প্রতীকী ছবি।
দুর্গাপুজো নয়। কালনার তিনটি গ্রাম মাতে লক্ষ্মী-উৎসবে।
দুর্গাপুজোর মতোই কালনার লক্ষ্মীপুজো কমিটিগুলিও নানা থিমের আশ্রয় নিয়েছে। কল্যাণপুর পঞ্চায়েতের হিজুলি গ্রামে ধূমধাম সহকারে লক্ষ্মীপুজো শুরুর একটি কাহিনি রয়েছে। বাসিন্দারা জানান, গ্রামের পাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া বেহুলা নদীর জলে এক সময় নিয়মিত নষ্ট হয়ে যেত মাঠের ফসল। ফলে বাড়িতে বাড়িতে দেখা দিত হাহাকার। বাসিন্দারা মনে করেন কোজাগরী লক্ষ্মীপুজো করলে এই সমস্যা মিটে যাবে। তার পরে শুরু হয় লক্ষ্মী আরাধনা। শনিবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল, লক্ষ্মীপুজোকে কেন্দ্র করে বাসিন্দারা ব্যস্ত। রাস্তায় রাস্তায় লাগানো হচ্ছে আলো। বসেছে মেলার আসর। বাড়িতে বাড়িতে আসতে শুরু করেছেন আত্মীয়েরা।
হিজুলি গ্রামের স্কুলপাড়ার অঙ্কুর ক্লাবের পুজো এ বার ২৬ বছরে পড়ল। ছোট্ট একটি পুকুরের পাড়ের মধ্যে তৈরি হয়েছে মণ্ডপ। ক্লাবের সদস্যেরা জানান, অভিনয়ের মাধ্যমে নানা সমাজ সচেতনতামূলক বার্তা দেওয়া হবে। পরিবেশ সচেতনতামূলক বিষয়ে অভিনয় করবেন শান্তিপুর থেকে আসা ২০ জন সদস্যের একটি দল। ক্লাব সদস্য জগদীশ মালিক, অনুপ মালিকেরা জানান, চার দিনের উৎসবকে ঘিরে রয়েছে নানান সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও। কিছুটা দূরেই রয়েছে গ্রামের দক্ষিণপাড়ার মণ্ডপ। সেখানে বাসাই গ্রামের এক শিল্পী-সহ ক্লাব সদস্যদের সপ্তাহ দু’য়েকের চেষ্টায় তৈরি করা হয়েছে একটি ৫০ ফুট লম্বা কুমিরের আদলে মণ্ডপ। বাসিন্দা সুশান্ত মালিক জানান, এই মণ্ডপটি তৈরি করতে লেগেছে বাঁশ, দড়ি, খড়, পাটকাঠি, কাপড়, রং-সহ নানা জিনিসপত্র। মণ্ডপের চারপাশ সাজানো হয়েছে এলইডি আলোয়। এখানেও জীবন্ত মডেলের মাধ্যমে উৎসবের দিনগুলিতে তুলে ধরা হবে পুলওয়ামায় হামলা, পথ নিরাপত্তা-সহ নানা বিষয়। এখানে ক্লাব সদস্যেরা অভিনয় করবেন।
পিছিয়ে নেই কালনা ১ ব্লকের হাটকালনা পঞ্চায়েতের ধর্মডাঙা ও রংপাড়া গ্রাম। ধর্মডাঙার পল্লিশ্রী সঙ্ঘের প্রতিমা ২০ ফুট লম্বা। প্রতিমার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এখানে তৈরি করা হয়েছে সাত ফুট পেঁচা। বাসিন্দারা জানান, মঙ্গলের জন্য পুজো চলাকালীন দেবীর বাহনকে বাড়ি বাড়ি ঘোরানো হয়। গ্রামে ঢোকার মুখে উৎসব উপলক্ষে তৈরি করা হয়েছে ৪০ ফুট লম্বা একটি আলোক তোরণ। এ ছাড়া রাস্তার দু’পাশে রাখা হয়েছে নানা রঙিন আলো। এখানেও বহু মানুষের সমাগম হয় বলে মেলার আয়োজন করা হয়। শিশুদের মনোরঞ্জনের জন্যও রয়েছে বিশেষ ব্যবস্থা। এই গ্রামের ইয়ং বয়েজ ক্লাবও ধূমধাম করে লক্ষ্মীর আরাধনা করে। এখানে পুজোর উদ্যোক্তা আদিবাসী সম্প্রদায়ের বেশ কিছু পরিবার। এলাকার বাসিন্দা সঞ্জয় মুর্মু, জগন্নাথ মাণ্ডিরা বলেন, ‘‘১৯৯৮ সাল থেকে লক্ষ্মী পুজো করে আসছি। তবে এ বার মাইক, বাজনা, আলো বন্ধ রাখা হয়েছে। কারণ, এলাকার ৩৬ বছর বয়সী এক যুবক আট মাস ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছে। গরিব পরিবারের ওই যুবকের পাশে দাঁড়াড়েই এই সিদ্ধান্ত।’’ রংপাড়া এলাকার অভিযাত্রী সঙ্ঘের পুজোও বেশ প্রাচীন। উৎসব উপলক্ষে গ্রামে ১৪টি আলোর গেট তৈরি করা হয়েছে। বাসিন্দারা জানান, প্রায় তিন কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মাধ্যমে প্রতিমা বিসর্জন দেওয়া হয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy