Advertisement
E-Paper

পুজো ধরে রাখতে একজোট গ্রাম

জানা যায়, ভট্টাচার্য পরিবারের হাতে ১২৪২ বিঘা জমি ছিল সেই সময়ে। প্রতিমা গড়ার জন্য তা থেকে অমরপুর গ্রামের পাল বংশের হাতে কিছু জমি দান করেন তাঁরা ।

চলছে পুজোর প্রস্তুতি।

চলছে পুজোর প্রস্তুতি। —নিজস্ব চিত্র।

কাজল মির্জা

শেষ আপডেট: ০৯ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৩
Share
Save

জমিদারি গিয়েছে। জমিদারও নেই। কিন্তু সেই কালীপুজো আজও চালিয়ে যাচ্ছেন সেবায়েতরা। কয়েকশো বছরের প্রাচীন ওই পুজোর হারানো গৌরব ধরে রাখতে রীতিমতো এককাট্টা তাঁরা।

গলসি থানার ছোট্ট গ্রাম করকোনা। অধিকাংশের জীবিকা চাষবাস। প্রচলিত রয়েছে, প্রায় ৪৫০ বছর আগে গ্রামের রায়বাড়িতে স্বপ্নাদেশে প্রতিষ্ঠিত হন কালী। তারপরে কোনও এক অজানা কারণে ওই পরিবারটি গ্রাম থেকে চলে যান। যাওয়ার সময়ে এলাকার জমিদার ভট্টাচার্য পরিবারের হাতে দিয়ে যান পুজোর দায়িত্ব। সময়টা ছিলো বর্গী আক্রমণের সমসাময়িক বাংলার নবাব আলিবর্দি খাঁয়ের আমল। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সেই সময়ে কালীপুজো হত মাঝের পাড়ায়। প্রায় তিনশো বছর আগে কালী প্রতিমা স্থাপন করা হয় দক্ষিণপাড়ার ভট্টাচার্য পরিবারের বাড়ির কাছে একটি মন্দিরে। সেই থেকে বড়মা বলে প্রচলিত এই কালী।

জানা যায়, ভট্টাচার্য পরিবারের হাতে ১২৪২ বিঘা জমি ছিল সেই সময়ে। প্রতিমা গড়ার জন্য তা থেকে অমরপুর গ্রামের পাল বংশের হাতে কিছু জমি দান করেন তাঁরা । প্রতিমা গড়ার মাটি প্রস্তুত করা, মন্দির পরিষ্কার করার জন্য গ্রামের বাগদি পাড়ার এক পরিবারকেও ভিটাদান করেন। ভট্টাচার্য পরিবারের সঙ্গে গ্রামের দুই মুখোপাধ্যায় পরিবারের বৈবাহিক সম্পর্ক হয়। ওই পরিবারেরাই সেবায়েত হিসেবে দায়িত্বগ্রহণ করেন। বর্তমানে আরও দু-তিনটি পরিবার সেবায়েত হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন। তাঁরাই এখন পুজোর আয়োজন করেন।

ভট্টাচার্য পরিবারের সদস্য জয়ন্ত ভট্টাচার্য মূল পুরোহিতের দায়িত্বে রয়েছেন। উদ্যোক্তাদের দাবি, প্রায় সাত কেজি রুপো ও সোনার গয়না রয়েছে মায়ের। তার মধ্যে রুপোর মুকুট দেড় কেজি ও মুণ্ডমালা এক কেজি তিনশো গ্রাম ওজনের। সেবায়েতরা পুজো পরিচালনা করার জন্য কমিটি গঠন করেছেন। তাঁরাই সারা বছর মন্দিরের সংস্কার, পুজোর দায়িত্ব পালন করেন। কমিটির সদস্য তাপস মুখ্যোপাধ্যায়, সরোজ মুখ্যোপাধ্যায়, শ্রীকান্ত কর্মকারেরা বলেন, “গুসকরার শিববাটি থেকে মায়ের হাতের মুণ্ড আর মানকর থেকে বিশালকারের কদমা আসে। পুজোর দিন রাত ১২টায় গ্রামের বাঁধাপুকুর থেকে ঘট আনা হয়। পরের দিন রাত ১২টায় বিসর্জন হয়।’’

পুজো উপলক্ষে নানা সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়। সাজো সাজো রব পড়ে গ্রামজুড়ে। মিঠু মুখ্যোপাধ্যায়, মনি ভট্টাচার্যরা বলেন, “কালীপুজো উপলক্ষে আত্মীয়-স্বজনরা আসেন। খুব আনন্দ হয়।” ভট্টাচার্য পরিবারের দাবি, রমরমা না থাকলেও পুজোটা বজায় রয়েছে মানুষের
ভালবাসা, নিষ্ঠায়।

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Galsi

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

{-- Slick slider script --}}