শোকার্ত: দুই মেয়েকে নিয়ে নিহতের স্ত্রী চিত্রাদেবী, কেতুগ্রামে। ছবি: অসিত বন্দ্যোপাধ্যায়
ভাড়াটে খুনি দিয়ে ছেলেকে খুন করার অভিযোগ উঠল মা ও ভাইয়ের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় কেতুগ্রামের আনখোনা গ্রামে স্টেশন থেকে দুই বন্ধুর সঙ্গে মোটরবাইকে ফিরছিলেন নিহত সুখময় মিস্ত্রি (৩৫)। তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরে শ্বশুরবাড়ির লোকেরাই খুন করিয়েছে তাঁর স্বামীকে। ঘটনায় আহত হয়েছেন সুখময়ের সঙ্গে থাকা দুই বন্ধু কৃষ্ণ সরকার ও অনুপম পাত্র। পুলিশ অভিযুক্ত ভাইকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটকও করেছে।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, রেলের ঠিকাদারি সংস্থার কর্মী ছিলেন সুখময়বাবু। সেই সুবাদে সস্ত্রীক মুর্শিদাবাদের খাগড়ায় থাকতেন। বছর তিনেক আগে স্ত্রী ও দুই মেয়েকে নিয়ে বর্ধমানে ফেরেন তিনি। তারপরে আবারও কাজের সূত্রে মালদহ চলে যেতে হয় তাঁকে। ওই সন্ধ্যায় সেখান থেকেই বাড়ি ফিরছিলেন তিনি। সুখময়বাবুর মোটরবাইক নিয়েই তাঁকে আনতে গিয়েছিলেন কৃষ্ণ ও অনুপম। অভিযোগ, সাড়ে আটটা নাগাদ আনখোনা-ইছাপুর রাস্তার বাঁকে বেশ কয়েকজন বাইক আটকায়। ছিনতাইয়ের ঢঙে কাছে যা আছে দিয়ে দিতে বলে। তার মধ্যেই রড, লাঠি দিয়ে এলোপাথারি মারধর শুরু হয়। তিন জনেই মোটরবাইক থেকে মাটিতে পড়ে যান। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় সুখময়বাবুর। জ্ঞান হারিয়ে গুরুতর জখম অবস্থায় রাস্তায় পড়েছিলেন কৃষ্ণ ও অনুপম। তাঁদের কান্দরা ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে ভর্তি করানো হয়। পরে কৃষ্ণকে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সুস্থ হলে ছেড়ে দেওয়া হয় অনুপমকে। চিত্রাদেবীর অভিযোগ, ‘‘অনুপমই আমাদের দশটা নাগাদ খবর দেয় যে ওদের তিন জনের ছিনতাই হয়েছে। ছিনতাইবাজদের আঘাতে আমার স্বামী মারা গিয়েছেন।’’ যদিও নিহতের পকেট থেকে বেশ কয়েক হাজার টাকা ও মোবাইল মেলায় পুলিশের প্রাথমিক অনুমান, ওই রাতে ছিনতাই হয়নি। জেরায় অনুপমের কথায় অসঙ্গতি পাওয়া গিয়েছে বলেও পুলিশের দাবি।
নিহতের স্ত্রী চিত্রা মিস্ত্রি জানান, আনখোনার ১২ বিঘা জমি নিয়ে মা করুণাময়ী মিস্ত্রি ও ভাই মৃন্ময়ের সাথে দীর্ঘদিন ধরেই বিবাদ লেগে ছিল সুখময়বাবুর। বছর তিনেক আগে তাঁরা আনখোনায় ফেরার পর থেকেই জমির ভাগ নিয়ে দু’পক্ষের অশান্তি শুরু হয়। বাড়ির একটি অংশ এক লক্ষ টাকা দিয়ে কেনার পরেও ওই বাড়ি থেকে তাঁদের তাড়িয়ে দেওয়ার জন্য প্রায়শই হুমকি ও মারধর করা হতো বলে দাবি চিত্রাদেবীর। তাঁর কথায়, ‘‘শাশুড়ি আমায় মারধর, গালিগালাজ করতেন। মাস চারেক আগে গুন্ডা এনে বাড়ি ছেড়ে দেওয়ার জন্যও হুমকি দেন। ওঁরাই ষড়যন্ত্র করে ভাড়াটে খুনি লাগিয়ে আমার স্বামীকে শেষ করে দিল।’’
পুলিশ জানায়, করুনাময়ী, মৃন্ময়, তাঁর স্ত্রী আগমনী ও মৃন্ময়ের শ্যালক মানব মিস্ত্রির বিরুদ্ধে খুনের অভিযোগ করেছেন চিত্রাদেবী। মৃন্ময়কে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। তবে করুণাময়ী-সহ বাকিরা পলাতক।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy