীকী চিত্র।
আবাস যোজনার উপভোক্তাদের তালিকা নিয়ে তৈরি বিতর্কে তপ্ত হয়েছে বঙ্গ রাজনীতি। ঘর পাওয়ার যোগ্য নন, এমন অনেকের নাম উপভোক্তাদের তালিকায় জায়গা পেয়েছে, এই অভিযোগ তুলে রাজ্যের শাসক দলকে লাগাতার নিশানা করে চলেছে বিরোধীরা। আউশগ্রাম ১ ব্লকের দিগনগর ২ পঞ্চায়েতের প্রধান সবিতা মাহাতোর স্বামী পরশুরাম মাহাতোর নাম উপভোক্তাদের তালিকায় ঠাঁই পেয়েছিল। পরশুরাম আবার ওই অঞ্চলের তৃণমূল সভাপতি। পরে ব্লক প্রশাসনের কাছে চিঠি লিখে প্রধান তালিকায় থাকা তাঁর স্বামীর নাম বাদ দেওয়ার আবেদন জানান। এ বার প্রকাশ্যে এল, সরকারি আবাস যোজনায় ঘর পাওয়ার যোগ্য না হলেও উপভোক্তাদের তালিকায় নাম রয়েছে ওই পঞ্চায়েতেরই বাসিন্দা, এক তৃণমূল ছাত্রনেতার। একের পর এক অযোগ্যদের নাম কী করে আবাস-তালিকায় থাকছে, সেই প্রশ্ন তুলেছে বিরোধীরা।
আবাস যোজনার উপভোক্তাদের তালিকায় নাম রয়েছে আউশগ্রাম ১ ব্লক তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি, দিগনগর ২ পঞ্চায়েতের গোপীনাথবাটীর বাসিন্দা তন্ময় গোস্বামীর বাবার। তবে বৃহস্পতিবার আউশগ্রাম ১ ব্লকের বিডিও-র কাছে লিখিত ভাবে তন্ময় জানিয়েছেন, তাঁরা ঘর নিতে চান না। তন্ময় জানান, বাংলা আবাস যোজনার তালিকায় তাঁর বাবা প্রভাত গোস্বামীর নাম রয়েছে। সমীক্ষার কাজে তাঁর বাড়িতে এসেছিলেন সরকারি কর্মীরা। তিনি বলেন, “আমি এখন বাংলা সহায়তা কেন্দ্রে ‘ডেটা এন্ট্রি অপারেটর’ পদে কর্মরত। অগস্টে পাকা বাড়ি তৈরির কাজ শুরু করেছি। আমাদের বর্তমান আর্থিক মাপকাঠিতে আমরা সরকারি বাড়ি পাওয়ার যোগ্য নই। তা-ই বিডিও-র কাছে বাড়ি না নেওয়ার সিদ্ধান্ত লিখিত আকারে জানিয়েছি।” তন্ময় জানান, তাঁর বাবা একটি কীটনাশক সংস্থার দোকানের কর্মী। যখন সমীক্ষা হয়, তখন তাঁদের পাকা বাড়ি ছিল না। সে সময়ে তন্ময়ের চাকরি ছিল না।
ডিওয়াইএফআইয়ের গুসকরা পূর্ব এরিয়া কমিটির সম্পাদক পীযূষ পালের দাবি, “তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের নাম কী ভাবে তালিকায় এসেছিল, তা খতিয়ে দেখার দাবি জানাচ্ছি। তালিকায় প্রকৃত গরিব মানুষের নাম নেই।” তবে আউশগ্রামের তৃণমূল বিধায়ক অভেদানন্দ থান্দারের দাবি, “কেন্দ্রীয় সরকার আবাস যোজনার টাকা দেওয়া বন্ধ করার পরে, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় গরিব মানুষের মাথায় ছাদের ব্যবস্থা করেছেন। সেই মতো সমীক্ষার কাজ চলছে। এই কাজে দল হস্তক্ষেপ করছে না। যোগ্যরাই বাড়ি পাবেন। আমাদের দলের নেতারাও যোগ্য না হলে বাদ পড়বেন।”
ঘর না নেওয়ার আর্জি জানানোকে সাধুবাদ জানিয়েছেন বিডিও (আউশগ্রাম ১) শেখ কামরুল ইসলাম। কী করে অযোগ্যদের নাম তালিকায় জায়গা পেয়েছিল, সেই প্রশ্নের উত্তরে বিডিও বলেন, ‘‘২০১৮-এ একটি সমীক্ষা হয়। সেই সমীক্ষা অনুযায়ী এই তালিকা তৈরি হয়। হয়তো তখন কোনও ব্যক্তি যোগ্য ছিলেন। পরে তাঁর আর্থিক অবস্থার উন্নতি হয়েছে। তবে তালিকায় থাকলেই যে আবাস যোজনার বাড়ি পাওয়া যাবে এমন নয়। প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মী ও আধিকারিকেরা দফায় দফায় সেই তালিকা যাচাই করবেন। তার পরেই যোগ্য প্রাপকের তালিকা প্রকাশ করা হবে। তাতেও যদি কারও আপত্তি থাকে, তা-ও খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy