Advertisement
২১ ডিসেম্বর ২০২৪
RG Kar Hospital Incident

নেই ক্যামেরা, ঢিলে নিরাপত্তাও

দিন-রাত ভিড় উপচে পড়ে জেলা, ভিন্‌ জেলার রোগীদের। সেই সরকারি হাসপাতালে কতটা নিরাপদ চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীরা? আজ কাটোয়া হাসপাতাল।

—প্রতীকী চিত্র।

—প্রতীকী চিত্র।

প্রণব দেবনাথ
কাটোয়া শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০২৪ ০৯:০৫
Share: Save:

বহু অর্থ খরচে তৈরি হয়েছে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের নতুন ভবন। দিন-রাত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে সেখানে আসতে হয় চিকিৎসক ও চিকিৎসা কর্মীদের। এখনও সেই ভবনে একটি নজরদারি ক্যামেরাও বসানো হয়নি। হাসপাতাল কর্মীদের বক্তব্য, কোনও অপরাধমূলক ঘটনা ঘটলে অপরাধীর গতিবিধি সম্পর্কে তথ্য পেতে অন্ধকারে হাঁতরাতে হবে পুলিশকে। অভিযোগ, রাতের অন্ধকারে অনেক সময়ই মত্ত যুবকদের উৎপাত লক্ষ্য করা যায় হাসপাতাল চত্বরে।

আরজিকর হাসপাতালে চিকিৎসক ছাত্রীর খুনের ঘটনার পরেই কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের নতুন ভবনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করার দাবি উঠেছে। প্রায় মাস ছয়েক আগে কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে তিন তলা নতুন ভবনটির উদ্বোধন হয়। সেখানে অন্তর্বিভাগ পরিষেবাও চালু হয়েছে। চিকিৎসকদের কক্ষ থেকে শুরু করে রোগীদের ওয়ার্ড ও চিকিৎসা সংক্রান্ত নানা কক্ষ ও স্টোর রুম রয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ ওই ভবনে নিরাপত্তা ঢিলেঢালা বলে অভিযোগ। ভবনের করিডর থেকে শুরু করে সিঁড়ি, রোগীদের ওয়ার্ড— কোনও জায়গাতেই এখনও পর্যন্ত নজরদারি ক্যামেরা বসানো হয়নি বলে হাসপাতাল সূত্রের খবর।

ভবনের নিরাপত্তার বিষয়টি নিয়ে আগে রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে আলোচনা হয়েছে বলে দাবি হাসপাতাল সূত্রের। হাসপাতাল চত্বরে বিশাল জায়গা জুড়ে এক দিকে রয়েছে আউটডোর। অন্য দিকে রয়েছে চিকিৎসক, নার্স ও চতুর্থ শ্রেণির কর্মীদের আবাসন। হাসপাতালের মূল ভবনের সামনে অবশ্য পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। তবে সেখান থেকে গোটা হাসপাতাল চত্বরে ও নতুন ভবনে নজরদারি চালানো সম্ভব নয় বলে দাবি পুলিশের একাংশের। নিরাপত্তা কর্মীর সংখ্যা বাড়ানোরও দাবিও উঠেছে।

পূর্ব বর্ধমান ছাড়াও নদিয়া, মুর্শিদাবাদ ও বীরভূম জেলার কাটোয়া সংলগ্ন এলাকাগুলি থেকে প্রতিদিন প্রচুর রোগী কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালে আসেন। রোগীর আত্মীয়েরা রাত হলে গাছতলায় বা অন্যত্র খোলা আকাশের নীচে ইতিউতি শুয়ে থাকতে বাধ্য হতেন। তাঁদের সুবিধার জন্য কয়েক বছর আগে হাসপাতালের মূল ভবনে ঢোকার মুখে একটি বিশ্রামাগার তৈরি হলেও সেখানে টাকার বিনিময়ে থাকতে হয়। সে কারণে অনেকই এখনও খোলা জায়গায় রাত কাটান।

কেতুগ্রামের আগরডাঙা গ্রামের বাসিন্দা মুজিব শেখ বলেন, “মাঝেমধ্যেই হাসপাতালে রোগী নিয়ে আসতে হয়। রাতে আমাদের মতো রোগীর আত্মীয়েরা আকাশের নিচে ফাঁকা জায়গায় থাকেন। অনেকেই নিরাপত্তাহীনতায় ভোগেন। কলকাতার বুকে খোদ হাসপাতালের মধ্যেই যদি চিকিৎসক পড়ুয়াকে খুন হতে হয়, তা হলে খোলা জায়গায় দুষ্কৃতীদের সুযোগ নেওয়ার আশঙ্কা তো থাকেই। কর্তৃপক্ষের বিষয়টি নিয়ে ভাবা উচিত।”

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক নার্স বলেন, “আরজিকর হাসপাতালে পড়ুয়া চিকিৎসককে যে ভাবে নারকীয় অত্যাচার করে খুন করা হয়েছে, সেই ঘটনার পরে আমরাও আতঙ্কে রয়েছি। কারণ, আমাদের হাসপাতালের নতুন বিল্ডিংয়ে এখনও নজরদারি ক্যামেরাই বসেনি। আমরা রাত বিরেতে চিকিৎসার কাজে যাই। কোনও অবাঞ্ছিত ঘটনা ঘটে গেলে তার দায় কে নেবে? অবিলম্বে নতুন বিল্ডিং-সহ গোটা হাসপাতাল চত্বরের নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়াতে হবে।”

কাটোয়া মহকুমা হাসপাতালের সুপার বিপ্লব মণ্ডল বলেন, “নিরাপত্তার জন্য হাসপাতালে অনেক আগে থেকেই পুলিশ ক্যাম্প রয়েছে। তবে নতুন বিল্ডিংয়ে এখনও আমরা নজরদারি ক্যামেরা বসাতে পারিনি। রোগী কল্যাণ সমিতির বৈঠকে সেই ক্যামেরা বসানোর জন্য বিধায়ককে লিখিত ভাবে আবেদন জানানো হয়েছে।”

এ ব্যাপারে কাটোয়ার বিধায়ক তথা রোগী কল্যাণ সমিতির চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ চট্টোপাধ্যায় বলেন, “নতুন ভবনে ক্যামেরা বসানো হবে। হাসপাতালে নিরাপত্তা ব্যবস্থা আরও বাড়ানো হবে।”

অন্য বিষয়গুলি:

RG Kar Medical College Hospital Katwa
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy