ভগৎ সিংহ ক্রীড়াঙ্গনে। নিজস্ব চিত্র
প্রশাসনিক জনসভা থেকে প্রকাশ্যে কোনও বার্তা শোনা যায়নি। কিন্তু বুধবার ভগৎ সিংহ স্টেডিয়ামে আয়োজিত দুর্গাপুর পুরসভার কাউন্সিলরদের সঙ্গে বৈঠক শুরুর আগে তৃণমূল নেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জেলার তৃণমূল নেতৃত্বকে এক হওয়ার বার্তা দিলেন। সূত্রের দাবি, সভায় নেত্রী বলেন, ‘‘সব ভুলভ্রান্তি ভুলে, এক হয়ে কাজ করতে হবে। আমি বড় না বিশু (বিশ্বনাথ পাড়িয়াল) বড়, মলয় (মলয় ঘটক) বড় না জিতেন (জিতেন্দ্র তিওয়ারি) বড়— সে দিন কিন্তু আজ নয়। কোনও টোপ, প্ররোচনার মধ্যে যাবেন না।’’
ঘটনাচক্রে, বিশ্বনাথ পাড়িয়াল আইএনটিটিইউসি জেলা সভাপতি হওয়ার পর থেকেই নানা বিষয় নিয়ে তাঁর অনুগামীদের সঙ্গে সংগঠনের প্রাক্তন সভাপতি তথা মেয়র পারিষদ (নিকাশি) প্রভাত চট্টোপাধ্যায়ের অনুগামীদের বিবাদ প্রকাশ্যে আসে বলে তৃণমূল সূত্রে দাবি। বিশ্বনাথবাবু এ দিনও বলেন, ‘‘শ্রমিক স্বার্থে সংগঠনের কাজ করতে গিয়ে আমাকে যে প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যে পড়তে হচ্ছে তা জানিয়েছি দলনেত্রীকে।’’ তিনি ‘পদ’ থেকে অব্যাহতি চান বলেও বৈঠকে উপস্থিত নেতাদের একাংশের দাবি। যদিও প্রকাশ্যে তা স্বীকার করেননি বিশ্বনাথবাবু।
আইএনটিটিইউসি সূত্রে জানা গিয়েছে, মূলত অর্থের বিনিময়ে কাজে নিয়োগের অভিযোগ ও স্থানীয়দের নিয়োগের দাবির বিষয় ঘিরে দু’পক্ষের ‘দ্বন্দ্ব’। বিশ্বনাথবাবুর অনুগামীদের দাবি, নেত্রী স্থানীয়দের কাজের দাবিকেই অগ্রাধিকার দিয়েছেন। পাশাপাশি, বিশ্বনাথবাবু ও প্রভাতবাবুকে বসে সমস্যা মিটিয়ে নেওয়ার বার্তাও দিয়েছেন। প্রভাতবাবু বলেন, ‘‘আমি দলের শৃঙ্খলাবদ্ধ কর্মী। দলনেত্রীর নির্দেশ শিরোধার্য।’’
পাশাপাশি, জেলার রাজনীতিতে সাম্প্রতিক অতীতে নানা ঘটনায় দলের অন্দরে মলয়বাবু ও জিতেন্দ্রবাবুর অনুগামী বলে পরিচিতদের মধ্যেও ‘দ্বন্দ্ব’ প্রকাশ্যে এসেছে বলে দাবি রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের। যদিও কোনও পক্ষই তা স্বীকার করেননি। এ দিন মলয়বাবু বিষয়টি নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি। তবে জিতেন্দ্রবাবু বলেন, ‘‘দলনেত্রী আমাদের অভিভাবক। আমাদের কিছু ভুল হলে উনি ধরিয়ে দেন। আমরা তাঁর নির্দেশেই এগিয়ে চলি।’’
এ দিকে, বৈঠক উপস্থিত কাউন্সিলরদের একাংশের দাবি, এ দিন ফের ট্রেড লাইসেন্স সংক্রান্ত অভিযোগ এবং রাস্তাঘাটের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য দুর্গাপুর পুরসভার মেয়র দিলীপ অগস্তিকে নির্দেশ দেন নেত্রী। বৈঠকে এক প্রবীণ মেয়র পারিষদ মেয়রের বিরুদ্ধে ‘স্বেচ্ছাচারিতা’ ও ‘গুরুত্ব না দেওয়া’র অভিযোগও করেন। মেয়র দিলীপবাবু সরাসরি বৈঠকের বিষয়ে কিছু না বললেও তাঁর প্রতিক্রিয়া, ‘‘নিয়ম মেনেই কাজ হয়। কিছু রাস্তাঘাট নিয়ে সমস্যা রয়েছে। কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলে সব কাজ দ্রুত শেষ করা হবে।’’
ঘটনাচক্রে, এ দিনের বৈঠকে কয়েকজন কাউন্সিলর অনুপস্থিত ছিলেন। তাঁদের অন্যতম, সম্প্রতি শুভেন্দু অধিকারীর সঙ্গে তাঁর ছবি-সহ পোস্টার পড়ার কারণে সংবাদ শিরোনামে উঠে আসা ৪ নম্বর বরো চেয়ারম্যান চন্দ্রশেখর বন্দ্যোপাধ্যায়ও। তবে এ দিনের অনুপস্থিতির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘দুয়ারে সরকারের শিবির নিয়ে মঙ্গলবার রাত থেকে খুবই ব্যস্ত। তাই বৈঠকে যেতে পারিনি।’’ মেয়রও বলেন, ‘‘কাউন্সিলরদের কয়েকজন অসুস্থ থাকায় এবং দুয়ারে সরকার শিবির নিয়ে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। মুখ্যমন্ত্রী ডিপিএল টাউনশিপে একটি দুয়ারে সরকার শিবিরে যেতে পারেন বলে খবর ছিল। চন্দ্রশেখরবাবু সেখানেই ব্যস্ত ছিলেন।’’
সূত্রের খবর, বৈঠক থেকে ফোনে নেত্রী কথা বলেন দুর্গাপুরের প্রাক্তন মেয়র অপূর্ব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গেও। তাঁকে বিশেষত কাঁকসায় দলের সাংগঠনিক কাজে নজর দিতে ও পুরসভায় গিয়ে জনসংযোগ বাড়ানোর নির্দেশ দেন দলনেত্রী। অপূর্ববাবু বলেন, ‘‘দলনেত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি বরাবর দলের সঙ্গেই আছি।’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy