Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Vishwakarma Puja 2024

আড়ম্বর ছাড়াই বিশ্বকর্মা পুজো আয়োজন বহু উদ্যোক্তার

বিশ্বকর্মা পুজোয় এ বার নিয়মরক্ষার আয়োজন আসানসোলের দুই হাসপাতালেও। জেলা হাসপাতাল চত্বরে এ বার অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের পুজো করার অনুমতি দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আসানসোল জেলা হাসপাতালে পুজো।

আসানসোল জেলা হাসপাতালে পুজো। —নিজস্ব চিত্র।

নীলোৎপল বিশ্বাস, সুশান্ত বণিক
রানিগঞ্জ ও আসানসোল শেষ আপডেট: ১৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ ০৮:১৬
Share: Save:

কারখানা বন্ধ প্রায় ৯ মাস। তবু পুজো হোক, আর্জি ছিল শ্রমিক-কর্মীদের। রানিগঞ্জের বল্লভপুর কাগজকলে মঙ্গলবার বিশ্বকর্মা পুজো আয়োজন হয় ছোট আকারে। সেখানে দাবি ওঠে, ফের চালু করা হোক কারখানা। সাম্প্রতিক পরিস্থিতিতে মন ভাল নেই চিকিৎসক থেকে স্বাস্থ্যকর্মীদের। তাই বিশ্বকর্মা পুজোয় এ বার নিয়মরক্ষার আয়োজন আসানসোলের দুই হাসপাতালেও। জেলা হাসপাতাল চত্বরে এ বার অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের পুজো করার অনুমতি দেননি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

অন্য বার আসানসোল জেলা হাসপাতালের অস্ত্রোপচার বিভাগে ধুমধাম করে বিশ্বকর্মা পুজো আয়োজন হয়। কিন্তু এ বার আর জি কর হাসপাতালের ঘটনার প্রেক্ষিত তেমন আয়োজনের মানসিকতা নেই, জানান জুনিয়র ডাক্তারেরা। তাঁদের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন সিনিয়র চিকিৎসকেরাও। এ দিন হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, ছবি সাজিয়ে নিয়মরক্ষার পুজো করা হয়েছে বিভাগের সামনে। এখানকার চিকিৎসক তথা আইএমএ-র আসানসোল শাখার সম্পাদক রুহুল আমিন বলেন, ‘‘যেটুকু না করলে নয়, তেমন আয়োজন করা হয়েছে। আসলে আর জি কর হাসপাতালের ঘটনা এখনও ভুলতে পারছি না।’’ আর এক চিকিৎসক আর্শাদ আহমেদ বলেন, ‘‘কর্মবিরতির সময়েও আমরা রোগী দেখেছি। মঙ্গলবার থেকে কাজের গতি বেড়েছে। তবে মন ভাল নেই।’’

হাসপাতাল চত্বরে উৎসবের আয়োজন হোক, এমনটা চাননি বলেই অ্যাম্বুল্যান্স চালকদের পুজোর অনুমতি দেওয়া হয়নি, দাবি হাসপাতাল সুপার নিখিলচন্দ্র দাসের। তিনি বলেন, ‘‘যে ঘটনা ঘটেছে, তা সহজে ভোলার নয়। এই পরিস্থিতিতে এ বার পুজোর অনুমতি দিইনি।’’ আসানসোলের ইএসআই হাসপাতালের রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগ প্রতি বছর ঘটা করে বিশ্বকর্মা পুজো করে হাসপাতাল চত্বরে। ভুরিভোজের আয়োজন হয়। এ বার তেমন কিছু করা হয়নি বলে জানান হাসপাতালের সুপার অতনু ভদ্র। তিনি জানান, নিয়মরক্ষার পুজো করে প্রসাদ বিতরণের মধ্যেই সীমাবদ্ধ রয়েছে এ বারের পুজো।

রানিগঞ্জের মঙ্গলপুর শিল্পতালুকে ২০১১ সালের মাঝামাঝি বন্ধ হয়ে গিয়েছে হাওড়া জুট মিল। কিন্তু পুজো বন্ধ হয়নি। ওই কারখানায় ১৬ জন নিরাপত্তাকর্মী রয়েছেন। তাঁরা জানান‌, কারখানা চালু হওয়ার আশা নিয়ে প্রতি বছর কারখানার ভিতরে বিশ্বকর্মা পুজোর আয়োজন করেন। বল্লভপুর কাগজকলের সিটু অনুমোদিত কর্মচারী ইউনিয়নের নেতা হেমন্ত প্রভাকর জানান, গত ৮ জানুয়ারি থেকে কারখানা বন্ধ। ১৪ সেপ্টেম্বর কর্তৃপক্ষের কাছে তাঁরা অনুরোধ করেন যাতে পুজো বন্ধ না হয়। কর্মীদের মুখে হাসি ফোটাতে কারখানা চালু করার দাবিও তাঁরা জানিয়েছেন। কারখানার ভিতরে ছোট আকারে পুজোর আয়োজন করেন কর্তৃপক্ষ।

জামুড়িয়া ট্যাক্সি স্ট্যান্ড অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যেরা জানান, এ বছর কোনও রকমে পুজোর আয়োজন করেছেন। বার্নপুর বাটা মোড়ে ট্যাক্সিচালক, অন্ডালের উখড়া শঙ্করপুর মোড় এলাকায় ট্যাক্সি ও ট্রেকার স্ট্যান্ডে পৃথক পুজোর আয়োজন হয়েছে। দু’টি পুজো কমিটির তরফে রাজন পণ্ডিত, প্রবীর বন্দ্যোপাধ্যায়েরা জানান, শোকের পরিবেশ মাথায় রেখেই তাঁরা আড়ম্বর ছাড়া পুজো করেছেন। রানিগঞ্জের মারোয়াড়িপট্টি দুর্গামন্দিরে ‘রানিগঞ্জ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন’ ও ‘অখিল ভারতীয় স্বর্ণকার সঙ্ঘ’-এর‌ উদ্যোগে বিশ্বকর্মা পুজো আয়োজন হয়। পুজোর কর্তা বলরাম রায় জানান,‌ প্রতি বারের মতো এ বারও বৃহস্পতিবার পঙ্‌ক্তিভোজের ব্যবস্থা করা হবে। জামুড়িয়া শিল্পতালুক‌, মঙ্গলপুর শিল্পতালুক‌, ইসিএলের প্রতিটি এরিয়া কার্যালয়, রানিগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড-সহ বিভিন্ন গ্যারাজ, টোটো ও অটো স্ট্যান্ডে পুজোর আয়োজন হয় এ দিন।

আসানসোল-দুর্গাপুর পুলিশ কমিশনারেটের এক আধিকারিক জানান, জেলা জুড়ে হাজারের বেশি পুজো আয়োজিত হয়েছে। পুলিশি টহলদারি রয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Vishwakarma Puja 2024
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE