Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪

বিধায়কদের কাছে সমস্যা নিয়ে সরব

শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ আসানসোল পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সুইডি গ্রামে যান এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। একটি কমিউনিটি সেন্টারে বাসিন্দাদের অভিযোগ শোনার ব্যবস্থা হয়।

সুইডি গ্রামে বাসিন্দাদের অভিযোগ শুনছেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। শনিবার সন্ধ্যায় আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

সুইডি গ্রামে বাসিন্দাদের অভিযোগ শুনছেন মন্ত্রী মলয় ঘটক। শনিবার সন্ধ্যায় আসানসোলে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
আসানসোল শেষ আপডেট: ০৪ অগস্ট ২০১৯ ০১:০০
Share: Save:

নেতাদের সামনে পেয়ে নানা অভিযোগে সরব হলেন বাসিন্দারা। শুক্র ও শনিবার নিজের এলাকার গ্রামে যান তৃণমূল বিধায়কেরা। তাঁদের কাছে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ক্ষোভের কথা জানান গ্রামবাসীর অনেকে। সমস্যা মেটানোর আশ্বাস দেন বিধায়কেরা। তবে বিরোধীদের দাবি, এই কর্মসূচি ‘দ্বিচারিতা’ ছাড়া আর কিছু নয়।

শনিবার সন্ধ্যা ৭টা নাগাদ আসানসোল পুরসভার ২০ নম্বর ওয়ার্ডের সুইডি গ্রামে যান এলাকার বিধায়ক তথা রাজ্যের মন্ত্রী মলয় ঘটক। একটি কমিউনিটি সেন্টারে বাসিন্দাদের অভিযোগ শোনার ব্যবস্থা হয়। মন্ত্রী আসার পরেই নানা অভিযোগ জানাতে থাকেন বাসিন্দারা। সুদর্শন ভট্টাচার্য নামে এক বাসিন্দার অভিযোগ, ‘‘গ্রামে গরিবেরা কেউ বাড়ি পাননি। নেতারা কেউ এ ব্যাপারে উদ্যোগী হননি।’’ রবীন্দ্রনাথ বাউরি নামে এক জনের নালিশ, ‘‘রাস্তার এমন অবস্থা কেন? জলের খুব সমস্যা। একটি শ্যালো পাম্প বসানো হলেও প্রভাবশালীরা সেই জল নিয়ে নেন।’’

বাসিন্দাদের দাবি, এথোড়া থেকে জলের লাইন গ্রামের উপর দিয়ে গিয়েছে। এলাকার মানুষকে সংযোগ দেওয়ার কথা থাকলেও তা দেওয়া হয়নি। গ্রামের আর এক বাসিন্দা অমরচন্দ্র দে-র অভিযোগ, ‘‘জলের প্রশ্ন তুললেই বলা হচ্ছে, নতুন ট্যাঙ্ক হবে, সেখান থেকে জল মিলবে। কিন্তু পুরনো ট্যাঙ্কগুলিই তো পড়ে রয়েছে।’’ বৃদ্ধ বাসিন্দা পঞ্চানন দে-র অভিযোগ, ‘‘গ্রামে একটি রেশন দোকান রয়েছে। কিন্তু আমাদের রেশন নিতে যেতে হয় ছ’কিলোমিটার দূরে বনসরাকডিহিতে।’’ আদিত্য মণ্ডল নামে এক জনের অভিযোগ, ‘‘চার বছর ধরে বার্ধক্য ভাতার জন্য ঘুরছি। এখনও পাইনি।’’

মলয়বাবু বলেন, ‘‘মানুষ তাঁদের নানা চাহিদার কথা জানিয়েছেন। আমরা সব শুনেছি। দ্রুত সমাধানের চেষ্টা হবে।’’ স্থানীয় কাউন্সিলর শ্রাবণী মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘কিছু ব্যাপারে ক্ষোভ রয়েছে মানুষের। আমাদের ভালবাসেন বলেই সে সব আমাদের কাছে এসে জানিয়েছেন তাঁরা।’’ রাতে গ্রামে একটি বাড়িতে থাকার কথা মলয়বাবুর।

কুলটির তৃণমূল বিধায়ক উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায় জানান, কলকাতা থেকে উচ্চ নেতৃত্ব আসানসোল পুরসভার ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের সীতারামপুরের পাঁচ জন বাসিন্দার সঙ্গে দেখা করে সমস্যা শোনার পরামর্শ দিয়েছিলেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় তাঁদের কাছে যান তিনি। উজ্জ্বলবাবু জানান, বাসিন্দারা এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। সীতারামপুর স্টেশন রোডের একাংশ কিছু ব্যবসায়ী দখল করায় তীব্র যানজট হচ্ছে বলেও অভিযোগ। অনেকে জলের সমস্যার কথাও জানিয়েছেন। উজ্জ্বলবাবু বলেন, ‘‘ওই বাসিন্দারা ‘দিদিকে বলো’র ফোন নম্বরে এই অভিযোগ আগেই জানিয়েছেন। এ সব দ্রুত সমাধানের ব্যবস্থা করব।’’ পুলিশ জানায়, আইন-শৃঙ্খলা স্বাভাবিক রাখতে সম্প্রতি ওই এলাকায় অভিযান শুরু হয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় পঞ্চায়েত সমিতি ও জেলা পরিষদ সদস্যদের নিয়ে খয়েরবনি ও জামজুড়ি আদিবাসী গ্রামে যান বারাবনির বিধায়ক বিধান উপাধ্যায়। তিনি জানান, ঝাড়খণ্ড সীমানার এই গ্রাম দু’টিতে নানা সমস্যা রয়েছে। বাসিন্দারা পুকুর সংস্কার, পানীয় জলের ব্যবস্থা, অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র তৈরির আর্জি জানিয়েছেন। বিধানবাবুর আশ্বাস, ‘‘ব্যবস্থা নেব।’’

তৃণমূলের এই কর্মসূচি নিয়ে বিজেপির জেলা সভাপতি লক্ষ্মণ ঘোড়ুইয়ের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এলাকায় গিয়ে ওদের নেতা-মন্ত্রীরা বুঝতে পারছেন, নিজেদের জনপ্রিয়তা কোথায় গিয়ে ঠেকেছে। শুনেছি বাসিন্দাদের অভিযোগ শুনে না কি ওঁরা মেজাজও হারাচ্ছেন।’’ সিপিএম নেতা বংশগোপাল চৌধুরী দাবি করেন, ‘‘এই কর্মসূচি দ্বিচারিতা ছাড়া কিছু নয়।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Complaint TMC Asansol
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy