অভিযুক্তের দোকানের জিনিসপত্রে আগুন জনতার। নিজস্ব চিত্র
সোমবার দুপুর থেকে খোঁজ মিলছিল না আট বছরের বালিকার। মঙ্গলবার দেহ মিলল তার বাবারই ঘনিষ্ঠ এক ব্যক্তির বাড়ির নির্মীয়মাণ শৌচাগারের সেপটিক ট্যাঙ্কে। ফরিদপুর (লাউদোহা) থানার মামাকুঠি গ্রামে এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে পুলিশ চার জনকে গ্রেফতার করেছে। ক্ষুব্ধ স্থানীয় বাসিন্দারা মঙ্গলবার দুপুরে রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন স্থানীয় বাসিন্দারা।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পেশায় ঠেলা চালক ও প্রতিবেশী লেপ-তোশকের এক ব্যবসায়ীর মধ্যে ঘনিষ্ঠতা ছিল। পরস্পরের বাড়িতে যাতায়াতও ছিল। সম্প্রতি কোনও বিষয় নিয়ে তাঁদের মধ্যে গোলমাল হয়। এলাকাবাসীর একাংশের দাবি, মদ্যপান নিয়ে বচসা থেকে দু’জনের মধ্যে তিক্ততা তৈরি হয়। সম্প্রতি ওই ব্যবসায়ী ঠেলা চালকের বড় মেয়েকে অশালীন কথাবার্তা বলে বলে অভিযোগ। তখন এলাকার কিছু লোকজন তার গায়ে হাত তোলেন। ক্ষুব্ধ ব্যবসায়ী তখন পাল্টা হুমকি দিয়েছিল বলে অভিযোগ।
সোমবার সন্ধ্যায় থানায় মেয়ের নিখোঁজ ডায়েরি করেন ওই ঠেলা চালক। কারও সঙ্গে তাঁর কোনও শত্রুতা আছে কি না, পুলিশ তা জানতে চাইলে তিনি ওই লেপ-তোশক ব্যবসায়ীর কথা জানান। পুলিশের দাবি, ব্যবসায়ীকে জেরা করা শুরু হয়। দীর্ঘ জেরার পরে মঙ্গলবার সকালে সে ভেঙে পড়ে। তাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়িতে গিয়ে নির্মীয়মাণ শৌচাগারের সেপটিক ট্যাঙ্কের মধ্যে বালির ভিতর থেকে মেয়েটির দেহ উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, প্রাথমিক ভাবে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়েছে বলে অনুমান।
এই খবর পেয়েই স্থানীয় বাসিন্দারা দোষীদের কঠোর শাস্তির দাবিতে মামাকুঠি থেকে গোগলা যাওয়ার রাস্তা অবরোধ করেন। অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর দোকান থেকে লেপ-তোশক বার করে রাস্তায় ফেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের বড় বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। পুলিশের দাবি, জেরায় অভিযুক্ত মেয়েটিকে খুনের কথা স্বীকার করেছে। ওই ঠেলা চালককে ‘শিক্ষা’ দিতেই সে এই ঘটনা ঘটিয়েছে বলে দাবি করেছে।
পুলিশ জানায়, ওই ব্যবসায়ী এবং পাণ্ডবেশ্বরের ডালুরবাঁধ থেকে তার পরিচিত আরও তিন জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তকারীরা জানান, প্রাথমিক ভাবে ব্যক্তিগত বিবাদ থেকে এই ঘটনা ঘটেছে বলে মনে করা হচ্ছে। ধৃতদের জেরা করে আর কেউ জড়িত কি না তা জানার চেষ্টা হবে। দেহ ময়না-তদন্তের জন্য আসানসোল জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। তার রিপোর্ট পেলে মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানা যাবে।
মৃত বালিকার বাবা বলেন, ‘‘এ ভাবে বদলা নেবে, ভাবতেও পারিনি। মেয়েকে আমি ফিরে পাব না। তবে ভবিষ্যতে এমন কাণ্ড যাতে আর কেউ না করে, সে জন্য অভিযুক্তদের ফাঁসির সাজা দেওয়ার আর্জি জানাচ্ছি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy