কুলটিতে জি টি রোডের দু’ধারে এ ভাবেই ফুটপাত দখল হয়ে থাকে বলে অভিযোগ। ছবি: পাপন চৌধুরী।
ফুটপাত দখল হয়ে থাকায় রাস্তায় বাড়ছে যানজট। হকারদের বিষয়ে বিকল্প ব্যবস্থার প্রস্তাব দিয়েও লাভ হয়নি। জবরদখলের সমস্যা নিয়ে এমনই নানা অভিযোগ সাধারণ মানুষ থেকে বিরোধী নেতাদের।
আসানসোল বাজারের স্থায়ী নানা দোকানের মালিকদের মতে, ফুটপাত দখল হয়ে থাকায় মূলত তিন রকম সমস্যা হচ্ছে। প্রথমত, ক্রেতারা ফুটপাত ধরে হাঁটাচলা করতে পারেন না। ভিড়ে ঠাসা ফুটপাতে নিয়মিত ছিনতাই-কেপমারির মতো ঘটনা ঘটে। তাতে ক্রেতাদের বাজারে আসার সংখ্যা কমছে। দ্বিতীয়ত, প্লাস্টিক ও দাহ্য পদার্থের সামগ্রী দিয়ে ছাউনি তৈরি করায়, বাজার কার্যত জতুগৃহে পরিণত হয়েছে। রাস্তা সঙ্কীর্ণ হওয়ায় দমকলের গাড়ি ঢোকা-বেরোনোয় সমস্যা হচ্ছে। বাজারে আগুন লাগার পরে দমকলের গাড়ি সময়ে দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছতে পারেনি, অতীতে এমন বহু উদাহরণ আছে। তৃতীয়ত, ফুটপাত দখল হওয়ায় পথচারীরা বড় রাস্তার উপর দিয়েই যাতায়াত করতে বাধ্য হচ্ছেন। এর ফলে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। পথচারীরা রাস্তায় চলে আসায় গাড়ির গতি কমছে। ফলে, বাজার এলাকায় যানজট হচ্ছে।
আসানসোলের রাহা লেন এলাকার একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা পাপড়ি বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ফুটপাত ব্যবহারই করতে পারি না। বাধ্য হয়ে ঝুঁকি নিয়েই জিটি রোড ধরে হাঁটতে হয়। ফুটপাত দখলমুক্ত করার বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগকে স্বাগত জানাচ্ছি। কিন্তু আসানসোলে তা কবে শুরু হবে সেটাই প্রশ্ন।’’ রানিগঞ্জ চেম্বার অব কমার্সের সভাপতি রোহিত খেতান, রানিগঞ্জ নাগরিক ফোরামের সভাপতি রামদুলাল বসুদের দাবি, এলাকায় স্থায়ী বাজারের প্রয়োজন রয়েছে। সিহারশোল রাজবাড়ি মোড় বা ডক্টরস কলোনি এবং জগন্নাথ সেতু পেরিয়ে বার্নস ক্লাবের কাছে দু’টি বাজার তৈরি করা যেতে পারে। সেই প্রস্তাব তারা সংগঠনের তরফে প্রশাসনকে একাধিক বার দিয়েছেন। তাঁদের কথায়, ‘‘হকারদের নতুন স্থায়ী বাজারে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করলে ফুটপাত ফিরে পাওয়া যাবে।’’
পূর্বতন জামুড়িয়া পুরসভার প্রাক্তন চেয়ারম্যান তাপস কবি থেকে কংগ্রেস নেতা বিশ্বনাথ যাদবেরা দাবি করেন, হকারদের সরিয়ে জামুড়িয়া বাজারকে যানজটমুক্ত করতে ২০০৯ সালে পুরসভা জামুড়িয়া বাইপাসে ১৫টি বড় গুদাম তৈরি করেছিল। হকারদের বাইপাসে স্থানান্তরের পরিকল্পনাও হয়েছিল। সিদ্ধান্ত হয়, ব্যবসায়ীরা বড় গাড়িতে সরাসরি তাঁদের সামগ্রী জামুড়িয়া বাজারে আনতে পারবেন না। বাইপাসে গুদামে এনে রাখতে হবে। তার পরে ছোট গাড়িতে বাজারে নিয়ে যেতে হবে। হকারেরা বাজারে বসতে পারবেন না। কিন্তু ২০১১ সালে রাজ্যে ক্ষমতা বদলের পরে কোনও অগ্রগতি হয়নি, অভিযোগ তাঁদের। বণিক সংগঠনের কর্তা অজয় খেতান, প্রদীপ দোকানিয়ারাও জানান, একাধিক বার ফুটপাত দখলের বিষয়ে বৈঠক করা হয়েছে। কিন্তু কাজ হয়নি।
অন্ডালের উখড়া বণিক সংগঠনের কর্তা সীতারাম বার্নোয়ালের কথায়, ‘‘উখড়া বাজারে ফুটপাত বলে কিছু অবশিষ্ট নেই। বাজারে বড় আগুন লাগলে দমকলের ইঞ্জিন ঢুকতেই পারবে না।’’ শঙ্করপুর মোড় থেকে আনন্দ মোড় পর্যন্তও ফুটপাত দখল করে ব্যবসা চলছে বলে অভিযোগ। উখড়া পঞ্চায়েতের প্রধান মিনা কোলের দাবি, সম্প্রতি পঞ্চায়েতে রাস্তা দখলমুক্ত করার বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। তাতে এলাকার জনপ্রতিনিধি থেকে পুলিশ-প্রশাসনের কর্তারা ছিলেন। অন্ডালের বিডিও দেবজ্যোতি দত্ত বলেন, ‘‘ব্লকের সব এলাকা থেকেই দখলদার তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।’’
(চলবে)
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy