Advertisement
২২ ডিসেম্বর ২০২৪
Horse

Horse: ঘোড়ার পিঠেই হাটে-বাজারে পিন্টু

১৬-১৭ বছর বয়সে বাবা সনৎ ঘোষের সঙ্গে বিহারে গিয়েছিলেন গরু কিনতে। সেখানেই প্রথম ঘোড়ার পিঠে চড়েন তিনি। সেটাই জীবনের একমাত্র শখ হয়ে দাঁড়ায়।

‘দেবা’র পিঠে চড়ে চলছে দোকানপাট।

‘দেবা’র পিঠে চড়ে চলছে দোকানপাট। ছবি: জয়ন্ত বিশ্বাস

সুপ্রকাশ চৌধুরী
বড়শুল শেষ আপডেট: ১৬ জুন ২০২২ ০৭:২৫
Share: Save:

শখের দাম লাখ টাকা। কিন্তু এই শখের দাম তারও দ্বিগুণ।

ছেলেবেলায় বাবার সঙ্গে বিহারে গিয়ে এক বার ঘোড়ায় চড়েছিলেন। বছরের পর বছর কেটে গেলেও সেই ঘোর কাটেনি বর্ধমান ২ ব্লকের বড়শুলের পিন্টু ঘোষের। দু’লক্ষ টাকা খরচ করে ঘোড়া কিনেছেন তিনি। প্রতিদিন বিকেলে সে ঘোড়ার পিঠে চেপে ঘুরতে বেরোন তিনি। প্রতিবেশীদের দাবি, ‘‘টগবগ শুনলেই বুঝি ঘোড়ায় চেপে পিন্টু আসছে।’’

দুলেপাড়ার বাসিন্দা পিন্টুর পারিবারিক দুধের ব্যবসা। বাড়িতে একাধিক গরু, মোষ রয়েছে। একটি দুগ্ধ সমবায় কেন্দ্রও চালান তিনি। গোশালার পাশে আস্তাবল রয়েছে বাড়িতে। সেখানে থাকে খয়েরি রঙের ‘দেবা’। দোকানপাট, দুধের বরাত নেওয়া বা টাকাপয়সা সংক্রান্ত কাজে তার পিঠে চড়েই যান তিনি।

দেবাকে খাবার দেওয়ার ফাঁকে পিন্টু জানান, ১৬-১৭ বছর বয়সে বাবা সনৎ ঘোষের সঙ্গে বিহারে গিয়েছিলেন গরু কিনতে। সেখানেই প্রথম ঘোড়ার পিঠে চড়েন তিনি। সেটাই জীবনের একমাত্র শখ হয়ে দাঁড়ায়। রোজগার শুরু করার পরে, ২০১৭ সালে শোনপুরের মেলা থেকে প্রথম ঘোড়া কেনেন তিনি। ৭৫ হাজার টাকা দিয়ে কেনা সেই ঘোড়া মারা যায় বছর দু’য়েকের মধ্যেই। তবে শখ মরেনি। ২০২১ সালে ফের শোনপুরের মেলা থেকে প্রায় দু’লক্ষ টাকা দিয়ে দেবাকে নিয়ে আসেন তিনি। দেবার পিঠেই এখন বড়শুল, শক্তিগড় চষে বেড়ান। স্থানীয় বাসিন্দা মহুর আলম, সমীরণ মণ্ডল, প্রভাস রায়েরা বলেন, ‘‘খেলায় মাঠে বা সকালের হাটে ঘোড়া আসতে দেখলেই বুঝি পিন্টু আসছে। ওর শখের দাম সত্যিই লাখ টাকা।’’

পিন্টুর দাবি, অনেকে লক্ষাধিক টাকা দিয়ে মোটরবাইক কেনেন, গাড়ি কেনেন। ঘোড়া পোষার খরচ প্রচুর জেনেও, শখ বিসর্জন দিতে রাজি নন তিনি। পিন্টুর কথায়, ‘‘মেজাজটাই আসল।’’ তিনি জানান, প্রতিদিন ঘোড়ার জন্য দেড় কেজি ছোলা, দু’কেজি দুধ, ছ’-সাত কেজি ভুষি লাগে। এ ছাড়া ঘাস, সোয়াবিন দেওয়া হয়। মা, বাবা, স্ত্রী, ছেলের মতোই দেবাও তাঁর সংসার। পিন্টুর বাবা সনৎ ঘোষ বলেন, ‘‘ব্যবসার কাজে ছেলেকে সাহায্য করি। তবে ঘোড়ার গায়ে হাত দেওয়ার জো নেই। নিজে ছাড়া কারও যত্ন করা পছন্দ হয় না ওঁর।’’

বছর আটচল্লিশের পিন্টু ঘোড়া নিয়ে শক্তিগড়ের জাতীয় সড়কের পাশ দিয়েও যান। তাঁকে দেখে থমকে যায় দামী গাড়ি। অনেকেই নেমে ছবি তোলেন, গল্প করেন তাঁর সঙ্গে। স্ত্রী কাকলী ঘোষ বলেন, ‘‘ঘোড়া আমার স্বামীর একমাত্র শখ। দেবা পরিবারেরই এক জন।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Horse man
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy