পশ্চিম বর্ধমানের রানিগঞ্জের হাড়াভাঙা সেতু। নিজস্ব চিত্র
দু’টি পঞ্চায়েত ভোট পেরিয়েছে। ফের দোরগোড়ায় ভোট। কিন্তু রানিগঞ্জের হাড়াভাঙা সেতুর উন্নতি হয়নি। দু’পাশে রেলিং না থাকায় ঝুঁকি নিয়ে পারাপার করতে হচ্ছে বলে জানান বাসিন্দারা। বাসিন্দাদের ক্ষোভ, প্রত্যেক বারই আশ্বাস মেলে। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয় না।
রানিগঞ্জের তিরাট পঞ্চায়েতের হাড়াভাঙা গ্রামের সীমানায় নুনিয়া নদীর উপরে সেতুটি রয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, কয়লাখনি জাতীয়করণের আগে বেসরকারি কয়লা উত্তোলক সংস্থা সেতুটি নির্মাণ করে। ১৯ নম্বর জাতীয় সড়কের রানিগঞ্জ ব্লকের একটা বিরাট অংশের বাসিন্দাদের কাছে এই সেতুটি গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এটি ব্যবহার করেন তিরাট, চেলোদ, হাড়াভাঙা, দামালিয়া ও লাগোয়া এলাকার বাসিন্দারা। এই সব এলাকার মানুষকে রানিগঞ্জ ব্লক কার্যালয়, নিমচা, জেকে নগর, আমকোলা, অমৃতনগর কোলিয়ারি, একটি ইংরেজিমাধ্যম স্কুল-সহ কলকাতা, জামুড়িয়া যাওয়ার বাস ধরতে যেতে হয়রানিসায়র মোড়ে।
বাসিন্দারা জানান, ২০১২-য় আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদ সেতুতে রেলিং তৈরি করে। প্রবল বর্ষণে তিন বছরের মধ্যে দু’ধারের রেলিং ভেঙে যায়। বাসিন্দাদের অভিযোগ, রেলিং ভেঙে যাওয়ার পরে, দুষ্কৃতীরা সব লোহা খুলে নিয়ে চলে গিয়েছে। এই সেতু দিয়ে তিনটি বাস চলত। সেতু বিপজ্জনক হয়ে যাওয়ায় বছর তিনেক হল বাস চলাচল বন্ধ হয়ে গিয়েছে। বাসিন্দারা জানান, সেতু এড়িয়ে জাতীয় সড়ক যেতে গেলে তিরাট থেকে প্রায় আট কিলোমিটার, দামালিয়া থেকে প্রায় সাত কিলোমিটার, হাড়াভাঙা থেকে প্রায় ন’কিলোমিটার ঘুরপথে যেতে হয়। আর জেকে নগরের বাসিন্দাদের তিরাট যেতে প্রায় পাঁচ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরতে হয়।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, দুর্বল এই সেতু দিয়ে যাতায়াত করে কয়লা ও বালি বোঝাই ডাম্পার। ফলে, এটি বিপজ্জনক হয়ে উঠছে। বছর সাতেক আগে রানিগঞ্জ ব্লক প্রশাসন থেকে ভারী যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। অভিযোগ, কিছু দিন সে সব বন্ধ ছিল। আবার বেপরোয়া ভাবে বালি, কয়লার গাড়ি চলছে।
এ দিকে, ভোট-মরসুমে বিষয়টি নিয়ে শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা। সিপিএমের রানিগঞ্জ এরিয়া কমিটির সম্পাদক সুপ্রিয় রায়ের দাবি, ২০১০-এ তাঁরা সেতুটির পরিকাঠামোগত উন্নয়নের পরিকল্পনা নিয়েছিলেন। রাজ্যে পালাবদলের পরে, নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে রেলিং তৈরি করে রাজ্য সরকার। তার জেরে বর্ষার জলে ধুয়ে-মুছে সাফ হয়ে গিয়েছে। বিজেপির আসানসোল জেলা সদস্য সন্দীপ গোপের মন্তব্য, বাম বা তৃণমূল কেউ উন্নয়ন করেনি।
আসানসোল-দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এডিডিএ) চেয়ারম্যান তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, সেতুটি সেচ দফতরের অধীন। ২০১২-য় সংশ্লিষ্ট দফতরের কাছ থেকে মৌখিক অনুমতি নিয়ে এডিডিএ অস্থায়ী ভাবে রেলিং নির্মাণ করেছিল। সেটি ভেঙে যাওয়ার পরে, একাধিক বার সেচ দফতরের কাছে সেতুটির পরিকাঠামোগত উন্নয়ন করার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু দফতর তা দেয়নি বলে দাবি।
সেচ দফতরের এক আধিকারিক জানান, বিষয়টি খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy