Advertisement
২২ নভেম্বর ২০২৪
Kalna

শহরের ‘দখল’ নিয়েছে টোটো আর দোকান

ক্রমশ ঘিঞ্জি হয়ে আসা কালনা শহরের বেশির ভাগ রাস্তা দিয়ে দিন রাত ঝাঁকে ঝাঁকে টোটো ছোটে। যানজটে হাঁসফাঁস করতে হয় শহরের বাসিন্দাদের।

একে সরু রাস্তা, তার উপর ফুটপাত দখল করে দোকান।

একে সরু রাস্তা, তার উপর ফুটপাত দখল করে দোকান। — নিজস্ব চিত্র।

কেদারনাথ ভট্টাচার্য
কালনা শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৪ ০৬:৫৮
Share: Save:

সরু রাস্তা, ঘিঞ্জি গলি। তার মধ্যে দোকান উপচে জিনিস এসে জড়ো হয়েছে রাস্তায়। ঠেলে, ধাক্কা দিয়েছে চলছে টোটো, বাইক, রিকশা। কালনা শহর জু়ড়ে যেন আওয়াজ, ‘ঠাঁই নাই, ঠাঁই নাই...’।

ক্রমশ ঘিঞ্জি হয়ে আসা কালনা শহরের বেশির ভাগ রাস্তা দিয়ে দিন রাত ঝাঁকে ঝাঁকে টোটো ছোটে। যানজটে হাঁসফাঁস করতে হয় শহরের বাসিন্দাদের। তাঁদের দাবি, যানজট তো আছেই, সঙ্গে সরকারি জমি দখল করে নির্মাণ, পুকুর ভরাট, স্বল্প বৃষ্টিতে জল জমা, যানবাহন রাখার পার্কিং, গ্রীষ্মে কয়েকটি ওয়ার্ডে পানীয় জল কম মেলা, অবাধে রাস্তাঘাটে গরু চরা, রাতে দ্রুত গতিতে মোটরবাইকের দাপাদাপির মতো সমস্যাও রয়েছে। অথচ প্রশাসন নির্বিকার।

ভাগীরথী পাড়ের এই শহরের ১৮টি ওয়ার্ডে প্রায় ৬০ হাজার মানুষের বাস। দোকান, বাজার, কলেজ, আদালত-সহ নানা প্রয়োজনে আশপাশেরগ্রাম থেকে বহু মানুষ আসেন। বেশ কিছু পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শন থাকায় পর্যটকদের ভিড়ও রয়েছে। কিন্তু বেআইনি দখলদারিতে শহরের প্রাণটাই যেন নেই। বছর সাতেক আগে পুরসভা এবং মহকুমা প্রশাসন শহর দখলমুক্ত করতে এগিয়ে আসে। কলেজ চত্বর এবং স্টেডিয়াম মার্কেটের পাশে ফুটপাত দখল করে থাকা বেশ কিছু ব্যবসাদারকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয় পুরনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায়। পিচের ফুটপাত তৈরি করে রাস্তার পাশে থাকা বেশ কিছু দোকানের সামনের অংশ সরিয়ে দেওয়া হয়। তবে নজরদারির অভাবে পরিস্থিতি যে কে সেই। এর সঙ্গে গত বছর পাঁচেক ধরে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে টোটো।মূল রাস্তা, অলিগলি সর্বত্র গিজগিজ করছে টোটো। গ্রামাঞ্চল থেকে যাত্রী এবং পণ্য নিয়ে শহরে অবিরাম আসাযাওয়া রয়েছে টোটোর। পুরসভা অনুমোদিত টোটোর সংখ্যা যেখানে ৪১৪টি।সেখানে শহরের রাস্তায় প্রতিদিন ঘোরাফেরা করে অন্তত আড়াই হাজার টোটো। প্রয়োজনের তুলনায় স্ট্যান্ড না থাকায় বহু টোটো রাস্তার পাশে দাঁড় করানো থাকে। আবার বহু টোটো রাস্তা জুড়ে দাঁড়িয়ে মালপত্র এবং যাত্রী ওঠানো-নামানো করে।

শহরের এক বাসিন্দা তন্ময় মণ্ডল বলেন, ‘‘কালনা থানার সামনের অংশ, বেশ কিছু শপিং মল, বড় ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের সামনে সার দিয়ে যানবাহন রাখা থাকে। চকবাজার, সোনাপট্টি, কলেজ মার্কেট, তেঁতুলতলা, হিন্দু বালিকা বিদ্যালয়, রাজ স্কুল, অম্বিকা মহি মর্দ্দিনী উচ্চ বিদ্যালয়, কালনা কলেজ সামনে প্রতিদিন যানজটে নাকাল হতে হয়।’’ আর এক বাসিন্দা রমা ঘোষের দাবি, ‘‘শহরে ট্রাক ঢুকলে যানজট বেড়ে যায়। ব্যস্ত সময়ে কেন পণ্যবাহী ট্রাক ঢুকে রাস্তা জুড়ে দাঁড়াব, ভেবে পাই না।’’ মুখ্যমন্ত্রী সব পুরসভাকে বার্তা দেওয়ার পরেও প্রশাসনের নড়াচড়া নেই বলে অভিযোগ তাঁর।

কালনার মহকুমা শাসক শুভম আগরওয়াল জানান, ১ জুলাই শহরের পরিবহণ-সহ নানা সমস্যা নিয়ে বৈঠক ডাকা হয়েছে। সেখানেই আলোচনা হবে।

এর সঙ্গেই কয়েক ঘণ্টা ভারী বৃষ্টি হলেই কামারশালা গলি, আদালতমুখী রাস্তা, বৈদ্যপুর মোড়, ভারত সেবাশ্রমের সামনে জল জমে যায়, দাবি শহরবাসীর। কিছু বাড়িতেও জল ঢুকে যায়। পুকুর বোজানো, মজে যাওয়া, নিকাশির সমস্যা রয়েছে বলেও দাবি করেন তাঁরা।

কালনার উপ-পুরপ্রধান তপন পোড়েন বলেন, ‘‘যানজটের সমস্যা নিয়ে মহকুমাশাসকের বৈঠকে বিস্তারিত আলোচনা হবে। বাকি সমস্যা সমাধান করতে পুরসভা তৎপর।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Kalna crowd Shops
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy